ন্যাভিগেশন মেনু

যানজট নিরসনে গণপরিবহন ব্যবহারে সবাইকে উৎসাহী করতে হবে: তাজুল ইসলাম


যানজট নিরসনে গণপরিবহন ব্যবহারে সবাইকে উৎসাহী করতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।  

সোমবার (১১ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন-ডুরা আয়োজিত 'অসহনীয় যানজট: সমাধান কী' শীর্ষক সংলাপে তিনি একথা বলেন।

তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাস্তা না রেখে শুধু বড় বড় বিল্ডিং করলে এবং ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বাড়লে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম হওয়াটাই স্বাভাবিক। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যানজট দূর করতে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহারে সবাইকে উৎসাহী করতে হবে।

বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে গাড়ির গতি মানুষের হাঁটার চেয়েও কম হবে।

যানজট নিরসনে রাস্তায় বিভিন্ন দোকানপাট বসানো এবং যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, রাজধানীর অধিকাংশ জায়গায় দেখা যায় রাস্তা দখল করে দোকানপাট বসানো হয়েছে। আবার রাস্তার উপরে যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়। যা ট্রাফিক জ্যামের অন্যতম কারণ। যারা রাস্তার উপরে গাড়ি রাখবে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর অবস্থান নিতে হবে।

তিনি জানান, ট্রাফিক জ্যাম বিশ্বের সব দেশেই আছে। অনেক দেশ কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো যে প্রক্রিয়ায় ট্রাফিক জ্যাম সমাধান করেছে, সেভাবে হুবহু আমাদের করা সম্ভব নয়। কারণ তাদের দেশের চিত্র আর আমাদের দেশের চিত্র এক না। সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে সবার আগে এরপর সমাধান খুঁজতে হবে। আমরাও বসে নেই। এনিয়ে কাজ করা হচ্ছে।

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, ট্র্যাফিক জ্যাম নিরসন করা একক কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্ভব নয়। সমন্বিতভাবে কাজ করলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ করতে হবে। ট্রাফিক আইন মানার বিষয়ে মানুষকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে।

তিনি জানান, ঢাকা শহরে কত মানুষ বসবাস করবে তা ঠিক করা জরুরি। কারণ সবাইকে ঢাকায় রাখা সম্ভব না। ঢাকা ডিটেল অ্যারিয়া প্লান (ড্যাপ) সে লক্ষ্যে প্রণয়ন করা হচ্ছে। ঢাকাকে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। মূল ঢাকায় না থেকে যাতে করে মানুষজনকে সম্প্রসারিত এলাকা স্থানান্তর করা যায় সে ব্যাপারে উৎসাহিত করতে হবে।

ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের কাছে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা হস্তান্তর করা হবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিটি করপোরেশন নিজেদের অর্থায়নে এয়ারপোর্ট বানিয়েছে, সাবওয়ে নির্মাণ করেছে। আমাদের দুই সিটি করপোরেশন অনেক দায়িত্ব পালন করছে। দুই মেয়রের কাজ করার অনেক আগ্রহ রয়েছে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করার সক্ষমতা আছে কি না তা দেখতে হবে।

পরে সাংবাদিকরা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উপজেলাতেও ট্রাফিক জ্যাম হবে সংসদে এমন মন্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই উন্নত দেশে পরিণত হবে। মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে সাড়ে ১২ হাজার ডলারে। মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাল্টি ডাইমেনশনাল ইম্পেক্ট পড়বে। সবার গাড়ি ক্রয় করার সামর্থ্য হবে। সেক্ষেত্রে আমরা যদি এখন থেকে পরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো এবং রাস্তাঘাট নির্মাণ না করি তাহলে উপজেলাতেও ট্রাফিক জ্যাম হতে পারে বলে আমি বলেছিলাম। এখন থেকে প্রস্তুতি না গ্রহণ করলে এই সমস্যা দেখা দেবেই।

ডুরার সভাপতি রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শাহেদ শফিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বুয়েটের পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।