ন্যাভিগেশন মেনু

ঈদের ছুটিতে পঞ্চগড়ের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়


পবিত্র ঈদ উল ফিতর এবং বাংলা নববর্ষের টানা ৬ দিন ছুটিতে পঞ্চগড়ের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় জমেছে।

জানা যায় দেশের সর্ব উত্তরের হিমালয় কন্যা পঞ্চগড় জেলা ইতোমধ্যে দেশের মানুষের কাছে সম্ভাবনাময় পর্যটন নগরী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। আর পঞ্চগড় জেলার পর্যটন নগরী হিসেবে তেঁতুলিয়া উপজেলা পর্যটকদের কাছে সর্বশীর্ষে। কারণ এ উপজেলায় আছে সমতলে চা সবুজ চা বাগান, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ও জিরোপয়েন্ট, কয়েক শতাধিক বছরের পুরনো বিট্রিশ আমলে নির্মিত জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, মহানন্দা পার্ক, বনবিটের ইকোপার্ক, কাজী এন্ড কাজী মিনাবাজার, রওশনপুর আনন্দধারা, টিউলিফ বাগান, কমলা বাগান, কাঞ্চন  (বোম্বে) বাঁশ, হলুদ বাঁশ, মহানন্দা নদীর জলরাশির বুকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পর ভারত সীমান্তের লাইট পোস্টের প্রতিচ্ছবি,  এবং পিকনিক কর্ণার মহানন্দার ধারে দাঁড়িয়ে হিমালয়ের সুনীল আকাশে খালি চোখে খুব কাছাকাছি দেখা মিলে ভারতের শৈল্যশহর দার্জিলিং এবং বিশ্বের সবোর্চ্চ পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্জনজঙ্ঘা। এসবের কারণে আগন্তুক পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ সর্বউত্তরের সীমান্তঘেঁষা উপজেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া। এছাড়া চাওয়াই  নদীর  ধারে নবনির্মিত পঞ্চগড় পার্ক, ভিতরগড় মহারাজার দিঘি, পঞ্চগড় মহিলা কলেজে রকস মিউজিয়াম (পাথরের যাদুঘর), হিমালয় পার্ক, আটোয়ারী উপজেলায় মোঘল আমলে নির্মিত প্রাচীন শাহী মসজিদ, বারো আওলিয়া বাজার। দেশের দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকরা এসবের আকর্ষণে পঞ্চগড়ে ছুটে আসে। যে কারণে বছরে দুই ঈদের ছুটি সহ অন্যান্য বাৎসরিক টানা ৪-৫দিন ছুটিতে পঞ্চগড়ে দেশি-বিদেশী পর্যটকদের ভিড় জমে। 

ঈদের ছুটিতে পঞ্চগড়ে বেড়াতে আসা বগুড়ার পর্যটক রাকীব, আ. কাদের, হাসান ও  লিখন বলেন, ঈদের টানা ছুটিতে কয়েকজন বন্ধুবান্ধব পরিবার পরিজন নিয়ে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখলাম খুব ভাল লাগল। তবে পর্যটন নগরী হিসেবে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়াকে আরেকটুক সাঁজানো গোছানো গেলে ভাল লাগবে। যেমন পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত গণসৌচাগার নির্মাণ,  গাড়ী পার্কিং এর অভাব,  বছরের বিশেষ দিনগুলোর আগে পর্যটন স্পটগুলো যতটা সম্ভব রং বার্নিস ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা। সড়কের দুপাশে আকর্ষণীয় কিছু গাছপালা রোপন করা। এছাড়া দূরপাল্লার পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ডে কোচ সহ দূরপাল্লার মেইল বাস চালু করা। কারণ বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্ট সরাসরি যাতায়াতে দিনের বেলায় কোন ডে কোচ নাই। রেল যোগাযোগ বাংলাবান্ধা থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে পঞ্চগড় শহরে এবং বিমান যোগাযোগ প্রায় দু”শ কিলোমিটার দূরে। যদি সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা হয় তবে আগন্তুক পর্যটকদের সমাগম আরও বাড়বে। পাশাপাশি এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের নানামুখী ব্যবসার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং সরকারিভাবে রাজস্ব আয় বাড়বে।

পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা টূরিস্ট পুলিশ জোনের ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ এস আই মো. জালাল উদ্দীন বলেন, বছরে বিশেষ দিবসগুলোর ছুটি ছাড়াও শীতকালীন এবং অন্যান্য ঋতুতেও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় হাজার হাজার পর্যটকদের সমাগম ঘটে। এসব পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধানে টূরিস্ট পুলিশ সর্বদা কাজ করছে। কিন্তু পর্যটকরা বেড়াতে এসে গাড়ী পাকিং এবং গণসৌচাগারের অভাবে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সমস্যাগুলো সমাধান করা হলে পর্যটকরা আরও সাচ্ছন্দে আনন্দ উপভোগ করতে পারবে।