ন্যাভিগেশন মেনু

রেললাইনের বিয়ারিং প্লেট খুলে নেওয়ায় বিজয় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত: তদন্ত কমিটি


চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের নয়টি বগি গত রোববার কুমিল্লার নাঙ্গলকোট এলাকায় লাইনচ্যুতের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে  তদন্ত কমিটি। রেললাইনের বিয়ারিং খুলে নেওয়ায় এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চার কিশোরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, সূর্যের তাপে রেললাইন বেঁকে যাওয়ায় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে। এদিকে তদন্ত কমিটি বলছে, বহিরাগতরা রেলসেতুর বিয়ারিং প্লেট খুলে নিয়েছিল। সেজন্য বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনটি কুমিল্লায় লাইনচ্যুত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। সেতুর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবকেও ট্রেন লাইনচ্যুতের আরেকটি কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে তারা। ওই ঘটনায় প্রায় ৫০০ মিটার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে দুর্ঘটনার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ করেনি রেলওয়ে।

এর আগে এই দুর্ঘটনার কারণ শনাক্ত করতে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম।

রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ট্রাফিক অফিসার (ডিটিও) আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি যদিও তদন্ত প্রতিবেদন এখনো জমা দেয়নি। এই বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত মন্তব্য করতে রাজি হননি আনিসুর রহমান।

তবে তদন্ত কমিটির নামে অনিচ্ছুক এক সদস্য বলেন, দুর্ঘটনাস্থলের একটি সেতুর কয়েকটি বিয়ারিং প্লেট খুঁজে পাওয়া যাইনি। তাই বহিরাগতরা এসব খুলে নিয়েছে। বেয়ারিং প্লেটগুলো খুলে নেওয়াতে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে ঘটনার বিষয়ে পুরোপুরি সত্যতা জানতে সময় লাগবে। এসব অভিযোগে চার কিশোরকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। 

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) এবং রেলওয়ে পুলিশ দুর্ঘটনাস্থলের কাছ থেকে তিনটি বিয়ারিং প্লেট উদ্ধার করেছে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম জানান, তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে আসলে কী কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় রেলওয়ে আলাদা তদন্ত কমিটির মাধ্যমে কারণ অনুসন্ধান করছে।  

 লাকসাম রেলওয়ে থানার (ওসি) মুরাদ উল্লাহ বাহার বলেন, গত সোমবার রাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চার জনকে আসামি করে লাকসাম থানায় একটি মামলা করে। লাইনচ্যুত ঘটনার আগে কিছু কিশোর রেললাইনের ওপর ঘোরাঘুরি করতে থাকলে স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া দিলে একটি স্কুলব্যাগ ফেলে তারা পালিয়ে যায়। পরে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়। তাদের ফেলে রাখা স্কুলব্যাগ তল্লাশি করে ভেতর থেকে রেললাইনের ৩টি বিয়ারিং পাওয়া যায়। পরে জন্মনিবন্ধনের সূত্র ধরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার চার কিশোরকে কুমিল্লার একটি আদালত কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।