ন্যাভিগেশন মেনু

অক্সফোর্ডের করোনা টিকা: দুই ডোজে ৬২, দেড় ডোজে ৯০ শতাংশ কার্যকর


যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকাটি নিরাপদ ও কার্যকর বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি এটি সার্বিকভাবে ৭০ শতাংশ, দুই ডোজে ৬২ শতাংশ ও দেড় ডোজে ৯০ শতাংশ কার্যকর।

মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) থেকে ব্রিটেনে ফাইজার এবং বায়োএনটেকের করোনা টিকা গণহারে প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেদিনই চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটে অক্সফোর্ডের সম্ভাব্য টিকার চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্নিনিকাল ট্রায়ালের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। যা বিশ্বের মধ্যে প্রথম।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্নিনিকাল ট্রায়ালে গড়ে ৭০ শতাংশ কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু এই করোনাভাইরাস টিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্নচিহ্ন থেকে যাচ্ছে। বিশেষত ৫৫ বছরের উর্ধ্বে মানুষদের ক্ষেত্রে সেই টিকা কতটুকু কার্যকরী, তা নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

প্রতিবেদনে ব্রিটেন, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রায়ালের আংশিক ফলাফল সামনে আনা হয়েছে। এতে ২৩ হাজার ৭৪৫ জনের সুরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য এবং ১১ হাজার ৬৩৬ জনের তথ্য মূল্যায়ন করা হয়েছে। 

কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই ফলাফল থেকে পূর্ণাঙ্গ ছবি পাওয়া দুষ্কর। কারণ একটি পুরো ডোজের পর কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবককে ভুলবশত অর্ধেক ডোজ দেওয়া হয়েছিলো। আদতে তা দুটি পুরো ডোজ প্রদানের কথা ছিলো।

অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রোজেনেকার বিজ্ঞানীদের দাবি, দুটি পুরো ডোজ দেওয়া হলে ৬২ শতাংশ কার্যকরী হয়েছে সম্ভাব্য টিকা। যে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাথমিকভাবে অর্ধেক ডোজ দেওয়া হয়েছিল, তাদের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ সাফল্য মিলেছে।

যদিও বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দ্বিতীয় দলে মাত্র ২ হাজার ৭৪১ জন ছিলেন। তা থেকে সম্ভাব্য ফলাফল বিবেচনা করে নেওয়া খুব একটা কাজের নয়। বরং সেক্ষেত্রে আরও পরীক্ষার প্রয়োজন আছে। একইসঙ্গে সেই অর্ধেক-ডোজের দলে ৫৫ বছরের উর্ধ্বে মানুষ ছিলেন না। অন্য দলে মাত্র ২০ শতাংশ স্বেচ্ছাসেবকের বয়স ৫৫-র বেশি ছিলো।

তার ফলে আদৌও ব্রিটেন-সহ অন্যান্য অক্সফোর্ডের সম্ভাব্য টিকা এখনই ছাড়পত্র পাবে কিনা, তা নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। বিশেষতঃ ফাইজার, মর্ডানার টিকার কার্যকারিতা বেশি এসেছে। তবে অক্সফোর্ডের টিকার দাম অনেকটা কম এবং তা বণ্টনের প্রক্রিয়া সহজ হবে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি। 

অক্সফোর্ডের এক প্রতিনিধি অ্যান্ড্রু পোলার্ড দাবি করেছেন, যেখানে যেখানে ট্রায়াল চালানো হয়েছে, সেখানের কোথাও স্বেচ্ছাসেবকদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়নি বা গুরুতর অসুস্থতার খবরও মেলেনি। বরং ধারাবাহিকভাবে সুবিধা পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, ‘টিকার সুরক্ষাজনিত কোনও উদ্বেগ নেই। কেবলমাত্র টিকার ডোজ বের করে আমরা  মহামারিকে পরাজিত করতে পারি।’

অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাসকেল সোরিয়ট বলেছেন, পরীক্ষার এই ফলাফল দেখাচ্ছে এই টিকা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর। এটি নিরাপদ এবং সহনশীলও।

এডিবি/