ন্যাভিগেশন মেনু

না ফেরার দেশে অভিনেতা সাদেক বাচ্চু


ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সাদেক বাচ্চু আর নেই। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।ইন্না-লিল্লাহ..... রাজিউন।

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী আজকের বাংলাদেশ পোস্টকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সোমবার সকাল থেকেই তার হার্টবিট বন্ধ হয়েছে বেশ কয়েকবার। অবশেষে ১২টা ৫ মিনিটে সাদেক বাচ্চু মৃত্যুবরণ করেছেন বলে নিশ্চিত করা হলো।

সম্প্রতি জ্বরে আক্রান্ত হন সাদেক বাচ্চু। পরে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গেল ৬ সেপ্টেম্বর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। গত শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) তার পরিবার সূত্রে জানা যায় এ অভিনেতা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

এরপর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়ে সাদেক বাচ্চুর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় শনিবার রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ইউনিভার্সেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে হাসপাতালটির কোভিড ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন এই অভিনেতা। তার শরীরের আর উন্নতি হয়নি। রবিবার থেকেই তার হার্ট ও ফুসফুস ৮০ শতাংশ অকেজো ছিলো। আজ সোমবার সকাল থেকেই কয়েকদফায় তার হার্টবিট বন্ধ হয়ে আবার চালু হয়েছে। ভেন্টিলেটরে থাকা অবস্থাতেই অবশেষে চলে গেলেন আজ না ফেরার দেশে।

তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্রাঙ্গনে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বরেণ্য এই অভিনেতাকে হারিয়ে শোক প্রকাশ করছেন তার ভক্ত ও অনুরাগীরা।

পাঁচ দশকের লম্বা ক্যারিয়ারে মঞ্চে, বেতারে, টিভিতে, সিনেমায়, সর্বত্র দাপুটে বিচরণ ছিল তার। নব্বইয়ের দশকে এহতেশামের ‘চাঁদনী’ ছবিতে অভিনয়ের পর সাদেক বাচ্চু জনপ্রিয়তা পান খলনায়ক হিসেবে।

১৯৬৩ সালে খেলাঘরের মাধ্যমে রেডিওতে অভিনয় শুরু করেন সাদেক বাচ্চু। একইসাথে মঞ্চেও বিচরণ করেন। প্রথম থিয়েটার ‘গণনাট্য পরিষদ।’ ১৯৭২-৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে যখন এদেশের সাংস্কৃতিক বলয় নতুনভাবে তৈরি হচ্ছিল, তখন যোগ দেন গ্রুপ থিয়েটারের সাথে। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে ১৯৭৪ সালে প্রথম টেলিভিশন নাটকে অভিষিক্ত হন।

দেক বাচ্চুর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’, ‘জীবন নদীর তীরে’, ‘জোর করে ভালোবাসা হয় না’, ‘তোমার মাঝে আমি’, ‘ঢাকা টু বোম্বে’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘এক জবান’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘বধূবরণ’, ‘ময়দান’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘প্রিয়জন’, ‘সুজন সখি’ ইত্যাদি।

সাদেক বাচ্চুর আসল নাম মাহবুব আহমেদ সাদেক। চাঁদপুরে দেশের বাড়ি হলেও জন্ম ঢাকায়। সিনেমার কিংবদন্তি মানুষ এহতেশাম 'চাঁদনী' চলচ্চিত্রে তার নাম বদলে সাদেক বাচ্চু করে দেন। সেই থেকেই তিনি এ নামে পরিচিত। টিএন্ডটি নাইট কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেন সাদেক বাচ্চু।

ওআ/