ন্যাভিগেশন মেনু

দেড় ফুট গাছে দেড় কেজি ওজনের পেঁপে, খুশি কৃষক বাবুল মিয়া


দেড় ফুট উচ্চতার গাছে দেড় কেজি ওজনের পেঁপে। অধিক ফলনশীল ও আকর্ষণীয় হাইব্রিড পেঁপের জাত 'বাবু'। এক বিঘা জমিতে এ জাতের পেঁপে চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন মৌলভীবাজারের খোয়াজপুর গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া ও তার ছেলে।

হাইব্রিড পেঁপে চাষের সফলতায় অনান্য কৃষকদের মাঝেও সারা জাগিয়েছেন তারা। এমন সফলতা দেখে গ্রামের বেকার যুবকসহ অনেকেই এখন ঝুঁকছেন পেঁপে চাষের দিকে। অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়ায় পেঁপে চাষ করতে আগ্রহী এলাকার অনেক কৃষক।

জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের খোয়াজপুর গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া। তার এক বিঘা জমিতে বড় ছেলে আলী হোসেন লিটনকে সাথে নিয়ে শুরু করেন হাইব্রিড বাবু জাতের পেঁপে চাষ। তার বাগানে এখন সারি সারি ছোট ছোট পেঁপে গাছে ঝুলছে অগণিত পেঁপে।

বাবুল মিয়া জানান, চারা লাগানোর ৩ খেকে ৪ মাসের মাথায় গাছে ফল আসা শুরু করে। বাবু জাতের পেঁপে গাছটি উচ্চতায় সর্বোচ্ছ দেড় ফুট হয়ে থাকে। ওজনে পেঁপেগুলো হয়ে থাকে এক থেকে দেড় কেজি। সপ্তাহে একবার এ বাগান থেকে দুই হাজার কেজি পেঁপে সংগ্রহ করে বিক্রি করেন তিনি।

তিনি জানান, তাদের এক বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করতে খরচ হয়েছে আট হাজার টাকার মতো। আর প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি করেন ২০ টাকা। অবশিষ্ট যে পরিমান পেঁপে এখন গাছে রয়েছে এবং নতুন করে যে ফল গাছে আসছে তা দেড় লাখ টাকার বেশি বিক্রি করতে পারবেন।

সফল কৃষক বাবুল মিয়া জানান, এ সময়ে বাজারে সবজির অনেকটাই সংকট থাকে। স্থানীয় বাজারে পেঁপের চাহিদাও ভালো। ছেলেকে সাথে নিয়ে পেঁপে গাছের পরিচর্যা করা হয়। হাইব্রিড পেঁপে 'বাবু' উৎপাদনে প্রতি শতাংশে বীজের পরিমাণ লাগে ০.৩৫ গ্রাম। একর প্রতি বীজের পরিমাণ ৩০ থেকে ৩৫ গ্রাম। এই জাতটি হলুদ মোজাইক ভাইরাস রোগ সহনশীল। ফলন ভালো হয়েছে। অল্প খরচে বেশি লাভবান হওয়া যায় এ জাতের পেঁপে চাষে। এমন উৎপাদন অব্যাহত থাকলে পেঁপে বাগান থেকে দুই লাখ টাকার উপরে পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি।

স্থানীয় কৃষক ময়না মিয়াসহ অনেকেই বলেন, বাবুল মিয়া ও আলী হোসেন লিটন পেঁপে চাষ করে অল্প সময়ে সফল হয়েছেন। তাদের পেঁপে চাষ দেখে ব্যাপক উৎসাহ তৈরি হচ্ছে। আগামীতে বাবু পেঁপে চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। গ্রামের অন্য কৃষকরাও তাদের অনেক অনাবাদি,পতিত পড়ে থাকা জমিতে পেঁপে চাষ করতে উৎসাহী হচ্ছেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি জানান, প্রচুর পরিমানে হাইব্রিড জাতের পেঁপের আবাদ বেড়েছে শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। হাইব্রিড বাবু জাতের পেঁপে চাষ করে কৃষকরা অল্প সময়ে লাভবান হচ্ছেন। যার বাস্তব প্রমান খোয়াজপুর গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া ও তার ছেলে লিটন। তাদের অনুসরণ করে অনেক কৃষক পেঁপে চাষে আগ্রহী হয়েছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পেঁপেচাষীদের ভাইরাস মোকাবেলাসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

অর্থনৈতিকভাবে সরকারি সহযোগিতা কিংবা সহজ শর্তে ঋণসহ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ব্যাপক পরিসরে পেঁপে চাষ হতে পারে এ অঞ্চলে। আর বেকার নারী-পুরুষ পেঁপে চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারেন বলে মনে করছেন এলাকার কৃষকরা।

পিডি/সিবি/এডিবি/