ন্যাভিগেশন মেনু

তালা-চাবি কান্ড: নতুনের চেয়ে মেরামতেই ব্যয় ৪ গুন


আলমারির একটা তালা-চাবির দাম কত? জবাবে ঢাকার দোকানিরা জানালেন-আকার ও গুনগত মানভেদে এর বাজার মূল্য এক থেকে বড়জোর তিন হাজার টাকা।

অথচ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে ’ঢাকা শহর সন্নিকটবর্তী এলাকায় ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পে একটি আলমারির তালার চাবির শুধু মেরামত ব্যয়ই দেখানো হয়েছে ছয় হাজার দুইশত টাকা। আর টেবিলের তালার চাবির মেরামত ব্যয় ধরা হয়েছে বারোশ টাকা।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের অভিযোগ, প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম সরাসরি এই পুকুর চুরির সঙ্গে জড়িত। আমিরুল ইসলাম একজন সহযোগি অধ্যাপক, যিনি ২০ তম বিসিএস (সমাজ বিজ্ঞান) এর শিক্ষা ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা।

ওই প্রকল্পে ঘুষ ও দূর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে আমিরুলের বিরুদ্ধে বুধবার দূর্নীতি দমন কমিশনে একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন এক ব্যক্তি। অভিযোগের একটি কপি বাংলাদেশ পোস্টের কাছে এসেছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, আমিরুল ইসলাম প্রায়ই গাড়ী,আসবাবপত্র,কম্পিউটারসহ বিভিন্ন মেরামত বাবদ ভূয়া বিল ভাউচার করে টাকা উত্তোলন করেন। চলতি অর্থ বছরে ৩১, ৩২, ৩৩, ৪২ ও ৪৩ নম্বর বিলের বিপরীতে তিনি ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা উঠিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে এসব বিলের কোন অস্তিত্ব নেই।

অভিযোগ উঠেছে আসবাবপত্র মেরামতসহ বিভিন্ন কাজের নামে ভূয়া বিল দেখিয়ে তিনি এসব টাকা আত্মসাৎ করেন। বাস্তবে ওই প্রকল্পে কোন আসবাব মেরামত করা হয়নি। সবই নতুন বলে প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায় ওই প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬৭৩ কোটি ৪৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। পরে এর ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১১শ ২৪ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে একাধিক সূত্র বলছে একটি তালা চাবির মেরামতে যদি এত বড় দুর্নীতি হয়,তাহলে অন্যান্য ক্ষেত্রেও বড় ধরনের দূর্নীতি হওয়া অমূলক নয়। সঠিক তদন্ত করলে প্রকৃত দূর্নীতির চিত্র পাওয়া যাবে।

বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আমিরুল ইসলাম বাংলাদেশ পোস্টকে বলেন তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সবই মিথ্যে।