ন্যাভিগেশন মেনু

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের কাছে স্পষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী


‘মায়ানমারে সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আমরা মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় দিয়েছি। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের তাদের স্বদেশ মায়ানমারে নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের ওপর এ সংকটের সমাধান নিহিত। যা গত চার বছরেও সম্ভব হয়নি। আমরা চাই প্রত্যাবাসন বিষয়ে জাতিসংঘ স্পষ্ট একটি রোডম্যাপ তৈরি করুক।’

বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জে বুধবার জাতিসংঘ মহাসচিবের মায়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস বার্গনারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ অনুরোধ করেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির দফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দীর্ঘসময় ধরে অবস্থানের নেতিবাচক দিক বিশেষ করে ওই এলাকায় বসবাসরত মূল জনগোষ্ঠীর ওপর বিরূপ প্রভাবের কথা উল্লেখ করে বিশেষ দূতকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাসানচর প্রকল্পের কথা অবহিত করেন এবং বলেন, সেখানে রোহিঙ্গাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। জাতিসংঘ যাতে ভাসানচরে মানবিক সহায়তা প্রদান করে সে বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বিশেষ দূত মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উপযোগী অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা এবং অচিরেই যাতে প্রত্যাবাসন কাজ শুরু করা যায় সে জন্য জাতিসংঘ বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও আলোচনা অব্যাহত রেখেছে বলে  পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এ ছাড়া ভাসানচর পরিদর্শন করতে তার আগ্রহের কথা জানান।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন ও অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি পুণ:র্ব্যক্ত করেন তিনি। শান্তিরক্ষীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগকে ধন্যবাদ জানান তিনি। নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার উদাহরণ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তিরক্ষী বিশেষ করে নারী শান্তিরক্ষীগণের ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং  আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাক্রুয়াকে অনুরোধ জানান যেন পিস অপারেশন বিভাগ নারী শান্তিরক্ষীগণকে আরও উৎসাহিত করতে বিশেষ ডকুমেন্টারিসহ অন্যান্য  প্রচার সামগ্রী প্রস্তুত করে।

এছাড়া জাতিসংঘ সদর দপ্তর ও মাঠ পর্যায়ের পিস কিপিং সংশ্লিষ্ট উচ্চ পদসমূহে আরও বেশি বাংলাদেশী সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য জেনারেল ল্যাক্রুয়াকে অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সূদীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের তাৎপর্যপূর্ণ অংশগ্রহণ ও সাফল্যমন্ডিত অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন জনাব ল্যাক্রুয়া। তিনি আশা প্রকাশ করেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। শান্তিরক্ষা মিশনসমূহে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করেন জনাব ল্যাক্রুয়া।

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা অংশগ্রহণ করেন।

এস এস