ন্যাভিগেশন মেনু

চাটমোহরে সম্ভাবনাময়ী পেরিলা চাষ শুরু


পাবনার চাটমোহরের গুনাইগাছা ইউনিয়নের চরপাড়া ব্লকে রিসার্চ সাউ পেরিলা-১ (গোল্ডেন পেরিলা বিডি) চাষ শুরু হয়েছে।

পেরিলা বাংলাদেশে নতুন তেল জাতীয় ফসল। সারা বিশ্বে এটি কোরিয়ান পেরিলা নামে পরিচিত। ক্রমশই বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ ফসলটি বিস্তার লাভ করছে। গবেষণা চলছে এ ফসলটির উপর। চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহরে এটি এখন সম্ভাবনাময় একটি ফসল।

বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১৬ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্য তেল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এ তেল ফসলের চাষ বাংলাদেশে সম্প্রসারণ করতে পারলে আমাদের আমদানি নির্ভরতা কমার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

চরপাড়া গ্রামের পেরিলা চাষী কামরুল ইসলাম জানান, 'উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ২৫০ গ্রাম পেরিলার বীজ পাই আমি। শ্রাবণ মাসের প্রথমদিকে বাড়িতেই চারা দেই (বীজতলা)। বর্ষাকাল হওয়ায় অতিবৃষ্টির হাত থেকে চারা রক্ষায় বীজতলার উপরে পলিথিনের ছাউনি দেই। চারা তৈরী হয়ে গেলে ভাদ্র মাসের প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে এক শতক জমিতে পেরিলা চারা রোপণ করি। ৭৫ থেকে ৮০ দিন পর জমি থেকে ধীরে ধীরে পেরিলা সংগ্রহ শুরু করি। ফলন মোটামুটি ভালোই পেয়েছি। এটি দেখতে অনেকটা সরিষা দানার মতো। আগামিতে উঁচু জমিতে আরও বেশি করে এ ফসল চাষ করার কথা ভাবছি।'  

চাটমোহর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ আল ইমরান জানান, সাউ পেরিলা-১ বাংলাদেশে অভিযোজিত ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ একটি ভোজ্য তেল ফসল। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড মানবদেহের জন্য খুবই উপকারি। এতে ক্ষতিকর কোন ইউরেসিক এসিড নেই। এর বীজ হতে শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ তেল আহরণ করা যায়। যার প্রায় ৯১ ভাগই অসম্পৃক্ত ফ্যাটি এসিড। বিশ্বব্যাপী এই ভোজ্য তেলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দামও বেশি।

তিনি আরও বলেন, এটি দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সংগৃহীত। বাংলাদেশে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. এ এইচ এম তারিক হোসেন সর্বপ্রথম এ ফসল নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে পিএইচডি ফেলো আব্দুল কাইয়ুম মজুমদার (বিসিএস কৃষি) তার মূল গবেষণার বিষয়ের সাথে ২০১৮ সাল থেকে ফসলটির উপর গবেষণা ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু করেন। হেক্টর প্রতি ফলন ১ দশমিক ২ টন। বর্তমান বোতলজাত ৩২০ মিলিলিটার তেল ৬৮০ টাকায় এবং খোলা তেল অপেক্ষাকৃত কিছু কম দামে বিক্রি হচ্ছে।

আইকেআর/ ওয়াই এ/এডিবি