পবিত্র কুরআন শরীফ অবমাননার গুজব ছড়িয়ে লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক লাইব্রেরিয়ান মো. সহিদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) পিটিয়ে হত্যা করে লাশ আগুনে পোড়ানোর ঘটনায় গ্রেফতারকৃত চার আসামির দু দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
রবিবার (৬ ডিসেম্বর) রিমান্ডের আবেদন শুনানি শেষে লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফেরদৌসী বেগম এ আদেশ দেন।
রিমান্ডের আসামিরা হলেন-আমির হোসেন (৩০), মোতাহার হেসেন (২১), বিপ্লব হোসেন (১৯) ও আতিয়ার রহমান (৩৫)।
শনিবার (৫ ডিসেম্বর) জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে। এখন পর্যন্ত ডিবি পুলিশ এই চার জনসহ মোট ৪৪ জনকে গ্রেফতার করেছে।
উল্লেখ্য, ‘গত ২৯ অক্টোবর সুলতান যোবাইয়ের আব্দার নামে এক বন্ধুকে নিয়ে বুড়িমারী বেড়াতে আসেন জুয়েল। বিকেলে বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করেন তারা। নামাজ শেষে মসজিদের সানসেটে রাখা কোরআন শরীফ পড়তে গিয়ে নামাতে যান। এ সময় অসাবধানতাবশত কোরআন ও হাদিসের বই তার পায়ে পড়ে যায়। পরে তিনি তুলে চুম্বনও করেন। বিষয়টি নিয়ে জুয়েলের সঙ্গে মুয়াজ্জিনের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর আশপাশের লোকজন ছুটে এসে জুয়েল ও সুলতান যোবাইয়েরকে পাশে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে আটকে রাখে।
পুরো বাজারে এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, কোরআন অবমাননার দায়ে দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। এ সময় বিক্ষুব্ধরা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের দরজা-জানালা ভেঙে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে মরদেহ টেনে পাটগ্রাম বুড়িমারী মহাসড়কে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেয় স্থানীয়রা। এ সময় বিক্ষুব্ধরা মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
ওই ঘটনায় পাটগ্রাম থানায় নিহতের চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে শনিবার (৩১ অক্টোবর) একটি মামলা দায়ের করেন। তাছাড়াও বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আর পুলিশ বাদী হয়ে অপর মামলাটি দায়ের করেছেন।’
এমআইআর/ওআ