ন্যাভিগেশন মেনু

ঈশ্বরদীর ৩০ মন্দিরে চলছে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি


বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হচ্ছে আগামী ১১ অক্টোবর থেকে। চারদিন ধরে এই উৎসব চলবে। ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা।

সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

ঈশ্বরদী শহর ও উপজেলার সাত ইউনিয়নে শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে মন্দিরে মন্দিরে সাজ সাজ রব। দূর্গাপূজা ঘিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে নানা আয়োজন। শহরের বিপনীবিতানগুলোতে শিশুদের নিয়ে চলছে নতুন পোশাক কেনা। 

উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ১১ অক্টোবর থেকে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। চলতি বছর ঈশ্বরদী পৌর এলাকা ও উপজেলার সাত ইউনিয়নে ৩০টি মন্দিরে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে পৌর এলাকায় রয়েছে আটটি মন্দির। সাঁড়ায় ছয়টি, পাকশীতে তিনটি, সাহাপুরে দুইটি, লক্ষ্মীকুন্ডায় দুইটি, দাশুড়িয়ায় তিনটি, মুলাডুলিতে পাঁচটি ও সলিমপুর ইউনিয়নে রয়েছে একটি মন্দির। প্রতিটি মন্দিরে পৃথক পৃথক কমিটি পূজার আয়োজন করছে।

শহরের কয়েকটি পূজামন্ডপে শুক্রবার (১ অক্টোবর) ঘুরে দেখা গেছে, মন্দিরে মন্দিরে আলোকবাতি, তোরণ নির্মাণসহ সাজসজ্জার কাজ চলছে। শহরের ঠাকুরবাড়ি, কর্মকার পাড়া, দড়িনারিচাসহ মন্দিরসংলগ্ন সড়কগুলোতে তোরণ তৈরির প্রস্তুতি চলছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গনেশ চন্দ্র সরকার জানান, ঈশ্বরদীতে ৩০টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটি, পুলিশ ও মন্দির কমিটির সঙ্গে এরইমধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। প্রতিটি মন্দিরে পূজার প্রস্তুতি চলছে। দুই-তিনদিনের মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। করোনা পরিস্থিতির কারণে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে প্রস্তুতিমূলক সভা থেকে। 

শহরের কর্মকারপাড়া মাতৃমন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী মাধব চন্দ্র পাল বলেন, আমরা মন্দিরে মন্দিরে পূজা উদযাপনের জন্য কাজ শুরু করেছি। সবকিছুই ভালভাবে এগোচ্ছে। আশা করছি দু’একদিনের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। 

তিনি বলেন, পূজা উদযাপন ও বিভিন্ন মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সভা হয়েছে। আশাকরি প্রতিবারের মতো এবারও সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। 

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, পূজায় প্রতিটি মন্দিরে পোষাকধারীর পাশাপাশি সাদাপোশাকে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। প্রতিবারের মতো এবারও যাতে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে দূর্গাপূজা সম্পন্ন হয় সেজন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) বলেন, দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন ঈশ্বরদীতে কঠোর নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে এবার দুর্গাপূজা সাবধানতা অবলম্বন করে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে পালনের জন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, উপজেলার ৩০টি পূজামন্ডপে বাড়তি নিরাপত্তাসহ পূজার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য থানায় একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা থাকবে। মন্ডপ, মন্দির ও আশপাশের এলাকায় পূজা চলাকালীন সার্বক্ষণিক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্ডপ এলাকায় কেউ জুয়ার আসর বসালে বা মদ খেয়ে মাতলামি করলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

জেএইচ/এডিবি/