ন্যাভিগেশন মেনু

নানা প্রতিরোধের পরেও অপ্রতিহত করোনা


এতো প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণের পরেও বাংলাদেশে অপ্রতিহত গতিতে থাবা বসিয়ে চলেছে বৈশ্বিক কোভিড-১৯ ভাইরাসটি।এ নিয়ে দেশের অভিজ্ঞমহরকে ভাবিয়ে তুলেছে।

এ সংক্রমণ রুখতে লকডাউননে মানুষকে ঘরে রাখতে ও কড়াকড়িভাবে মেনে চলতে সেনা মোতায়েনও হয়েছে। তারপরেও বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে সর্বোচ্চ অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটিই দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু হার।

এ নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এক হাজার ২৬২ জনে। একই সময়ে নতুন করে আরও তিন হাজার ৮৬২ জনের মধ্যে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৪ হাজার ৪৮১ জনে।

সরকারের কড়া ব্যবস্থার পরেও যেন আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে করোনা ভাইরাস। আজ মঙ্গলবার সংক্রমণের ১০০ দিন পার করল বাংলাদেশ। দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।

তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, সংক্রমণের শততম দিনে  চিন, যুক্তরাজ্য, ভারত ও পাকিস্তানে যে পরিমাণ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, বাংলাদেশে তার চেয়েও বেশিসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান, অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

‘রেড জোন’ এলাকায় জনসাধারণের চলাচলে বিধিনিষেধ কড়াকড়িভাবে মেনে  সেনা টহল জোরদার করা হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে শেখ হাসিনা সরকার রাজধানী ঢাকার ৪৫টি এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা নির্দেশনায় রেড জোনে সাধারণ ছুটি থাকবে বলে জানানো হয়েছে। ১৬ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত অফিস, গণপরিবহনসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কীভাবে পরিচালিত হবে এবং কোন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে সেই বিষয়ে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। 

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে ২৪ মার্চ থেকে সশস্ত্র বাহিনী মাঠে রয়েছে। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে দুই মাসের বেশি সময় সারাদেশে লকডাউন জারি রাখার পর ৩১ মে থেকে বেশিরভাগ বিধিনিষেধ তুলে নেয় সরকার। তবে এরপর প্রতিদিন সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এলাকা ধরে ধরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অনুযায়ী লাল, সবুজ ও হলুদ জোনে ভাগ করে প্রয়োজন অনুযায়ী বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত হয়।

সে অনুযায়ী ঢাকার অদূরে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং নরসিংদী জেলার কিছু এলাকা এবং ঢাকার পূর্ব রাজাবাজারে ‘পরীক্ষামূলক জোনিং সিস্টেম’ চালু করা হয়েছে। ঢাকার ওয়ারীতেও একই ধরনের ব্যবস্থা নিতে এলাকা চিহ্নিত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির শনিবারের সভায় দেশের ‘রেড জোন’গুলো চিহ্নিত করে। তাতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৪৫টি এলাকা সর্বোচ্চ ঝুঁকির ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৮টি এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৭টি এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ এসব এলাকায় প্রতি এক লাখ জনসংখ্যার মধ্যে গত ১৪ দিনে ৬০ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে।

ঢাকা দক্ষিণ: যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, মুগদা, গেন্ডারিয়া, ধানমন্ডি, জিগাতলা, লালবাগ, আজিমপুর, বাসাবো, শান্তিনগর, পল্টন, কলাবাগান, রমনা, সূত্রাপুর, মালিবাগ, কোতোয়ালি, টিকাটুলি, মিটফোর্ড, শাহজাহানপুর, মতিঝিল, ওয়ারী, খিলগাঁও, পরীবাগ, কদমতলী, সিদ্ধেশ্বরী, লক্ষ্মীবাজার, এলিফ্যান্ট রোড, সেগুনবাগিচা।ঢাকা উত্তর: বসুন্ধরা, গুলশান, বাড্ডা, ঢাকা সেনানিবাস, মহাখালী, তেজগাঁও, রামপুরা, আফতাবনগর, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, মগবাজার, এয়ারপোর্ট, বনশ্রী, রায়েরবাজার, রাজাবাজার, উত্তরা, মিরপুর।

এস এস