ন্যাভিগেশন মেনু

৭টি জেলা, ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের আগে গৃহহীনদের হাতে বিনামূল্যে আরও ৩৯,৩৬৫টি আধাপাকা বাড়ি হস্তান্তর করার পাশাপাশি সারাদেশে আরও ৭টি জেলা ও ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেছেন।  

বুধবার (২২ মার্চ) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের চতুর্থ ধাপে বাড়ি হস্তান্তরের সময় প্রধানমন্ত্রী  বলেন, ‘আমি আরও সাতটি জেলা ও ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী মাদারীপুর, গাজীপুর, নরসিংদী, জয়পুরহাট, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও চুয়াডাঙ্গা এই সাত জেলার সব উপজেলাসহ ১৫৯টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেন।

এর আগে তিনি পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সব উপজেলাসহ ৫২টি উপজেলাকে গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেন। তিনি আজ মোট নয়টি জেলা এবং ২১১টি উপজেলা গৃহহীন-ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভূমিহীনদের ঘর দেওয়ার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো দু:স্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটানো।’

তিনি বলেন, জাতির পিতা দেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত করে বাংলাদেশের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে একটি উন্নত ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন দিতে চেয়েছিলেন। যার জন্য তাঁর সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
সরকার প্রধান কোনো জেলায় কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন রয়েছে কিনা তা জানতে তালিকা তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রত্যেক ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা তাঁর সরকারের লক্ষ্য হওয়ায় তিনি প্রত্যেককে বাড়ি দেবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই প্রতিটি মানুষ বাড়ি, আশ্রয় এবং জীবিকার সুযোগ পাবে। তারা আর সমাজের বোঝা হয়ে থাকবে না। আমরা চাই প্রত্যেকে নিজের পায়ে দাঁড়াবে এবং যথাযথ সম্মানের সাথে বসবাস করবে।’
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না বলে তাঁর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের জন্য পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করেন।

বঙ্গবন্ধুর পদচিহ্ন অনুসরণ করে তিনি বলেন, তাঁর সরকার ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বাড়িঘর ও জমির মালিকানা দেওয়ার উদ্যোগ নেয়।

গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নোয়াগাঁও আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং বরিশালের বানারীপাড়ার উত্তরপাড় আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনরা দুই দশমিক ৫ শতাংশ জমিতে ভালো মানের টিনশেড আধা-পাকা ঘর পাবেন।
জমির মালিকানা স্বামী-স্ত্রী উভয়কে দেওয়া হয় এবং তাদের নামে জমির রেজিস্ট্রি ও মিউটেশনও করা হয়।

সরকার শুধু খাস জমিতে প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণই করছে না, বাড়ি নির্মাণের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কাছ থেকে জমি কেনা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, তারা সর্বদা জনগণের কল্যাণে কাজ করে এবং জনগণ এর সুফল পায়।
তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকলেও এসময় সবার আগে তারাই জনগণের পাশে ছিল।

তিনি বলেন, ‘আমরা (আ’লীগ) প্রথমে ঘূর্ণিঝড় কবলিত মানুষের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু তৎকালীন সরকার প্রধান ঘুমিয়ে ছিলেন এবং তিনি কিছুই জানতেন না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার জলবায়ু উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দিতে কক্সবাজার শহরের উপকণ্ঠে ‘খুরুশকুল আশ্রয়ণ পরিকল্পনা’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, ‘খুরুশকুল আশ্রয়ণ’ প্রকল্পে যাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল,তারা বেশিরভাগই ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের শিকার।

তিনি আরো বলেন, ঐ সময় প্রায় ৪,০০০ জলবায়ু উদ্বাস্তু অনেকগুলো পাঁচ তলা বাড়ির ফ্ল্যাটে আশ্রয় নিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু ও পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল তাদেরকেও সরকার বাড়ি দিয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, ‘কেউ ঠিকানা ছাড়া থাকবে না। আমরা তাদের শুধু ঘরই দিইনি, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। তাদের জীবিকার জন্য ঋণও দিয়েছি। তারা এখন দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।’

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা ঘোষণা করেছিলেন যে, একজন ব্যক্তি ১০০ বিঘা জমির অধিকারী হতে পারবে এবং এর অতিরিক্ত পরিমাণ জমি কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।