মুসলমানদের জন্য যে কোন ইবাদতের আগে পবিত্রতা অর্জন করা অন্যতম প্রধান শর্ত। পবিত্রতার সাথে ইবাদত কবুল হওয়া না হওয়াও জড়িত। অর্থাৎ ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্ব শর্ত হচ্ছে পবিত্র অবস্থায় ইবাদত করা। আর যে কোন নাপাকীর পর পবিত্রতা অর্জনের প্রধান উপায় হচ্ছে গোসল। আপনি কি জানেন গোসলের ফরজ কয়টি ? যদি না জেনে থাকেন তাহলে মুসলমান হিসেবে এটি জানা আপনার জন্য ফরজ। গোসলের ফরজ না জানার কারণে আমাদের অনেকেরই ইবাদত কিংবা দোয়া কবুল হয় না।
আল্লাহ বলেন- হে ঈমানদার গণ! নামাযের ধারে-কাছে যেয়ো না যখন তোমরা নেশা অবস্থায় মাতাল হয়ে থাকো, যে পর্যন্ত না তোমরা বুঝো কি তোমরা বলছো, অথবা যৌন-সম্ভোগ করার পরবর্তী অবস্থায়, যতক্ষণ না গোসল করেছ। [সূরা আন’নিসা : ৪৩ ]
তাই গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি এবং কখন গোসল ফরজ হয় অর্থাৎ কখন গোসলের ফরজ আদায় করা জরুরি তা আমাদের প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের ই জানা দরকার। আপনাদের সুবিধার্থেই আমরা আজকে গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
গোসলের সর্বমোট ফরজ ৩ টি। যথাক্রমে :
১. একবার গড়গড়া সহ কুলি করা।
১. নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পোঁছানো এবং পরিষ্কার করা।
৩. সমস্ত শরীর উত্তম রূপে ধৌত করা ( কোন অংশ যেন শুকনো না থাকে)।
১. গোসলের পূর্বে পবিত্রতা অর্জনের নিয়ত করা।
১. ‘বিসমিল্লাহ রাহমানির রাহিম’ বলে গোসল শুরু করা ।
৩. ওযুর মতো দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত ধোয়া ।
৪. প্রথমে শরীরের নাপাকি ধুয়ে ফেলা
৫. সমস্ত শরীর ও মাথা তিনবার ধৌত করা
পাঁচটি কারণে গোসল ফরজ হয়। কারণগুলো হলো-
১.জাগ্রত অথবা ঘুমন্ত অবস্থায় পুরুষদের স্বপ্নদোষ/ বীর্যপাত হলে কিংবা স্বামী-স্ত্রী সহবাস করলে।
২. নারীদের ঋতুস্রাব অথবা পিরিয়ড হলে পবিত্রতা অর্জনের জন্য গোসল ফরজ হয়।
৩. সন্তান প্রসবের পর নেফাস বা রক্তপাত বন্ধ নারীদের গোসল ফরজ হয়।
৪. জন মুসলমান মারা গেলে গোসল ফরজ হয় অর্থাৎ মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়া জীবিতদের জন্য ফরজ
৫. কোনো অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করলে তারা জন্যও পবিত্রতা অর্জনের জন্য গোসল ফরজ হয়।
চারটি কারণে গোসল সুন্নত। কারণগুলো হলো-
১. জুমার নামাজের আগে গোসল করা সুন্নত।
২. ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজের আগে গোসল করা সুন্নত।
৩. ইহরামের জন্য গোসল করা সুন্নত।
৪. হাজীদের আরাফায় অবস্থানের সময় গোসল করা সুন্নত।
আশা করি " গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি" এই বিষয়ে আপনার পরিষ্কার ধারণা জন্মেছে এখন। মুমিন মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত ইবাদতের পূর্বে সঠিক ভাবে গোসল করে পবিত্রতা অর্জন করা এবং গোসল ফরজ হলে অবশ্যই অবশ্যই ফরজ গোসল করে তারপর ইবাদত করা। আল্লাহ আমাদের সকলকে পবিত্র অবস্থায় ইবাদত করার তৌফিক দান করুক এবং আমাদের সকল ইবাদত করুক। (আমিন)
আরো পড়ুন :