ন্যাভিগেশন মেনু

পেঁয়াজ পচে যাওয়া কারণ খতিয়ে দেখতে মাঠে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়


কৃত্রিম সংকট করে চার গুণ মূল্য বৃদ্ধি করে ফায়দা লোটা। আরও লাভের আশায় গুদামজাতকরণ। এরপর মানুষ সচেতন পেঁয়াজব্যবহারে মিতব্যয়ী হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় পেঁয়াজেরদাম কমে গেছে। তাও মানুষ কিনছেন না।

অবশেষে গুদামজাত পেঁয়াজপচতে শুরু কছে। গত ১৫ দিনে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ আড়তের প্রায় এক- তৃতীয়াংশ পেঁয়াজপচে যাওয়ার পর এখন এর কারণ খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে, দ্রুত এর সমাধান বের করতে দুই অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন বাণিজ্য সচিব। পাশাপাশি একজন অতিরিক্ত সচিব চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার পরিদর্শন শেষে গত মঙ্গলবার যে সুপারিশ দিয়েছেন সেগুলোর যথার্থতাও পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

ওই পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাতুনগঞ্জের প্রতিটি আড়তে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজএরই মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু পেঁয়াজেগাছ তৈরি হয়েছে এবং ৩০ শতাংশে পচন ধরেছে।

বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজআমদানির ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়ায় আমদানিমূল্যের অর্ধেক দামে পণ্যটি বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন।

বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন জানান, এখন আমাদের সামনে দুটি এজেন্ডা গুরুত্বপূর্ণ। হঠাৎ করে কেন এত বেশি পেঁয়াজপচে গেল তা খতিয়ে দেখা; অন্যটি হচ্ছে- ক্ষতিগ্রস্ত আমদানিকারকদের কীভাবে সহায়তা দেওয়া যায় সে বিষয়ে সরকারের যৌক্তিক অবস্থান তৈরি করা।

সচিব জানান, এত বেশি পেঁয়াজ(মজুদের প্রায় ৩০ শতাংশ) একেবারে পচে যাওয়ার কথা নয়। ব্যবসায়ীরা নষ্ট পেঁয়াজআমদানি করেছেন, নাকি কনটেইনারে নিম্নমানের পেঁয়াজসরবরাহ করা হয়েছে- সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান গত ১৯ ও ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর ও খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজার পরিদর্শন শেষে গত মঙ্গলবার বাণিজ্য সচিবকে যে প্রতিবেদন দেন তাতে ১১টি সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের বিষয়ে ৫টি সুপারিশ ও খাতুনগঞ্জ পরিদর্শনের ওপরে ৬টি সুপারিশ রয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো হচ্ছে : পিঁয়াজসহ অন্যান্য পচনশীল পণ্যের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে পৃথক সংরক্ষণাগার তৈরি করা; পেঁয়াজেরউৎপাদন, ঘাটতি, আমদানি ও চাহিদার সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে টিসিবি এবং বেসরকারি আমদানিকারকদের এলসি খোলার বিষয়টি সমন্বয় করা।

ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করা; পেঁয়াজসংরক্ষণের বিষয়ে বন্দরের ফি মওকুফ এবং বিদ্যুৎ বিল নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা; বন্দরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পচনশীল পণ্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেফার্ড কনটেইনারে রাখার উদ্যোগ নেওয়া।

এছাড়া আমদানিকারকদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় আমদানিমূল্যে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজকিনে নেওয়া এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ঝুঁকি বীমার সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখা। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, টিসিবির মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের আমদানি করা পেঁয়াজকেনার সুযোগ নেই।

কারণ আগামী মার্চ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির ক্রয় পরিকল্পনা আগেই তৈরি করা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে পিঁয়াজসহ পচনশীল পণ্য আমদানিতে ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ঝুঁকি বীমার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি নিয়ে ভাবছে সরকার।

এর ফলে কোনো ব্যবসায়ী পণ্য আমদানির সময় বীমার প্রিমিয়াম দেবেন।

এস এস