ন্যাভিগেশন মেনু

ঈদুল ফিতরের ছুটিতেও সচল থাকবে চট্টগ্রাম বন্দর-কাস্টমস কার্যক্রম


প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ঈদুল ফিতরের ছুটিতে চালু থাকবে চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের স্বাভাবিক কার্যক্রম। দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্য চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের কর্তৃপক্ষ বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ৯২ শতাংশ সম্পন্ন হয়।  চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হওয়া পণ্য এবং চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে আসা পণ্যের শুল্কায়ন করে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ। আগামী সপ্তাহে দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ছুটির পড়বে। শবে কদর, ঈদুল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষের ছুটির সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে বড়ধরনের ছুটিতে থাকবে। এতে গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান এই ছুটিতে থাকে। তবে এ ছুটিতেও দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সচল রাখতে চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) এসব তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমস হাউজের কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, 'এবার ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম পুরোপুরি চালু থাকবে। শুধুমাত্র ঈদের দিন সকালের শিফটে আট ঘণ্টা কনটেইনার হ্যান্ডলিং ডেলিভারি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিকভাবে কাজের কোনো চাপ থাকে না। এতে বন্দর কার্যক্রমে কোনো সমস্যা হবে না। ঈদের দিন সকালেও জেটিতে জাহাজীকরণ কার্যক্রম চালু থাকবে। পণ্য ডেলিভারি চাইলেও নিতে পারবেন। ঈদের ছুটিতে যাতে কনটেইনার ডেলিভারি স্বাভাবিক থাকে সে লক্ষ্যে স্টেকহোল্ডারদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।'

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, ‘এবার ঈদে বিশাল বন্ধ থাকায় একটা বড় চাপের আশঙ্কা রয়েছে। ঈদের ছুটিতে আমদানি পণ্যের ডেলিভারিতে চাপ থাকেনা, কিন্তু রপ্তানি পণ্যর বেশি হওয়ায় ডিপোগুলোতে চাপ থাকে। সেজন্য ঈদের ছুটির পর আগের মতো স্বাভাবিক থাকে। আবার শ্রমিকদের একটা বড় অংশ বাড়ি চলে যায়। তাই ঈদে আমাদের স্বস্তির জায়গাটা থাকে না। শ্রমিকদের বেশিরভাগ ছুটিতে বাড়ি চলে যায়। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি বন্দরের কার্যক্রম পুরোপুরি চালু থাকলেও কাস্টমসের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয়। আমদানির ক্ষেত্রে রাজস্ব কর্মকর্তাদের পাওয়া গেলেও রপ্তানির ক্ষেত্রে সমস্যা পোহাতে হয়। তবে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ঈদের ছুটিতে তারা বিশেষভাবে রপ্তানি ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থায় কার্যক্রম চালু রাখার উদ্যোগ নিয়েছেন।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘ছয়জন ডেপুটি কমিশনার এবং একজন সহকারী কমিশনারের তত্ত্বাবধানে কাস্টমস হাউজের কার্যক্রম চালু থাকবে। অন্য ধর্মাবলম্বী যেসব কর্মকর্তা রয়েছেন, তাদেরকে ছুটির সময়ে শুল্কায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কোনোভাবেই যাতে আমদানি রপ্তানি পণ্য চালানের শুল্কায়ন বাধাগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস পূর্বপ্রস্তুতি নিয়েছে।’

চট্টগ্রাম কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, এনবিআর থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে, এতে কাস্টমস আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সীমিত পরিসরে চলতে পারে। প্রতি বছরের মতো ঈদের ছুটিতে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কাস্টমস সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, শিপিং এজেন্ট, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো ঈদের বন্ধ থাকায় পণ্য ডেলিভারি কার্যক্রম তেমন হয়না। একই সাথে বিপুল শ্রমিক ঈদের ছুটিতে থাকে।

আইসিডি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা) সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার  বলেন, ‘বিষয়টি রপ্তানিকারক, আমদানিকারক, শিপিং লাইন, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টসহ আইসিডির সব স্টেকহোল্ডারকে অবহিত করেছি। প্রত্যেক বছরের সময় যেরকম চলেছিল, সেরকম চলবে। বিজিএমইএ একটা চিঠি দিয়েছ, যাতে ঈদের আগের ও পরের বন্ধের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখতে বলেছে। আমরা সেতু মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে রপ্তানি পণ্য কোন নিষেধাজ্ঞা থাকেনা। ঈদের দিনটা বাদের আগের-পরে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে। প্রতি বছরের মত বন্দরের সাথে প্রতিবছর স্টেক হোল্ডারদের সাথে মতবিনিময় হয়। প্রতি বছরের মতো চট্টগ্রাম বন্দর চাই ঈদের দিন স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু থাকুক।

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চট্টগ্রামের বেসরকারি আইসিডিগুলোর অপারেশনাল কার্যক্রম ৩৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে। ১১ এপ্রিল ঈদ হলে আগের দিন ১০ এপ্রিল রাত ১২টা থেকে ১২ এপ্রিল সকাল ১০টা পর্যন্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।