ন্যাভিগেশন মেনু

নারীশিক্ষা প্রসারে আন্তর্জাতিক সমাজের আরও সমর্থন চাইলেন চীনের ফার্স্ট লেডি


চীনের ফার্স্ট লেডি ও ইউনেস্কোর বিশেষ দূত ফেং লিইউয়ান বলেছেন, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তথা ‘এজেন্ডা ২০৩০’ বাস্তবায়নের জন্য, আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত নারীদের শিক্ষা প্রসারে অধিক মনোযোগী হওয়া। 

তিনি শুক্রবার বেইজিং থেকে ভিডিও-লিঙ্কের মাধ্যমে ইউনেস্কোর ‘প্রাইজ ফর গার্লস অ্যান্ড উইমেনস এডুকেশন’ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। 

ফেং লিইউয়ান ব্রাজিল ও মোজাম্বিকের পুরস্কার বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ২০১৫ সালে চীন ও ইউনেস্কোর যৌথ উদ্যোগে প্রবর্তিত এ পুরস্কার বিশ্বব্যাপী নারীশিক্ষা উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে আসছে। 

তিনি বলেন, এ কারণে নারীশিক্ষা উন্নয়নে আরও বেশি মানুষ উৎসাহিত হয়েছেন ও নিজ নিজ অবদান রেখে আসছেন। বিশ্বজুড়ে অসংখ্য কন্যাশিশু ও নারী শিক্ষিত হয়ে আত্মবিশ্বাসের শক্তিতে নিজেদের ভাগ্য বদলেছে। তা ছাড়া, বিশ্বজুড়ে নারীশিক্ষার প্রতি সমর্থনও ক্রমশ বাড়ছে। এর ফলে সারা বিশ্বে ধীরে ধীরে শিক্ষার ক্ষেত্রে লিঙ্গসমতা সৃষ্টি হচ্ছে। 

চীনা ফার্স্ট লেডি বলেন, চীন ও জাতিসংঘের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ দ্বিতীয় পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান যেন এক নতুন সূচনা, যা কন্যাশিশু ও নারীদের শিক্ষা উন্নয়নে নতুন জীবনশক্তি যোগাবে। আন্তর্জাতিক সমাজকে এ ক্ষেত্রে আরও মনোযোগী হতে হবে; দিতে হবে সমর্থন। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তথা ‘এজেন্ডা ২০৩০’ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নতুন অবদান রাখবে এই পুরস্কার। 

তিনি জোর দিয়ে বলেন, সারা বিশ্বের কন্যাশিশু ও নারীদের শিক্ষার ওপর মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট। বিদ্যমান বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সঠিক ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদের জন্য ন্যায়সঙ্গত ও গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। 

ফেং লিইউয়ান বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে অনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে সার্বিকভাবে দরিদ্র পরিবার ও দরিদ্র অঞ্চলের কন্যা ও নারীদের শিক্ষাকে সহযোগিতা দেওয়া জরুরি। এতে তাদের নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে কর্মসংস্থান পাওয়া বা উদ্ভাবনের শক্তি ও সামর্থ্য বাড়বে। ডিজিটাল যুগে তারাও যেন সুখী জীবন উপভোগ করতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি, নারীদের স্বাস্থ্যবিষয়ক শিক্ষার ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত, যাতে তাদের ও তাদের পরিবারের স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের সামর্থ্য বাড়ে। সার্বিকভাবে তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের মান উন্নত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ছোট নদ-নদী মিলে সমুদ্র হয়ে যায়। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অবদান মিলে মহান ভালবাসা ও কল্যাণ সৃষ্টি করতে পারে। 

ইউনেস্কোর বিশেষ দূত হিসেবে তিনি সবার সাথে হাতে হাত রেখে আরও বেশি শিশু ও বোনের জন্য সুন্দর ভবিষ্যত সৃষ্টি করতে ইচ্ছুক বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

একই দিনে ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজোলে তার ভাষণে বলেন, চীন সরকারের সমর্থনে প্রবর্তিত কন্যা ও নারীদের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট এ পুরস্কার মহামারীর মধ্যেও নারী ও শিশুদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। এক্ষেত্রে চীন সরকারের সমর্থন ও সহায়তার কথা তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং বিশেষ করে মাদাম ফেং লি ইউয়ানের দৃঢ় সমর্থনের জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। 

চীন ও ইউনেস্কোর যৌথ উদ্যোগে প্রবর্তিত ‘প্রাইজ ফর গার্লস অ্যান্ড উইমেনস এডুকেশন’ হচ্ছে কন্যা ও নারীদের শিক্ষা উন্নয়নের ক্ষেত্রে একমাত্র আন্তর্জাতিক পুরস্কার। আন্তর্জাতিক সমাজে এ পুরস্কার ব্যাপক সমর্থন ও প্রশংসা অর্জন করেছে। - তথ্য: চায়না মিডিয়া গ্রুপ