ন্যাভিগেশন মেনু

নিয়ম মেনে চললে কিডনিতে পাথর জমলেও চিন্তা নেই


কিডনিতে  পাথর জমলেও ‘নো টেনশন’। প্রথম থেকেই কয়েকটি বিষয়ে নজরদারি। একটু নিয়ম মেনে চলা। ব্যস, তাহলেই আপনি হবেন ‘স্টোনমুক্ত’, জানালেন কলকাতার  ইউরোলজিস্ট ডা. অমিত ঘোষ।

কিডনিতে পাথর জমার সমস্যা বহুল-পরিচিত। অথচ নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চললে, পাথুরে পথও হতে পারে মসৃণ। অতএব, বৃক্ককে ‘স্টোনমুক্ত’ করে, তার স্বাস্থ্য ফেরাতে সচেতন হোন এখনই।

কিডনিতে পাথর জমলে বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। কারও প্রবল ব্যথা হয়, যা ক্রমশ কোমর থেকে প্রস্রাবের জায়গার দিকে এগোয়। কারও মূত্রের সঙ্গে রক্ত বেরোয় আবার কারও ইনফেকশন হয়। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রথমে বোঝাই যায় না। সোনোগ্রাফি, এক্স রে করে ধরা হয়।

লক্ষণহীনতার অর্থ, পাথর ভিতরে বাড়ছে। বড় পাথরে সাধারণত ব্যথা হয় না। কিন্তু এগুলিই কিডনির পক্ষে বিপজ্জনক। কিডনি ‘ব্লক’ করে নষ্টও করে দিতে পারে।

ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার (দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য), ইউরিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার (বাদাম, কফি, বেকন, টার্কি প্রভৃতি) এবং অক্সালেটজাতীয় খাবার বেশি খেলে কিডনিতে স্টোন হওয়ার প্রবণতা বাড়ে।

জল যত বেশি খাবেন, ছোট পাথর তত মূত্রের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। যে দিনে ১ গ্লাস জল খায় আর যে ২৫ গ্লাস জল খায়, দু’জনের মধ্যে দ্বিতীয়জনের ‘কোয়ান্টাম অফ ইউরিন প্রোডাকশন’ বেশি। ফলে মূত্রের তোড়ও বেশি। তাতেই ছোট স্টোন (১-২ মিলিমিটার) শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে। তা আর বাড়তে পারবে না।

খুব ছোট স্টোন হলে জল আর কিছু আলফা ব্লকার ওষুধ খেলে, বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু সামান্য বড় পাথর (১ সেন্টিমিটারের নিচে) হলে, ইএসডব্লুএল (এক্সট্রা কর্পোরিয়াল শক ওয়েভ লিথোট্রিপ্সি) করে বের করে দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে রোগীকে অজ্ঞান করতে হয় না।

শায়িত অবস্থায় তাঁর উপর একটি মেশিন থেকে ওয়েভ বিম চালিয়ে দেওয়া হয়। পাথর গুঁড়ো হয়ে বেরিয়ে যায়। ১ সেন্টিমিটারের বেশি বড় পাথর হলে (৩-৪ সেন্টিমিটার), বের করতে ‘কি হোল সার্জারি’ করতে হবে। নাম পিসিএনএল (পারকিউটানিয়াস নেফ্রোলিথোটমি)। রোগীকে অজ্ঞান করে, পিঠে ছোট একটা ফুটো করতে হয়। তার ভিতর দিয়ে টেলিস্কোপের মতো ছোট যন্ত্র ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কিডনির মধ্যে গিয়ে সেটি পাথরকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেয়। তারপর ওয়াশ করে, বের করা হয়।

কিন্তু যদি পাথর ৭ কিংবা ৮ মিলিমিটারের আকারের হয় এবং কোনওভাবে ইউরেটারের মধ্যে ঢুকে যায়, সেক্ষেত্রে ইউরিটেরো রেনোস্কোপি করতে হবে। অজ্ঞান করে, রোগীর প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে একটা টেলিস্কোপ ঢুকিয়ে দেওয়া হবে যা ইউরেটারের মধ্যে ঢুকে পাথরটিকে চূর্ণ করবে। এরই অ্যাডভান্সড স্টেজ হল আরআইআরএস।

রেট্রোগ্রেড ইন্ট্রারেনাল সার্জারি। যদি কেউ লিথোট্রিপ্সি করতে না চান, তখন একটি টেলিস্কোপকে পুরো কিডনি পর্যন্ত ঢুকিয়ে, পাথরকে গুঁড়ো করা যায়। তবে কার ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি প্রযোজ্য হবে, তা চিকিৎসকই দেখে বলে দেবেন।

এস এস