ন্যাভিগেশন মেনু

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের নতুন মাইলফলক সৃষ্টি


ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা একটি নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করেছে।

পাকিস্তানের থেকেও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ও জিডিপি বেড়েছে।বাংলাদেশ ২০২৪ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের অবস্থান থেকে পরিবর্তনের উন্নত  মানদণ্ড পূরণ করতে যাচ্ছে।

২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর  আগের চেয়েও ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্কের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে।

গত সপ্তাহে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রেল কনটেইনার দ্বারা বাণিজ্যিক সামগ্রীর চালানের সূচনা একটি গেম চেঞ্জার কারণ এটি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের গতি এবং টেক বৃদ্ধি করে।

পণ্যবাহী সর্বশেষ কন্টেইনার ট্রেনটি গত রবিবার বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী শহর  বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায়। ট্রাক থেকে রেলে পণ্য পরিবহনে সব চেয়ে দ্রুত এবং সাশ্রয়ী।

ঢাকা এবং নয়াদিল্লির কূটনীতিকদের মতে, কন্টেইনার ট্রেনে পণ্য পরিবহন দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির সুযোগ নেই।ওভারহেড ব্যয় ছাড়াই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পণ্য দ্রুতই বাংলাদেশে রফতানি করা যাবে।  

২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফর করেন মোদি। ওই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে ছিটমহল বিনিময়ে স্থল সীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থনের দলিল বিনিময় করে বাংলাদেশ ও ভারত।

এর মাধ্যমে দশকের পর দশক অবরুদ্ধ জীবন কাটানো অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের মুক্তির পথ আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে যায়।

এছাড়া সন্ত্রাসীদের বিপক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শান্তি আনয়নে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি সহায়তা করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব একাধিকবার নিজেদের মধ্যকার এ অংশীদারিত্বকে ‘সোনালী অধ্যায়’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

টানা তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি ছিল ৮.২ যা এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড সৃষ্টি করে। বাংলাদেশে চরম দারিদ্রে বসবাস করা মানুষের সংখ্যা ৯ শতাংশের নিচে কমিয়ে আনা হয়েছে।

রেডিমেড পণ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উৎপাদন ক্ষেত্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, মাথাপিছু আয় আরও বৃদ্ধির বিষয়ে শেখ হাসিনা দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। ভারতীয় এক কর্মকর্তা বলেন, লক্ষ্য স্থির রেখে স্বল্প সম্পদ দিয়েও কীভাবে জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন ঘটানো যায় তা করে এই অঞ্চল এবং সমগ্র বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

ভারতীয় আধিকারিকরা বলেছেন, গেল জুলাইয়ে কলকাতা বন্দর থেকে ছেড়ে আসা পণ্যবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ত্রিপুরায় পণ্য পরিবহন করা হয়েছে।

২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  পুণরায় ক্ষমতায় আসেন এবং ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভোটে জিতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

এরপর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক আগের চেয়ে আরো বৃদ্ধি ও জোরদার হয়েছে। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নরেন্দ্র মোদি স্থলসীমান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করে দুই নেতা ইতিহাস গড়েন।

মোদীর প্রথম সফরেই স্থলসীমান্ত নিয়ে ভুলবোঝাবুঝির একটি বড় সমস্যা সমাধান করে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন দ্বার উন্মোচিত করেছে।

গত বছর নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকালে এই দুই নেতা তাদের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি ‘সোনালী অধ্যায়’ সৃষ্টি করেন।

সোমবার একটি  ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে  ভারত  বাংলাদেশকে ১০ টি ব্রডগেজ রেলওয়ে লোকোমোটিভ সরবরাহ করছে।

এরফলে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়ে উন্নয়নের নয়া দ্বার উন্মোচিত করবে।

শেখ হাসিনা টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার বাংলাদেশের জিডিপি এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধির হার রেকর্ড করেছে।

শেখ হাসিনা  এই অঞ্চলসহ বিশ্বকে দেখিয়েছেন যে, স্বল্প সম্পদের মধ্যেও দেশ কীভাবে মানুষের জীবনযাত্রার উন্নত উন্নীত করতে পারে।

একজন ভারতীয় কর্মকর্তা বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশকে  “তলাবিহীন ঝুড়ি” হিসাবে আখ্যায়িত করেছিলেন। কিন্তু সেই দেশটি আজ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি লাভ করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

এস এস