ন্যাভিগেশন মেনু

গোমতীতে অবৈধভাবে মাটিকাটায় নষ্ট হচ্ছে বাঁধ, দূষিত পরিবেশ


কুমিল্লার গোমতী থেকে অবৈধভাবে মাটিকাটার ফলে নষ্ট হচ্ছে বাঁধ, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, বাড়ছে দুর্ভোগ তবুও অবৈধ মাটিকাটা কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না।

মাটিকাটা বন্ধে যখন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে তখন মাটিখেকোরা প্রশাসনের উপর নজরদারী করে মাটিকাটা অব্যাহত রেখেছে। এতে নদী তীরের ফসলি জমি, প্রতিরক্ষা বাঁধ যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ আর বাড়ছে জনদুর্ভোগ।

সরেজমিন ঘুরে গোমতীপাড়ের বিভিন্নস্থান থেকে পাওয়া খবরে জানা যায়, প্রতিবছরই গোমতীর চর এলাকায় মাটিখেকোরা যে যেভাবে পারছে মাটি কেটে বিক্রি করছে। বর্ষাকালে সেটা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও শুস্ক মৌসুমে বেপরোয়া মাটিখেকোরা। ভারি ডাম্পট্রাকে নদী এলাকা থেকে মাটি বা বালু নিয়ে প্রতিরক্ষা বাঁধে উঠানামা করায় একদিকে বাঁধ, অন্যদিকে নদীর চর এলাকায় ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

এ ছাড়াও বায়ু ও শব্দ দুষণতো রয়েছেই। দিনে বায়ু দুষণ আর রাতে শব্দদুষণ যেনো নদী তীরের মানুষদের এখনকার নিত্যদিনের চিত্র। কুমিল্লার প্রধান গোমতী নদী জেলার আদর্শ সদর উপজেলার কটকবাজার সীমান্ত পথে প্রবেশ করে নগরীর উত্তর পাশ দিয়ে বুড়িচং, ব্রাহ্মনপাড়া, দেবিদ্বার, মুরাদনগর, তিতাস হয়ে দাউদকান্দিতে মেঘনায় মিলিত হয়েছে। প্রতিবছর নদীটি বিপুল পরিমান পলি নিয়ে আসে উজান থেকে। এই পলি জমির উর্বরতা বাড়ালেও এর সুফল পাচ্ছেনা কৃষকরা।

প্রতিদিন খোলা ট্রাকে মাটি, বালু বহনকালে বাতাসে ধুলোবালি উড়ে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আর রাতে এসব যানবাহনের শব্দে নদী তীরের শত শত পরিবারের স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখাসহ মানুষদের ঘুমের চরম ব্যাঘাত ঘটে।

সাম্প্রতিক সময়ে জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসন নদীর চর এলাকা থেকে অবৈধ মাটিকাটা ও বালু বিক্রি বন্ধে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানাসহ মাটিকাটার স্কেভেটর, বালু উত্তোলনের ড্রেজার ধ্বংস করে কঠোর অবস্থানে গেলে মাটিখেকোরা তাদের কৌশল পরিবর্তন করে।

এ অবস্থায় আগের মতো বেপরোয়া না হলেও মাটিকাটা থেমে নেই। কোথাও ভোররাতে কোথাও মধ্যরাতে কোথাও বা সন্ধ্যার পর আবার কোথাও দিনেই মাটিকাটা হচ্ছে।

এ চিত্র জালুয়াপাড়া, পাঁচথুবী, কালাপীর মাজারসংলগ্ন ,টিক্কাচর, চাঁন্দপুর, কাপ্তান বাজার , উত্তর শ্রীপুর, ভাটপাড়া, পালপাড়া, বাবুবাজার ,দুর্গাপুর, বুড়িচংয়ের মীরপুর, বাজেবাহেরচরসহ বিভিন্নস্থানে।

দায়িত্বশীল সুত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রশাসনের কিছু অসাধু লোকদের সাথে গোপন আঁতাত করে মাটিখেকোরা এই মাটিকাটা অব্যাহত রেখেছে। প্রশাসনের অভিযানের খবর মাটিখেকোদের কাছে পৌঁছে দিলে তারা সাময়িক মাটিকাটা বন্ধ রাখায় অনেক সময় অভিযানে গিয়েও সফল হতে পারছেনা প্রশাসন।

দায়িত্বশীল সুত্র আরও জানায়, এভাবে অভিযান না চালিয়ে কুমিল্লা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কংশনগর, ময়নামতি সাহেবের বাজার, সেনানিবাস এলাকা, আলেখারচর, শাসনগাছায় চেকপোষ্ট বসালেই রাতে-দিনে মাটি পরিবহনের ট্রাকগুলো জব্দ করা যেতো। এ অবস্থায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বা অন্যকোন অভিযান না চালিয়ে উল্লেখিত স্থানগুলোতে চেকপোষ্ট বসালেই গোমতীর মাটি নিয়ন্ত্রণ হতে পারে। বিষয়টি জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর বলেন, আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ট্রাক্টর, ট্রাক জব্দ করে জেল জরিমানা করে থাকি।

সিবি/এডিবি