ন্যাভিগেশন মেনু

গ্যাসের পাশাপাশি জ্বালানি তেলের সন্ধান মিলেছে সিলেটে

দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ ব্যারেল হারে তেল পাওয়া যাবে


১০ নম্বর অনুসন্ধান কূপে গ্যাসের পাশাপাশি জ্বালানি তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

রবিবার (১০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে সবার জন্য ‘বিরাট সুখবর’ সিলেট তামাবিল-জাফলং মহাসড়কের পাশে গোয়াইনঘাট উপজেলার আলীরগাও ইউনিয়নের বাঘের সড়ক এলাকায় অবস্থিত ১০ নম্বর অনুসন্ধান কূপে গ্যাসের পাশাপাশি দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ ব্যারেল হারে তেল পাওয়া যাবে।

গত শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) পরীক্ষা করে তেলের উপস্থিতি পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে এপিআই গ্রাভিটি ২৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি। সেলফ প্রেসারে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫ ব্যারেল তেলের প্রবাহ পাওয়া যাচ্ছে। পরীক্ষা সম্পন্ন হলে মোট তেলের মজুদ জানা যাবে।

একযোগে উৎপাদন করা হলে এই কূপটি প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর সাসটেইন করবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গড় ভারিত মূল্য হিসেবে এর মূল্য প্রায় ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যদি ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে উৎপাদন করা হয়, তাহলে কূপটি ১৫ বছরেরও বেশি সময় সাসটেইন করবে।’

এছাড়াও ২ হাজার ৪৬০ থেকে ২ হাজার ৪৭৫ মিটার গভীরে আরও একটি গ্যাস স্তর পাওয়া গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখানে পরীক্ষা করলে ২৫ থেকে ৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে জানান । আর ২ হাজার ২৯০ থেকে ২ হাজার ৩১০ মিটার গভীরেও গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।

গ্যাস ছাড়াও উপরের দিকে ১ হাজার ৩৯৭ থেকে ১ হাজার ৪৪৫ মিটার গভীরতায় আরও একটি জোন পাওয়া গেছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

এর আগেও ১৯৮৬ সালে হরিপুরে তেলের অস্থিত্ব পাওয়া গিয়েছিল উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেই কূপটির স্থায়িত্ব ছিল পাঁচ বছর। সেখানে গ্রাভিটি পাওয়া গিয়েছিল এপিআই গ্রাভিটি ২৭ ডিগ্রি। আর এবার যে তেলের মজুত পাওয়া যাচ্ছে। সেই তেল পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। এর এপিআই গ্রাভিটি ২৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি বলে জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।’

প্রতি মন্ত্রী আরও বলেন,’প্রথম দিনে দুই ঘণ্টায় ৭০ ব্যারেলের মতো তেল উত্তোলন করা হয়েছে ‘তেল উত্তোলন আমরা আপাতত বন্ধ রেখেছি। এটা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে, মোট মজুদের পরিমাণটা আমরা জানতে পারবো। পুরো বিষয়টির বিস্তারিত জানতে আরও চার থেকে পাঁচ মাস সময় লাগবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে একটি ভালো দিক হলো গ্যাস ও তেলের স্তর ভিন্ন। আগে গ্যাসের সঙ্গে কিছুটা তেল আসতো। যেটা আমরা কনডেসার হিসেবে ব্যবহার করতাম। এখন তেলটা ভিন্ন স্তর হওয়ায় সেটা আরও ভালো হবে।’

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ তেল গ্যাস ও খনিজ সম্পদ কর্পোরেশন পেট্রোবাংলা এর আগেও  গ্যাসক্ষেত্র সিলেটের কৈলাসটিলা ও হরিপুরে তেলের মজুদের সন্ধ্যান পান। দুটি জায়গাতে তেলের মজুদের পরিমান ছিল ১৩৭ মিলিয়ন ব্যারেল সন্ধান পাওয়া তেলের মধ্যে ১০৯ মিলিয়ন ব্যারেল রয়েছে সিলেটের কৈলাসটিলা গ্যাসক্ষেত্রে। আর বাকি ২৮ মিলিয়ন ব্যারেল রয়েছে হরিপুর গ্যাসক্ষেত্রে।

১৯৮৭ সালে আবিষ্কৃত হরিপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে আগেও অবশ্য তেল উত্তোলন করা হতো। তখন পাওয়া যেতো দৈনিক ৫শ ব্যারেল করে। এক পর্যায়ে তা বন্ধ হয়ে যায়।