দিনাজপুর শহরের বালুয়াডাঙ্গার এলাকার অদম্য যুবক শহিদুল ইসলাম ওরফে রাখাল। সারাদিন দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন, জজকোর্ট প্রাঙ্গণসহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ১৯৮৮ সাল থেকে পথচারীদের কান পরিস্কার করে চলে রাখালের সংসার। কোন প্রাতাষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও রংপুর জেলার মিঠাপুকুরের মৃত বাদশা মিয়ার কাছ থেকে এই কাজ শিখেছেন রাখাল। সেই হাতে-কলমে কাজ শিখে আজ সে স্বাবলম্বী।
রাখাল বালুয়াডাঙ্গার এলাকার মৃত কেতু মামুনের ছেলে। স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তার সংসার।
মানুষের কান পরিস্কার করেই ছেলেমেয়ের কমবেশি লেখাপড়া করিয়ে বড় করেছেন। বড় ছেলে হাবিব কম্পিউটার দোকানে কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করে। ছোট ছেলে নুরনবী বেশি লেখাপড়া করেনি। সে কাজ করে একটি ওয়েলডিং ওয়ার্কশপে। বড় মেয়ে শারমিনকে বিয়ে দিয়েছেন। আর ছোট মেয়ে শরিফা পড়ালেখা করে একটি প্রাইমারি স্কুলে।
ইচ্ছা থাকলে মানুষ যে কোন কর্ম বেছে নিয়ে জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে পারে। তার জ্বলন্ত উদাহরণ শহিদুল ইসলাম ওরফে রাখাল। সদা হাস্যোজ্জ্বল রাখাল এখন পর্যন্ত পথচারীদের কান পরিস্কার অব্যাহত রেখেছেন। তার হাতের নিপুনতায় এখন পর্যন্ত কোন মানুষের কানের ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছেন রাখাল।
রাখাল জানায়, তার কাছ থেকে কয়েকজন যুবক কাজ শেখে নিজের জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিনি আফসোস করে বলেন, আমার যদি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থাকতো তাহলে চেম্বার করে বসতাম। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কাজ করতে তার অনেক কষ্ট হয়। তিনি সরকারের মাধ্যমে উন্নত প্রশিক্ষণের সহায়তা চান।
তিনি বলেন, বর্তমানে মানুষ যে হারে মোবাইলে কথা বলছে সে অনুযায়ী কানের নানাবিধ সমস্যা দেখা দিয়েছে। সরকার আমাদের পল্লী চিকিৎসকের ন্যায় কিছুদিনের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতো তাহলে আমরাও প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিতে পারতাম।
এএস/সিবি/এডিবি/