ন্যাভিগেশন মেনু

কোনো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, কোনো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে ছাড় দেওয়া হবে না। বান্দরবানের রুমার ঘটনায় সন্ত্রাসীরা তাদের সক্ষমতা প্রর্দশন দেখানোর চেষ্টা করেছে মাত্র তবে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ধুলিসাৎ করে দেবে।

শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে বান্দরবান সার্কিট হাউসে বান্দরবান জেলার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমন মন্তব্য করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কোনো ধরনের অস্ত্রধারীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে থাকতে দেব না।

 আমরা অনেক ধৈর্যের সঙ্গে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বান্দরবান  জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাদের সঙ্গে দুইবার আলোচনায় বসেছেন। তারা আলোচনায় না গিয়ে তাদের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ড করেছে।

তিনি আরও বলেন, যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা যদি বিদেশেও আশ্রয় নেয়, আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাদেরকে দেশে ফেরত এনে বিচারের ব্যবস্থা করব।

রুমা উপজেলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, শান্তিপ্রিয় এলাকা, যেখানে শান্তির সুবাতাস সবসময় বইতো সেখানে আমরা এ ধরনের ঘটনা কামনা করি না। হামলায় কাদের সংশ্লিষ্টতা ছিল তাদের আমরা আইনের আওতায় আনব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী তারা তাদের মতো করে কাজ করবে।

তিনি বলেন, আমরা আর কোনো কিছুকে চ্যালেঞ্জ নিতে দেব না। এর উৎপত্তি, উৎস কোথায় খুঁজে বের করব। তাদের সকলকেই আইনের আওতায় আনব।

রুমা উপজেলা পরিদর্শন শেষে দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বান্দরবান সার্কিট হাউসে পৌঁছান। সেখানে তিনি জেলা পুলিশের গার্ড অফ অনার গ্রহণ করেন। পরে বান্দরবান জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে জেলা প্রশাসনসহ সরকারি নিরাপত্তা সেক্টরের সকল বিভাগের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটি সশস্ত্র সংগঠন তাদের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা মনে করি যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গিয়ে অপরাধ করেছে। কাজেই রাষ্ট্র চুপ থাকতে পারে না। আমরা এ জন্য যা যা করণীয় তা করব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আমরা পুলিশ, র‍্যাব, আনসার সদস্যের সংখ্যা বৃদ্ধি করব।আমরা সীমান্তে বিজিবি বৃদ্ধি করব।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনীর প্রধানকে নির্দেশনা দিয়েছেন সবাই মিলে যেন যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। তার আগে পুলিশ, র‍্যাব, আনসার ও বিজিবি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা তা করব।

কেএনএফের সঙ্গে আর কোনো আলোচনা হবে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণের বাইরে না। এই এলাকার জনসাধারণ যদি মনে করে আলোচনা হওয়া উচিত, তাহলে আলোচনা হতেও পারে, এই সিদ্ধান্ত জনগণের। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কাজ চালিয়ে যাবে।

এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বান্দরবানের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীনসহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন পদ মর্যাদার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এর সদস্যরা গত কয়েকদিন ধরে রুমা,থানচি উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে সশস্ত্র হামলা করে টাকা লুট করে এবং পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মারধর করে ১৪টি অস্ত্র ও ৩৮০ রাউন্ড গুলি ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

এদিকে কয়েকদিনের চলমান বিভিন্ন সশস্ত্র হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় বান্দরবানের রুমা ও থানচি থানায় ৭টি মামলা হয়েছে।