ন্যাভিগেশন মেনু

করোনাকালে কাজ হারিয়ে দেশে ফিরেছেন ২ লাখ ৭২ হাজার প্রবাসী


করোনাকালে কাজ হারিয়ে, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় এবং অন্যান্য কারনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গত প্রায় সাড়ে সাত মাসে দেশে ফিরে এসেছেন ২ লাখ ৭২ হাজার ১৮৫ জন প্রবাসী শ্রমিক।

বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ১ এপ্রিল থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, দুবাইসহ ২৮টি দেশ থেকে তারা ফিরে এসেছেন। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কর্মী ফিরেছেন সৌদি আরব থেকে।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারির শুরুর দিকে দেশে ফেরত আসা কর্মীদের তথ্য এখানে নেওয়া হয়নি। তাদের সংখ্যা যোগ করলে ফেরত আসা কর্মীদের সংখ্যা তিন লাখের বেশি হবে।

গত সাত মাসে সবচেয়ে বেশি কর্মী ফিরেছেন সৌদি আরব থেকে। কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া ও বিভিন্ন কারনে অনেকে কাজ হারিয়ে দেশে এসেছেন। ফিরে আসা ৭৯ হাজার ৯২২ জন কর্মীর মধ্যে নারী ১৩ হাজার ২৭০ জন।

সৌদি আরবের পর সবচেয়ে বেশি শ্রমিক ফেরত আসে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। দেশটি থেকে কাজ হারিয়ে ফিরে আসা ৭১ হাজার ৯০৩ জন কর্মীর মধ্যে ছয় হাজার ২২৪ জন নারী শ্রমিক।

কাতার থেকে ২৫ হাজার ৭০৪ জন শ্রমিককে দেশে ফেরত এসেছে। এদের মধ্যে পুরুষ ২৩ হাজার ২২৬ জন এবং নারী দুই হাজার ৪৭৯ জন।

ওমান থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে ১৬ হাজার ৯৫ জনকে। তাদের মধ্যে নারী দুই হাজার ১৪৭ জন।

মালদ্বীপ থেকে ১২ হাজার ৬৮৯ জন বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ২৪৪ জন এবং নারী ১৪৪ জন।

কুয়েত থেকে ২৯৭ জন নারী শ্রমিকসহ ফিরে এসেছেন ১১ হাজার ৯৫২ জন।

ইরাক থেকে ফেরত আসা নয় হাজার ৭৮৯ জনের মধ্যে ৬০ জন নারী।

মালয়েশিয়া থেকে ফিরতে হয়েছে ১২ হাজার ৩৬৮ জন শ্রমিককে। যাদের মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ৮৬৯ জন এবং নারী ৪৯৯ জন।

তুরস্ক থেকে ৭১৩ জন নারী কর্মীসহ ফিরে এসেছেন ১০ হাজার ৪৫৩ জন। 

লেবানন থেকে সাত হাজার ১৬৯ জন, নারী দুই হাজার ৪৫৩ জন।

সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে পাঁচ হাজার ৩১১ জনকে। যাদের মধ্যে পাঁচ হাজার ২৪৫ পুরুষ এবং ৬৬ জন নারী শ্রমিক।

চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় জর্ডান থেকে ফিরেছেন দুই হাজার ২০৪ জন। যাদের মধ্যে পুরুষ ৪০৮ জন এবং নারী ১৭ হাজার ৯৬ জন।

বাহরাইন থেকে দেশে ফিরেছেন দুই হাজার ২৩ জন। এসব শ্রমিক দেশটি থেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাশ নিয়ে দেশে আসেন।

কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ায় শ্রীলঙ্কা থেকে ৫৫৪ জন, মরিশাস থেকে ৪৫২ জন, লিবিয়া থেকে ৪৫৫ জন এবং ভিয়েতনাম থেকে ১২১ জন ফেরত এসেছে।

অন্যদিকেে, কাজ না থাকায় দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ২২০ জন, কম্বোডিয়া থেকে ১০৬ জন, থাইল্যান্ড থেকে ৮৯ জন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৭১ জন এবং মায়ানমার থেকে ৩৯ জন দেশে ফিরে আসেন।

তাছাড়া, রাশিয়া থেকে ফিরেছেন ১০০ জন, নেপাল থেকে ৫৫ জন, যুক্তরাজ্য থেকে ফিরেছেন ১৩৪ জন, হংকং থেকে ১৬ জন।

বাংলাদেশি শ্রমিকদের দেশে ফেরত আসাদের মধ্যে গত ৬ জুলাই ইতালি থেকে করোনা সন্দেহে দেশে ফেরত পাঠানো ১৫১ জনও তালিকায় রয়েছে।

এছাড়া আইএম জাপান চুক্তির মাধ্যমে তিন বছরের মেয়াদ শেষে জাপান থেকে ছুটিতে দেশে এসেছেন আটজন কর্মী। এবং অন্যান্য দেশ থেকে ফেরত এসেছে ১২৮ জন। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন দেশে ফেরার হার যেভাবে প্রতিনিয়ত বাড়ছে সেভাবে কিন্তু দেশ থেকে বিদেশে কর্মী যাচ্ছে না যার ফলে দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতে দায়িত্বরত শ্রম উইংয়ের কর্মকর্তাদের আরও তৎপর হওয়া উচিত বলে মনে করছেন তাঁরা।

এডিবি/