ন্যাভিগেশন মেনু

পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে কাসাভা


পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিভাবে চাষ হচ্ছে কাসাভা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণর অফিস সূত্রে জানা যায় এবছর পঞ্চগড় জেলায় প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে কাসাভা চাষ হয়েছে এবং ২৫০ মে. টন কাসাভা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কাসাভা বাংলাদেশে তেমন পরিচিত ফসল না। কিন্তু বহিঃবিশ্বে কাসাভা’র ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আফ্রিকা মহাদেশের অধিকাংশ মানুষ কাসাভা থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন ধরণের খাবার খেয়ে জীবন-যাপন করেন। কাসাভা দিয়ে গ্লুকোজ, বার্লি, সুজি, রুটি, নুডলস, ক্র্যাকার্স, কেক, পাউরুটি, বিস্কুট, পাঁপড়, চিপসসহ নানাবিধ খাদ্য তৈরি হয়। এছাড়া কাসাভা থেকে তৈরি হয় বস্ত্র এবং ওষুধ শিল্পের উন্নত কাঁচামাল। কাঠ আলু জাতীয় এই ফসল সবজি হিসেবে রান্না করেও খাওয়া যায়। কাসাভাতে কাসাভাতে ফাইবার, পটাশিয়ামসহ নানা ওষুধিগুণ সম্পন্ন উপাদান থাকায় ডায়াবেটিকস ও হৃদরোগীদের জন্য বেশ উপকারি।

 সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রিগঞ্জ ইউনিয়নের মেলাপাড়া গ্রামের কাসাভা চাষী উদ্যোক্তা হাফেজ মোস্তফা কামাল। তিনি কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় ‘কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্প’ এর আওতায় সর্বপ্রথম কাসাভা চাষ করেন। তিনি গাজকাটি এলাকায় ৬০ বিঘা পতিত জমি লিজ নিয়েছেন। গত বছর পরীক্ষামুলকভাবে ২০ বিঘা জমিতে কাসাভা চাষ করেন। কাসাভা আবাদ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। এবার পরিধি বাড়িয়ে ১০০ বিঘা কাসাভা চাষের পরিকল্পনা করেন। উৎপাদন এবং বাজারজাত প্রায় শেষের দিকে। এখন নতুন করে ১০০ বিঘা জমিতে কাসাভা চাষের প্রস্তুতি চলছে। চারা উৎপাদনের জন্য কাসাভা গাছের কাটিং সংগ্রহ করছে শ্রমিকরা।

উদ্যোক্তা হাফেজ মোস্তফা কামাল জানান, কাসাভা চাষে উৎপাদন খরচ একেবারেই কম। বিঘা প্রতি খরচ হয় ২০ হাজার টাকা। কিন্তু ফসল উৎপাদনের পর সব খরচ বাদ দিয়ে বছরে ২ থেকে তিন লাখ টাকার অধিক আয় হবে। এছাড়া সাথী ফসল হিসেবে পেঁয়াজ, মিষ্টি আলু, বাদামসহ নানা ফসল চাষ করা যায়। দেশের বিভিন্ন এলাকায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ফুড প্রসেসের জন্য বিভিন্ন কোম্পানীও আমার কাছে কাসাভা ক্রয় করে। কাসাভার পাশাপাশি গাছ উৎপাদনের মাধ্যমেও বাড়তি আয় করছি। আমার কাছে কাটিং চারা নিয়ে অন্যান্য এলাকায় কাসাভা চাষ শুরু হয়েছে। এলাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় কাটিং চারা পাঠানো হচ্ছে।  উত্তরবঙ্গে একটি কাসাভার ফুড প্রসেসিং কারখানা নির্মাণ করা হলে চাষের পরিমাণ বাড়বে, চাষিরাও সহজেই বাজারজাত করতে লাভবান হবে।

জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার ও পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, উপ-পরিচালক (ভার.) মো. নইমুল হুদা সরকার বলেন, পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফসল কাসাভা। আলু জাতীয় এই ফসলটির গাছের পাতা শিমুল পাতার মত হওয়ায় এটি ‘শিমুল আলু’ নামেও এলাকায় পরিচিত। নানাবিধ খাদ্য তৈরিসহ বস্ত্র এবং ওষুধ শিল্পে কাসাভা ব্যবহার হয়ে থাকে। এই ফসলে রোগ-বালাই এবং পোকার আক্রমণ নেই। উৎপাদন খরচ খুম কম। কাসাভার একটি বাজার মূল্য আছে। বিশেষত দেশে শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়। আমাদের অভ্যন্তরীর চাহিদার মাত্র দুই শতাংশ দেশে উৎপাদন হয়। আমরা বিভিন্নভাবে কৃষকদের কাসাভা চাষে উদ্বুদ্ধ করছি।