ন্যাভিগেশন মেনু

জৈন্তাপুরে ধর্ষণের অভিযোগে সেই মাদরাসাশিক্ষক গ্রেপ্তার


সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের ভিত্রিখেল পশ্চিম গ্রামের কুব্বাতুল ইসলাম দারুল হুদা কামালপাড়া কওমি মাদরাসার শিক্ষক হাফিজ মৌলভী এনায়েত হোসেন লাবিবকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) সকাল ১০টার দিকে পুলিশের একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করে বলে নিশ্চিত করেন জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলক চন্দ্র বাসক।

ওসি জানান, অভিযুক্ত ধর্ষক হাফিজ লাবিবের প্রশ্রয়দাতা এবং মামলার অন্যতম আসামী মাদরাসার মুহতামিম মৌলভী সৈয়দুর রহমানকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ওসি আরও বলেন, ভিকটিম মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে কয়েকদিন আগে এই মাদরাসার শিক্ষকের সঙ্গে এই ছাত্রীকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে বিয়ে করিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। আইন অনুযায়ী, ধর্ষণের অভিযোগ আপোষযোগ্য নয় এবং বিয়ে করিয়ে দেওয়াও আইনি সমাধান নয়। ফলে আজকের পোস্টে রবিবার (১৩ জুন) প্রতিবেদন প্রকাশের পর বেআইনিভাবে বিয়ের পীড়িতে বসানোর বিষয়টি ভণ্ডুল হয়ে যায়।

অন্যদিকে, বিষয়টি জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশেরও নজরে আসে। ফলে প্রতিবেদন প্রকাশের পর মেয়ে ও তার পরিবারকে পুলিশ থানায় ডেকে নিয়ে যায় এবং মামলা রেকর্ড করে।

থানায় অভিযোগ রেকর্ড হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে উপজেলার চারিকাটার ধর্ষণ মামলার মূল আসামী হাফিজ মৌলভী এনায়েত হোসেন লাবিবকে গ্রেফতার করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আড়াই বছর যাবত মেয়েটিকে নিয়মিত ধর্ষণ করে আসছে কুব্বাতুল ইসলাম দারুল হুদা কামালপাড়া কওমি মাদরাসার শিক্ষক হাফিজ মৌলভী এনায়েত হুসাইন লাবিব (৩০)।

অভিযুক্ত এই শিক্ষক ও স্থানীয় একটি মাদরাসার ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী অনেকদিন যাবত তাদের অবৈধ শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করলে স্থানীয় শালিসের মাধ্যমে বিচার করে তাদেরকে বিয়ের পিঁড়িতে বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্ত হওয়ার পরই পালিয়ে যায় মাদরাসার মুহতামিম ও শিক্ষক। এদিকে, এ ধরণের অনৈতিক কাজ মাদরাসার ভেতরে নিয়মিত চলার কারণে সংক্ষুব্ধ গ্রামবাসীকে নিয়ে গত ১৩ ‍জুন সকালে মাদরাসায় তালা ঝুলিয়ে দেন চারিকাটা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম তোফায়েল।

ধর্ষিত মেয়ে, তার বাবা ও তাদের কিছু স্বজনের অভিযোগ, এই মাদরাসায় ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী থাকাকালীন মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্কে জড়ান মৌলভী এনায়েত হুসাইন লাবিব। বর্তমানে মেয়েটি একই উপজেলার রওজাতুল ইসলাম চাক্তা কওমি মাদরাসার ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী।

মেয়েটির বাবার দাবি, 'হাফিজ সেই শুরু থেকেই বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার মেয়ের সাথে অনৈতিক কাজ করে আসছে। এরইমধ্যে কয়েক মাস আগে মেয়েটি একবার গর্ভধারণ করে এবং তিন মাসের গর্ভ নষ্ট করা হয়।'

ভিত্রিখেল গ্রামের বাসিন্দা মুনির হোসেন নামে একজন অভিযোগ করে বলেন, 'এই মাদরাসায় নিয়মিত ধর্ষণ ও বলাৎকারের ঘটনা ঘটে। এই মেয়েটির সাথে ওই মাদরাসার মুসা নামে আরেকজন শিক্ষকেরও অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। মাদরাসায় যেসব ছোট ছোট ছেলেমেয়ে পড়ে তাদের বেশির ভাগের সাথে অনৈতিক কাজ করেন শিক্ষকরা। যেখানে নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়া হবে সেখানে যদি এতো আকাম চলে, তাহলে এমন মাদরাসা দিয়ে কী হবে?'

এডিবি/