ন্যাভিগেশন মেনু

বিএনপির অপরাজনীতি থেকে দেশ রক্ষায় সবাইকে কঠোর হাতে দমন করতে হবে : তথ্যমন্ত্রী


তথ্যমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-৭ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, একদিকে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জন্য রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, রেললাইন বানাচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই দিচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি নির্বাচন বর্জনের নামে দেশের সম্পদ নষ্ট করে দিচ্ছে। বাসে-ট্রেনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করছে, আর মানুষ পোড়াচ্ছে । রাজনীতির নামে এমন অপরাজনীতি দুনিয়ার কোথাও নেই। এগুলোকে আমি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলে অবিহিত করি। এদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে সবাইকে কঠোর হাতে তাদের দমন করতে হবে।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা ইউনিয়নের গোয়ালপুরা বাজার, কোদালা বাজার, চা বাগান এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে গণসংযোগকালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তথ্যমন্ত্রী কোদালা চা বাগানের শ্রমিক, গ্রামের নারীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করেন। এরপর তিনি রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা ও বোয়ালখালীর শ্রীপুর-খরন্দ্বীপ ইউনিয়নে গণসংযোগ করেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে গিয়ে ফিলিস্তিনে বর্বর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আমি সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রতিদিন এর বিরুদ্ধে কথা বলেছি। বিএনপি-জামায়াতের ওপর আল্লাহ নারাজ হয়ে গেছেন। কারণ তারা ফিলিস্তিনের এই হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেনি। তাদের নেতা তারেক রহমান কথা বলতে নিষেধ করেছে।

তিনি বলেন, জামায়াত ইসলামী স্লোগান দেয়, ‘আল্লাহর আইন চাই, সৎ লোকের শাসন চাই’। ওরা বলে, ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবে। আজকে ফিলিস্তিনে মুসলমানদের পাখি শিকারের মতো হত্যা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ২০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ নারী এবং শিশু। বিএনপি-জামায়াত আজ পর্যন্ত একটি শব্দ ইসরাইলের বিরুদ্ধে উচ্চারণ করেনি। কারণ একটি বড় রাষ্ট্র নাখোশ হতে পারে। তারা আজকে ইসরাইলের দোসর ও মোনাফেক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছ। সুতরাং, এদের চিনে রাখতে হবে। এরা নানা বিভ্রান্তি ছড়ায়।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার আগে বাংলাদেশ ছিল ৬০তম অর্থনীতির দেশ। সেখান থেকে আমরা ২৭টি দেশকে পেছনে ফেলে এখন পৃথিবীর ৩৩তম অর্থনীতির দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। দেশে যদি আজকের এই উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হয় তাহলে আমি আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। আজকে এই পরিবর্তন হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

নিজের নির্বাচনী এলাকার মানুষের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজের পর মানুষের উপকারের মাধ্যমে আমার দিনের কাজ শুরু হয়। আমি কোন মানুষের অপকার করিনি, কারো অপকার করা আমার ধর্ম নয়। আপনারা জানেন রাঙ্গুনিয়ার কোন একটা পাগল ও ভিক্ষুক যদি আমার গাড়ির সামনে হাত দেখায়, আমার গাড়ি দাঁড়ায়। আমি থামিয়ে কথা বলি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে মন্ত্রিসভায় সিনিয়র পজিশনে বসিয়েছেন, দলের মধ্যে ও সিনিয়র পজিশনে বসিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করার চেষ্টা করেছি। আপনাদের সন্তান হিসেবে আমি চেষ্টা করেছি আপনাদের মুখ উজ্জ্বল করার। জাতীয় পর্যায়ে আমার অনেক দায়িত্ব, এরপরও একজন চেয়ারম্যান যেভাবে এলাকায় সময় দেন, আমি সেই ভাবে সময় দিই।

তিনি বলেন, কর্ণফুলী নদীসহ রাঙ্গুনিয়ার অন্যান্য নদীর ভাঙ্গন রোধে ইতোমধ্যে ৫০০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। আরও ১০০ কোটি টাকার কাজ হবে। অনেক জেলায়ও এত উন্নয়ন কাজ হয়নি। রাঙ্গুনিয়ার ৮ হাজার ছেলে-মেয়ের চাকরি হয়েছে আমার হাত দিয়ে। চাকরির সুপারিশ করার সময় আমি কখনো ভাবিনি, কে কোন দল করে। আমি সব মানুষের এমপি হওয়ার চেষ্টা করেছি।

আগামী ৭ জানুয়ারি আত্মীয়-স্বজন সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. হাছান বলেন, অনেকে বিএনপি ঘরানার মানুষ আছে, আমি জানি। তারাও অনেকে আমাকে ভোট দেয়। রাঙ্গুনিয়ায় আগেও এমপি, মন্ত্রী ছিল। কেউ একটি মসজিদ ভবন বানিয়েছে দেখিয়ে দিতে পারবেন না। মসজিদের মধ্যে কিছু টাকা দিয়েছে বা এক-দুই টন টিআর দিয়েছে বলতে পারবে?

তিনি বলেন, আমার পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে রাঙ্গুনিয়ায় ২৪টি নতুন মসজিদ বিল্ডিং করে দিয়েছি। রাঙ্গুনিয়ার প্রতিটি মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেয়েছে। গত ১৫ বছর সবার জন্য আমার দরজা খোলা রেখেছি। পাঁচ বছর পর আমি আপনাদের দুয়ারে এসেছি, আপনারা দয়া করে আপনাদের দুয়ারটি আমার জন্য খুলে দেবেন।