ন্যাভিগেশন মেনু

মুক্তি পেলেন হুয়াওয়ের নির্বাহী কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝু


প্রতারণার অভিযোগে কানাডায় আটক চীনের প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়ের কর্মকর্তা মেং ওয়ানঝু

কয়েক বছরের কূটনৈতিক টানাপোড়েন শেষে অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন। একই সঙ্গে চীনে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক থাকা দুইজন কানাডিয়ান নাগরিককে মুক্তি দেয়া হয়েছে।

শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের কৌসুঁলিদের সঙ্গে একটি সমঝোতার পর তিনি নিজ দেশ চীনে ফিরে গেছেন।

চীন কর্তৃক মুক্তি পাওয়া দুই কানাডিয়ান ফিরে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শনিবার সন্ধ্যায় হুয়াওয়ের মেং ওয়ানজু শেনঝেনে উড়ে যান। কানাডিয়ান দুই নাগরিক মাইকেল স্পেভার এবং মাইকেল কোভরিগ স্থানীয় সময় শনিবার সকাল ৬টায় চীন থেকে কানাডার পশ্চিমের শহর ক্যালগারি পৌঁছেছেন। এই দুইজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এই দুই কানাডিয়ান নাগরিককে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার করেছিল চীন।

কানাডায় আটকাবস্থা থেকে মুক্তির পর মেং ওয়ানঝু সাংবাদিকদের বলেন, 'আমার জীবন পুরোপুরি উল্টেপাল্টে গেছে। এটা আমার জন্য একটা বিপর্যয়কর সময় ছিল।'

প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের পর তাকে আটক করেছিল কানাডা। শুক্রবার তাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ প্রত্যাহার করে নেয় মার্কিন বিচার বিভাগ। এই মামলার কারণে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়।

এরপর অভিযোগ ওঠে যে, পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে কানাডার নাগরিকদের আটক করেছে চীন, যদিও দেশটি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সংবাদসংস্থা এএফপি জানায়, মুক্তির পরপরই তিনি চীনের শেনজেনগামী এয়ার চায়নার একটি প্লেনে কানাডা ছেড়ে যান। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কূটনৈতিকদের ব্যাপক আলোচনার পর মেং ওয়ানঝু ছাড়া পেলেন।

তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ ছিল - তিনি ইরানের ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে ফাঁকি দিয়ে হুয়াওয়ের ব্যবসা সম্পর্কে আমেরিকান ব্যাংকগুলোকে মিথ্যা বলেছিলেন। তবে মেং এবং হুয়াওয়ে উভয়েই ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ জানিয়েছে, তারা মামলা স্থগিতের একটি চুক্তিতে পৌঁছেছেন।

এর মানে হলো, মিজ মেং এর বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মামলার কার্যকলাপ স্থগিত রাখতে বিচার বিভাগ। এরমধ্যে আদালতের নির্ধারিত শর্তগুলো যদি তিনি মেনে চলেন,তাহলে পুরো মামলাই বাতিল করা হতে পারে।

গত তিন বছর ধরে ভ্যাঙ্কুভারে তার বাবার মালিকানাধীন একটি বাড়িতে গৃহবন্দী ছিলেন মেং ওয়ানঝু।

চুক্তির অংশ হিসাবে মেং স্বীকার করে নিতে রাজি হয়েছেন যে, এইচএসবিসি ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দেয়ার বিষয়টি তিনি জানতেন।

মেং হচ্ছেন হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেন জেনফেং-এর মেয়ে, যিনি ১৯৮৭ সালে হুয়াওয়ে প্রতিষ্ঠা করেন। কোম্পানিটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেলিকম প্রযুক্তি উৎপাদক প্রতিষ্ঠান। 

মেং ওয়ানঝুর মুক্তির পরপরই চীনে আটকাবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছেন দুইজন কানাডিয়ান নাগরিক।

মেং ওয়ানঝুকে কানাডা গ্রেপ্তার করার পরপরই ২০১৮ সালে মাইকেল স্পাভোর এবং মাইকেল কোভরিগকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে চীন গ্রেপ্তার করেছিল।

এক সংবাদ সম্মেলনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, এই দুইজন 'অবিশ্বাস্য রকম কঠিন অবস্থার ভেতর দিয়ে গেছেন।'

সাবেক কূটনৈতিক কোভরিগ ব্রাসেলসভিত্তিক থিংক ট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের একজন কর্মকর্তা আর স্পাভোর একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা যারা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আন্তর্জাতিক ব্যবসা এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগের কাজ করে থাকে।

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এ বছরের মার্চে স্পাভোরকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল চীনের একটি আদালত। আর কোভরিগকেও তখন আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তবে তার সাজা ঘোষণা করা হয়নি।

এডিবি/