জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন বা এসক্যাপ’র নির্বাহী সচিব আর্মিদা সালসিয়াহ আলিসজাহবানা বলেছেন, ৫০ বছর ধরে জাতিসংঘে চীন বিশাল অবদান রেখেছে এবং অনেক ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। সম্প্রতি সিএমজি’কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি একথা বলেন।
জাতিসংঘে চীনের অবদান প্রসঙ্গে আলিসজাহবানা বলেন, উন্নয়ন অর্জনের ক্ষেত্রে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সফল দেশগুলোর মধ্যে চীন অন্যতম। চীনের সাফল্য অর্জনের একটি মূল কারণ হলো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করা এবং অংশীদারিত্বের সম্পর্ক বজায় রাখা।
এসক্যাপ ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলের অধীনে ৫টি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কমিশনের একটি এবং এর সদর দপ্তর থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অবস্থিত। জাতিসংঘে চীনের বৈধ মর্যাদা পুনরুদ্ধারের পর এসক্যাপ-এ চীনের বৈধ কার্যক্রমও পুনরুদ্ধার হয়েছে। এসক্যাপ’র লক্ষ্য হলো আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার একত্রীকরণের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন সদস্য দেশকে সাহায্য করা।
আলিসজাহবানা বলেন, “এসক্যাপ বিভিন্ন দেশের ঐক্য বেগবান করার সর্বাত্মক চেষ্টা করে আসছে। এতে চীনের ভূমিকা ও অবদান ক্রমশই বাড়ছে। টেকসই উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের অবদান অধিক থেকে অধিকতর হচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্য নির্ধারণ করা, জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলা করা এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীন বরাবরই এসক্যাপ’র কাজকে সমর্থন দেয়।”
তিনি আরও বলেন, আরও অনেক ক্ষেত্রে চীন নেতৃত্বাধীন ভূমিকা পালন করেছে। যেমন দারিদ্র্যবিমোচন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীন ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে।
এসক্যাপ’র সদস্য রাষ্ট্র ৫৩টি। ‘মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের সম্প্রদায় গঠন’ এবং ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ সংক্রান্ত চীনের উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো এই অঞ্চলের অনেক দেশকে সংযুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।
আলিসজাহবানা মনে করেন, “এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় চীন নমনীয়তা ও সহনশীলতা দিয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করে এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বেগবান করেছে।”
তিনি বলেন, “চীনের ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের মূল বিষয় হলো আন্তঃযোগাযোগ। সড়ক, রেল ও সমুদ্র ও আকাশ যোগাযোগ ছাড়াও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ডিজিটাল অবকাঠামো ও জ্বালানির আন্তঃযোগাযোগও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।”
নোভেল করোনাভাইরাস মহামারী বিশ্বের অর্থনীতিতে গুরুতর চ্যালেঞ্জ বয়ে এনেছে এবং এজেন্ডা-২০৩০’র অগ্রগতিতে প্রভাব ফেলেছে।
আলিসজাহবানা মনে করেন, মহামারী প্রতিরোধ এবং অন্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করে মহামারী প্রতিরোধ করা ও বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীন ব্যাপক অবদান রেখেছে।
তিনি বলেন, এসক্যাপ চীনের সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে ভালো সহযোগিতা বজায় রেখে আসছে। ভবিষ্যতে এসব সহযোগিতা গভীরতর হবে বলে তিনি আশা করেন।
তিনি বলেন, “আমরা আরও অনেক ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে গভীর সহযোগিতা চালাবো। যেমন, আন্তঃযোগাযোগ, বিশেষ করে আন্তঃযোগাযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জ্বালানি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৃজনশীলতা, মহাকাশ ও ডিজিটাল ব্যবহার, বার্ধক্য সমস্যা, প্রতিবন্ধীদের স্বার্থ, লিঙ্গ সমতা, শহর ও কৃষির উন্নয়ন প্রভৃতি।