ন্যাভিগেশন মেনু

লকডাউনের ৫ম দিনে ঢাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি ও মানুষের চলাচল বেড়েছে


করোনাভাইরাস সংক্রমণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় সরকার ঘোষিত সাতদিনের কঠোর লকডাউনের পঞ্চম দিনে রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি ও মানুষের চলাচল বেড়েছে। তাছাড়া কয়েকটি পড়া-মহল্লায়ও লকডাউন পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়নি।

করোনার সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে মাঠে পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা টহল দিলেও বড় রাস্তা ছেড়ে বিকল্প রাস্তায় অর্থাৎ পাড়া-মহল্লার গলিপথে মানুষের চলাচল বেড়েছে বেড়েছে দোকাপাট খোলার হারও।

সোমবার (৫ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর মালিবাগ, চৌধুরীপাড়া, রামপুরা, বাড্ডা, তেজগাঁও এলাকার বিভিন্ন রাস্তা এবং কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, গত চারদিনের তুলনায় আজ জনসমাগম বেশি। রাস্তায় গাড়ির চাপও বেড়েছে। 

কাঁচাবাজারগুলোতে স্বাভাবিক দিনের মতোই ভিড়। স্বাস্থ্যবিধির কোনও ছিটেফোটাও লক্ষ্য হয়নি। সামাজিক দূরত্ব তো বহুদুর সবার মুখে মাস্কই নেই। রামপুরা থানা এলাকার মোল্লাবাড়ি ও রামপুরা বাজার ও ওয়াপদা রুটের বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়। এই বাজার এলাকায় কােনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি চোখে পড়েনি। 

মহানগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা চন্দন সরকার জানান, 'আজ অন্যদিনের তুলনায় মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। তাছাড়া গতকাল বিকেল থেকেই মানুষের চলাচল অনেকটাই বেশি। লকডাউনের প্রথম তিনদিন দোকানপাট রাত আটটার পর বন্ধ হয়ে গেলেও গতকাল (৪ জুলাই) খোলা ছিল। ওয়াপদা রুটের কাঁচাবাজারও খোলা ছিল।'

অন্যদিকে রামপুরার এক ওষুধ ব্যবসায়ী বলেন, 'দুইদিন লকডাউন লকডাউন মনে হয়েছে, এখন আর মনেই হয়না। রাস্তায় সবকিছু স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। গতকাল রাতেও রামপুরা কাঁচাবাজারের মাছ-মাংস সবজির দোকান খোলা ছিল। চায়ের দোকানও রাত ৯টার দিকে খোলা দেখেছি।'

গত ১ জুলাই লকডাউনের শুরু থেকেই বিভিন্ন জায়গায় টহল দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অন্যদিনের মতো আজও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্টে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অযৌক্তিক কারণে গাড়ি মোটরসাইকেলে কেউ বের হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সদুত্তর দিতে না পারলে গ্রেপ্তার ও জরিমানা করা হচ্ছে।

তেজগাঁও লিংকরোডের জিএমজি মোড় এলাকায় পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেকপোস্টে গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। প্রত্যেকটি গাড়ি চালক ও যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে মোটরসাইকেলে একাধিক যাত্রী থাকলেও তাদের ব্যপারে অনেকটাই শিথিলতা দেখা গেছে।

এছাড়া জরুরি পরিষেবায় নিয়োজিতরা পরিচয়পত্র দেখানো ও প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তল্লাশির সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানালে, তারা তাদের গন্তব্যে বা কর্মস্থলে যেতে পারছেন।

লকডাউনের শুরুতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অযৌক্তিক কারণে বাইরে বের হওয়ায় রাজধানীতে প্রথম দিন ৫৫০ এবং দ্বিতীয় দিন ৩২০ জন, তৃতীয় দিনে ৬২১ জনকে এবং চতুর্থ দিনে ৬১৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

চলমান লকডাউনে বন্ধ আছে সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সব অফিস। ৭ জুলাই পর্যন্ত চলবে এই কঠোর লকডাউন। তবে আরও ৭ দিন বাড়তে পারে বিধিনিষেধ। 

রবিবার (৪ জুলাই) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক নয়। মৃত্যুর সংখ্যা এখনো একশ’র বেশি। তাই বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।’

এডিবি/