বুধবার সন্ধ্যায় চীন আন্তর্জাতিক পরিসেবা বাণিজ্যমেলা-২০২২ বেইজিংয়ে শুরু হয়েছে। এবারের মেলার প্রতিপাদ্য হলো ‘সেবা সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়া, সবুজ উদ্ভাবনের মাধ্যমে ভবিষ্যতকে স্বাগত জানানো’। মেলা চলবে ৬ দিন।
এ বছর হচ্ছে চীন আন্তর্জাতিক পরিসেবা বাণিজ্যমেলা আয়োজনের দশম বছর। বিগত দশ বছরে চীনের পরিসেবা বাণিজ্য দ্রুতগতিতে উন্নত হয়েছে। ২০১২ সাল থেকে চীনের সেবা বাণিজ্যের আমদানি ও রপ্তানির গড় উন্নয়নের হার ৬ দশমিক ১ শতাংশ। বৈশ্বিক র্যাংকিংয়ে টানা ৮ বছর ধরে চীন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, চীন অব্যাহত উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণ করবে। এ অবস্থায় চীনের পরিসেবা বাণিজ্যের উদ্ভাবন উন্নয়ন অব্যাহতভাবে এগিয়ে নেওয়ার ভবিষ্যত্ অনেক উজ্জ্বল হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপাত্তে দেখা যায়, ১০ বছর চীনের পরিসেবা বাণিজ্যের আমদানি ও রপ্তানি দ্রুতগতিতে উন্নত হয়েছে। প্রতি বছর তার গড় উন্নয়নের পরিমাণ হচ্ছে ৬ দশমিক ১ শতাংশ। যা বিশ্বের গড় উন্নয়নের পরিমাণের চেয়ে ৩ দশমিক ১ শতাংশ বেশি। গত বছর থেকে, বিশ্বের প্রধান প্রধান অর্থনীতির মধ্যে চীনের পরিসেবা বাণিজ্য প্রথমে করোনা মহামারীর প্রভাব মোকাবিলা করেছে এবং উন্নয়নের প্রবণতা পুনরুদ্ধার হয়েছে। দেশের উপ-বাণিজ্যমন্ত্রী সেং ছিউ পিং জানান, চীনা পরিসেবার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মান অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “গত বছর চীনের সেবা খাতে আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ ৫ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ইউয়ান হয়েছে। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ দশমিক ১ শতাংশ বেশি এবং একটি নতুন ঐতিহাসিক রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এ বছরের প্রথমার্ধে, চীনের পরিসেবা বাণিজ্য দ্রুতগতিতে উন্নত হচ্ছে। এর আমদানি ও রপ্তানির মোট পরিমাণ ২ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ইউয়ান এবং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে চীনা সেবা খাতের রপ্তানির পরিমাণ ১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। ‘চীনা পরিসেবার’ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অব্যাহত উন্নত হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, প্রতি বছর চীনের সেবা খাত উন্নয়নের দিক থেকে বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে। সেবাখাত উন্মুক্তকারণের মান অব্যহতভাবে উন্নত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এখন জটিল ও পরিবর্তনশীল। তার পরও চীনের পরিসেবা বাণিজ্যের সুষ্ঠু উন্নয়নের ভিত্তি পরিবর্তন হয় নি।
ইউনিভার্সিটি অফ ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস এন্ড ইকনোমিকস-এর আন্তর্জাতিক অর্থনীতি গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান সাং পাই ছুয়ান মনে করেন, চীনা পরিসেবা বাণিজ্য উন্নয়নের ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,“চীনে প্রতি বছর এক কোটিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ব্যাচেলর ও মাস্টার ডিগ্রি পাস করেন। সীমান্তপার পরিসেবা বাণিজ্য উন্নয়নকে সমর্থন দেওয়ার খাতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, চীনের বড় বাজার এবং ১৪০ কোটি মানুষ। যা পরিসেবা বাণিজ্যের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রমের জন্য বড় বাজারের সুযোগ দেয়। এ ছাড়া চীনের সেবা শিল্পের আকার অব্যাহত সম্প্রসারিত হচ্ছে।”
চীন আন্তর্জাতিক অর্থনীতি আদানপ্রদান কেন্দ্রের প্রধান গবেষক চাং ইয়ান সেং জানান, ভবিষ্যতে সেবা শিল্পের উন্মুক্তকরণ আরো এগিয়ে নেওয়া হবে, পরিসেবা বাণিজ্যের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতা উন্নত করতে হবে এবং পরিসেবা বাণিজ্যের উচ্চ গুনগত উন্নয়ন জোরদার করতে হবে।
পরিসেবা বাণিজ্যের উদ্ভাবনী উন্মুক্তকরণ উল্লেখ করে সাং পাই ছুয়ান জোর দিয়ে বলেন, বর্তমানে, ডিজিটাল বাণিজ্য ইতোমধ্যে আধুনিক সীমান্তপার পরিসেবা বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খাতে পরিণত হয়েছে। চীনের ডিজিটাল বাণিজ্যের উন্নয়ন ইতোমধ্যে বিশ্বের প্রধান সারিতে পৌঁছে গেছে। এর উন্নয়নের প্রবণতা অব্যহতভাবে বজায় রাখা উচিত। (সূত্র: সিএমজি)
