ন্যাভিগেশন মেনু

৩০ বছর ঘরবন্দি ও ৫ বছর শিকলবন্দি নওগাঁর নৃপেন


নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের ভান্ডারা গ্রামে নৃপেন চন্দ্র পাল নামের এক মানসিক রোগীকে প্রায় ৩০ বছর যাবত ঘরবন্দি করে রেখেছেন তার পরিবার। একসময় চিকিৎসা করতে পারলেও বর্তমানে অর্থাভাবে নৃপেনকে ঘরের মধ্যে পায়ে শিকল দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে।

নৃপেনের পরিবার জানায়, নৃপেনের বর্তমান বয়স ৪২ বছর। উপজেলার ভান্ডারা গ্রামের মৃত নরেশ চন্দ্র পালের দ্বিতীয় সন্তান তিনি। ছোটবেলা থেকেই নৃপেন ছিলেন খুবই মেধাবী। স্কুলে পড়ার সময় ১২ বছর বয়সের পর থেকে হঠাৎ করেই নৃপেনের মাঝে অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করে ওর পরিবার।

এরপর থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে নৃপেন। গরীব পরিবার হওয়ার পরও অনেকবার নৃপেনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় আর চিকিৎসা সেবা নৃপেনের ভাগ্যে জুটছে না।

নৃপেনকে বাহিরে ছেড়ে দিলেই মানুষকে মারপিট, গালিগালাজ করা, ঘর-বাড়ি ভেঙ্গে দেওয়াসহ নানা ধরনের অত্যাচার করার কারনে গত ৫ বছর যাবত নৃপেনের পায়ে লোহার শিকল দিয়ে একটি মাটির অন্ধকার ঘরের মধ্যে আটকে রেখেছে তার পরিবার।

বিয়ে দিলে হয়তো নৃপেন ভালো হতে পারে ধারনা থেকে নৃপেনকে বিয়ে দেয় তার পরিবার। বর্তমানে নৃপেনের ঘরে ৭ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

নৃপেনের স্ত্রী শিখা রানী পাল বলেন, আগে পাগলামি কম থাকলেও দিন দিন তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থের অভাবে আমার স্বামীর চিকিৎসা করাতে পারছি না। সরকারিভাবে সহায়তা পেলে উন্নত চিকিৎসা করানো যেতে পারে।

বয়স্ক মা সম্প্রতি বয়স্ক ভাতা পাওয়া শুরু করলেও নৃপেনের পরিবার সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় বর্তমানে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা। তাই নৃপেনের পরিবারের দাবী, সরকারিভাবে যদি নৃপেনকে উন্নত চিকিৎসা প্রদান করা হয় তাহলে হয়তো নৃপেন সুস্থ্য হয়ে উঠতে পারে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, ‘দ্রুত খোঁজ খবর নিয়ে নৃপেনের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও তার পরিবারকে সহায়তা করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

বিএআর/এমআইআর/এডিবি