ন্যাভিগেশন মেনু

বিয়ে করলেন পা হারানো সেই লিমন হোসেন


ঝালকাঠির রাজাপুরে ২০১১ সালে র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো সেই লিমন হোসেন (২৮) বিয়ে করেছেন। কনে যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার সরখোলা গ্রামের টিটু মোল্লার মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাবেয়া বশরী।

কনের বাড়িতেই শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাদের বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়। দুই লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে পড়ান স্থানীয় কাজী মাওলানা মোঃ নজরুল ইসলাম।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে লিমনের গ্রামের বাড়িতে গায়েহলুদ অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিমনের পরিবার, সহপাঠী ও আত্মীয় স্বজনরা অংশ নেন।

প্রভাষক লিমন হোসেন জানান, পরিবারের ইচ্ছায় বাবা-মায়ের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করে এবার জীবনে আরেকধাপ এগিয়ে যেতে চান তিনি।

লিমনের স্ত্রী রাবেয়া বশরী জানান, 'লিমন প্রতিকুল পরিবেশের সাথে যুদ্ধ করে ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছেন। তার সব কিছু শুনে আমার ভাল লেগেছে। দাম্পত্য জীবনেও তিনি দায়িত্বশীল হবেন বলে আশাকরি।' 

লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম বলেন, 'গত ১০ বছর আমরা অনেক কষ্ট করেছি। দেশে মানুষ এবং মিডিয়া আমাদের পক্ষে ছিল বিধায় আমরা এখন মোটামুটি ভালো আছি। এই ১০ বছর যতো কষ্ট করেছি পোলার বিয়ে দিতে পেরে সব কষ্ট শেষ হয়েছে।'

সাড়ে ১০ বছর আগে ২০১১ সালের ২৩ মার্চ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালয়নের (র‌্যাব) গুলিতে পা হারিয়ে ছিলেন দরিদ্র পরিবারের সন্তান লিমন হোসেন। সে বছর এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তার। ১৭ বছরের সেই কিশোর এখন ২৮ বছরের যুবক। ঘটনাটি দেশজুড়ে আলোচিত হয়। ঝালকাঠির সাতুরিয়া গ্রামের পা হারানো সেই কিশোর এখন সাভার গণবিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের প্রভাষক। বিয়ে করে এখন তিনি সংসার জীবন শুরু করতে যাচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে বাড়ির কাছের মাঠে গরু আনতে গিয়ে দরিদ্র কলেজছাত্র লিমন হোসেন র‌্যাবের গুলিতে আহত হয়। গুলিবিদ্ধ লিমনকে সন্ত্রাসী সাজিয়ে র‌্যাবের ডিএডি লুৎফর রহমান বাদী হয়ে দুটি মামলা করেন। লিমন হোসেন ও স্থানীয় সন্ত্রাসী মোরসেদ জমাদ্দার এবং তার সহযোগীসহ আট জনকে আসামি করা হয়। এর একটি অস্ত্র আইনে এবং অপরটি সরকারিকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে। গুরুতর আহত লিমনকে প্রথমে ভর্তি করা হয় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে নেওয়া হয় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে। ২০১১ সালের ২৭ মার্চ লিমনের বাম পা হাটু থেকে কেটে ফেলা হয়। চিরতরে পঙ্গু হয়ে যায় লিমন।

এএস/এডিবি/