ন্যাভিগেশন মেনু

চামড়ার বাজারে ধস, গরুর পিস বিকোচ্ছে ৩৫-৪০ টাকায়


এবার বাংলাদেশে পশুর চামড়ার মূল্য স্মরণকালের ভয়াবহ তলানিতে নেমে গেছে। করোনার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পশুচামড়ার চাহিদাও নেই। ঈদে বাংলাদেশে পশুর যে চামড়া সংগ্রহ তার সিংহভাগ বিদেশে রফতানি হয়। 

প্রতিবছর ঈদের পর চামড়া ভারতে পাচার হয়ে যায়।এদিকে ন্যায্য দামনাম না পেয়ে হেলাফেলা করে ফেলে রাখায় বন্দরনগর চট্টগ্রামে ১৫ হাজার নষ্ট চামড়া পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ভাগাড়ে ফেলেছেন। 

এবার ঈদে কোরবানি দেওয়া গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। কোরবানি দাতারা সেইসঙ্গে ছাগলের চামড়া ফ্রি দিয়ে দিচ্ছেন।বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদ জানান, এবার করোনা, বন্যাসহ নানা কারণে প্রায় ৪০ শতাংশ কোরবানি কম হয়েছে। 

সব মিলিয়ে আমরা আশা করছি, ৬০ থেকে ৬৫ লাখ পিস গরু, মহিষ ও ছাগলের চামড়া সংরক্ষণ করতে পারব। গতবছর আমরা প্রায় এক কোটি পিস চামড়া সংরক্ষণ করেছিলাম৷ 

এর মধ্যে গরুর চামড়া ছিল প্রায় ৬০ লাখ এবং ছাগল ও মহিষ মিলিয়ে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ পিস চামড়া সংরক্ষণ করেছিলাম। চামড়ার কম দামের বিষয়ে তিনি বলেন, তিন-চার বছর আগে প্রতি পিস গরুর চামড়া তিন থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কারণ তখন আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা ছিল। বর্তমানে চামড়ার কোনো চাহিদা নেই। করোনার কারণে সারা বিশ্বেই এক প্রকার লকডাউন চলছে। পাশাপাশি কোরবানি শুধু বাংলাদেশে হয় না সারা বিশ্বেই এ সময়টায় কোরবানি হয়। ফলে সরবরাহ বেড়ে যায়। 

আর সরবরাহ বেড়ে গেলে দাম কমে যায়। তবে আমরা সরকার নির্ধারিত লবণযুক্ত চামড়ার দাম ঢাকারটা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও ঢাকার বাইরেরটা ২৮ থেকে ৩২ টাকা দেব। আগামী ১৫ দিন পর থেকে আমরা লবণযুক্ত চামড়া কেনা শুরু করব।

এছাড়া আমাদের কিছু ট্যানারি মালিক বিভিন্ন মাদরাসা থেকে অল্প কিছু চামড়া কিনে থাকেন, সেটার পরিমাণ মোট চামড়ার দুই থেকে তিন শতাংশ মাত্র।  

এদিকে ছাগলের চামড়া বিক্রি না হওয়ায় অনেকেই ফ্রি দিয়ে দিচ্ছেন। কিছু কুকুরের খাদ্যে পরিণত হয়েছে, আবার লবণ, শ্রমিক ও পরিবহন খরচ উঠবে কি না এই ভয়ে চামড়া অনেকে মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন। যে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বেশি দামে চামড়া কিনেছিলেন। তারা ধরা খেয়েছেন। 

আড়তে বিক্রি করতে না পেরে সেই চামড়া পদ্মা নদীতেও ফেলে দিতে দেখা গেছে।প্রকৃত ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার তারাই ঠিকমতো বাজার বুঝতে পারেননি। 

একদিনের জন্য চামড়া কিনতে এসে মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও বোঝেননি। ফলে তাদের লোকসান বেশি। একজন মৌসুমি ব্যবসায়ীও লাভ করতে পারবেন না। 

রবিবার রাজশাহী মহানগরীর আই-বাঁধ এলাকায় কয়েকজন মৌসুমি ব্যবসায়ীকে প্রায় দেড় হাজার গরু-ছাগলের চামড়া পদ্মা নদীতে ফেলে দিতে দেখা গেছে। এসব ব্যবসায়ীরা জানান, তারা রাজশাহীর বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে চামড়া কিনেছেন। তারপর বিক্রির জন্য চামড়া মহানগরীর রেলগেট এলাকায় আড়তে নিয়ে যান। 

কিন্তু তারা যে দামে কিনেছেন তার তিনভাগের এক ভাগও দাম বলা হয়নি। এসব চামড়া তাদের অন্য কোথাও বিক্রি করতে বলা হয়। তারা যে দামে চামড়া কিনেছেন তার অর্ধেক দামও পাবার সম্ভাবনা নেই। 

তাই ক্ষোভে তারা এসব চামড়া নদীতে ফেলে দিচ্ছেন।রাজশাহী জেলায় এবার আড়াই লাখ গরু-ছাগল  কোরবানি হয়েছে।  

এস এস