ন্যাভিগেশন মেনু

আগামী দিনের অর্থনীতি অত্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ হবে: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য


করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি কেমন হতে পারে তা নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেছেন অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সেই সঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতি নিয়েও তিনি আলোকপাত করেছেন। 

তিনি মনে করেন, অবশ্যই বিশ্ব পূর্ব অতিমারী পরিস্থিতির দিকে যাবে না। এখানে তিনি দু’টি মত প্রকাশ করেছেন। 

প্রথমত, এই দুর্যোগের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বুঝবো যে, দেশের সার্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা কতটুকু প্রয়োজন। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা কতটা দরকার। বহুত্ববাদ ও পরিবেশ বান্ধব উন্নয়ন কতটা জরুরি। আর দেশকে শক্তিশালী করার জন্য মত প্রকাশের স্বাধীনতার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আবশ্যক। দেশে দেশে ভিন্ন পরিস্থিতি হতে পারে।

আর দ্বিতীয়ত, বিশ্বে করোনার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার আগে যে পরিস্থিতি ছিল যেমন অর্থনীতি নিম্নগামী ছিল, বহুপক্ষীয় অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়েছিল, পরিবেশ সুরক্ষা দুর্বল হচ্ছিল। বাড়ছিল বৈষম্য।

ড. দেবপ্রিয় মনে করেন এ নেতিবাচক প্রবণতা আরও বাড়বে। বিশ্ব একটি নিয়ন্ত্রিত ও শক্তিশালীদের ইচ্ছাভিত্তিক ব্যবস্থায় পরিণত হবে। সহযোগিতার বদলে আগ্রাসী মনোভাব প্রাধান্য পাবে।

ড. দেবপ্রিয় বাংলাদেশের ক্ষেত্রে চারটি রূপকল্পের ছক তৈরি করেছেন। ভয়েস অব আমেরিকাকে তিনি বলেন, দেশের ভেতরে ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান-গোষ্ঠী যাদের প্রাধান্য আছে তাদের ক্ষমতা আরও বাড়তে পারে। বাংলাদেশে একটি নজরদারি ভিত্তিক নিয়ন্ত্রিত সমাজ সৃষ্টি হতে পারে। সদাশয় কর্তৃবাদী সরকার হতে পারে। যেখানে সরকার ভালো কাজ করে। আবার নিজের মতো করে চলে। 

আরেকটা হচ্ছে বিকাশমান যে আর্থ-সামাজিক শক্তি আছে সেই শক্তিগুলোকে জাতীয়ভাবে একত্রিত করে রাজনৈতিক ঐক্য তৈরি করে এগুতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোন পথে যাবে সেটা দেশের নেতাদের দূরদর্শিতা ও প্রচলিত রাজনীতির চলমানতা এবং নাগরিকদের বিশেষ করে মধ্যবিত্তের মনোভাবের ওপর অনেকখানি নির্ভর করবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মধ্যবিত্তরা নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। কারণ বাংলাদেশে কোন সার্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। তাদের জন্য কোন বীমা নেই। তাদের জন্য পেনশন নেই। 

ড. দেবপ্রিয় বলেন, আগামী দিনের অর্থনীতি অত্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ হবে। এটা পাড়ি দিতে হবে দক্ষতার সাথে। সমস্ত শক্তির সম্পৃক্ত করা এতে প্রয়োজন হবে।

এডিবি/