ন্যাভিগেশন মেনু

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বর্জ্যের দুর্গন্ধে দম নেওয়াই দায়


চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বর্জ্য অপসারণ ব্যবস্থাপনায় চরম গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। যত্রতত্র বর্জ্য ফেলার কারণে হাসপাতাল এলাকার বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে দুর্গন্ধ। এতে মারাত্মকভাবে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বহির্বিভাগ ও অভ্যন্তরীণ বিভাগের রোগীসহ ওই এলাকার বাসিন্দারা মেডিকেল বর্জ্যের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। ভুক্তভোগীরা দ্রুত এ বর্জ্য অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা হঠাৎ করেই হাসপাতালের বর্জ্য অপসারণ বন্ধ করে দিয়েছে। এজন্য এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের পাশে বেশ কয়েকটি উন্মুক্ত স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে রোগীদের রক্তমাখা গজ, ব্যান্ডেজসহ নানা ধরনের মেডিকেল বর্জ্য। মেডিসিন, সার্জারি ও গাইনি ওয়ার্ডের পাশে রাখা প্লাস্টিকের ড্রামভর্তি বর্জ্য বেশ কয়েকজন পরিচ্ছন্নকর্মী হাসপাতাল সীমানার মধ্যে উন্মক্ত স্থানে ফেলছেন। সেখানে বর্জ্যের একেকটি স্তূপ তৈরি হয়েছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, সদর হাসপাতালে বর্জ্য উন্মুক্ত স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার দৃশ্য নিত্যদিনের। রোগীদের শরীরের বিষাক্ত এসব বর্জ্যে প্রকট দুর্গন্ধে হাসপাতালে অবস্থান করাই দায়।

আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ গ্রামের তারেক হাসান বলেন, তার ছোটবোন পাঁচদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এজন্য প্রতিদিনই তাকে হাসপাতালে আসতে হয়। তবে হাসপাতালের বর্জ্যের দুর্গন্ধে এখানে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে।

হাসপাতালের পরিচ্ছন্নকর্মী সানজিদা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওয়ার্ডের বর্জ্য হাসপাতালের খোলা জায়গাতে ফেলা হচ্ছে। পরে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার গাড়ি এসে ময়লাগুলো নিয়ে যায়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এএসএম ফাতেহ আকরাম বলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালটি ১০০ শয্যর। কিন্তু প্রতিদিন চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয় কয়েক হাজার মানুষের। এ কারণে বর্জ্যও হয় একটু বেশি।

তিনি বলেন, হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর রোগীর শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সাধারণত মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। আর গজ-ব্যান্ডিজসহ সাধারণ বর্জ্যগুলো হাসপাতালের ডাস্টবিনে ফেলা হয়। তবে অনেক বর্জ্য জমে মাঝে মধ্যে দুর্গন্ধ ছড়ায়।

হাসপাতালের এ চিকিৎসা কর্মকর্তা আরও বলেন, এক মাস ধরে পৌরসভার একটি গাড়িও বর্জ্য নিতে আসেনি। ফলে হাসপাতাল এলাকায় বর্জ্যের স্তূপ তৈরি হয়েছে। আমরা পৌর কর্তৃপক্ষকে নিয়মিতভাবে বিষয়টি অবগত করে আসছি। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে তারা বর্জ্য অপসারণ করছে না।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান বলেন, হাসপাতালে রোগীদের এসব বর্জ্য বিনষ্ট করতে বিশেষ এক ধরনের ইনসিনারেশন মেশিনের প্রয়োজন, যা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেই। এ কারণেই বর্জ্য নিয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটিও চিন্তিত।

চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন বলেন, পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানের বর্জ্য অপসারণে কর্মীরা ব্যস্ত থাকায় কিছুদিন ধরে হাসপাতালের বর্জ্য অপসারণ করতে পারেননি। তবে দু-একদিনের মধ্যে এসব বর্জ্য অপসারণ করা হবে।

এসকে/সিবি/ওআ