ন্যাভিগেশন মেনু

মুক্তিযোদ্ধা ২ লাখ ১০ হাজার, রাজাকার ১০ হাজার ৭৮৯


বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪৯ বছরে এসে  স্বাধীনতাবিরোধী যারা পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর সব ধরণের অপকর্মকর্মের সহযোগিতাকারী সেই রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

আজ রবিবার সকালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক পর্যায়ে ১০ হাজার ৭৮৯ রাজাকারের তালিকা ঘোষণা করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি তালিকাও প্রকাশ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী জানান, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ১০ হাজারের বেশি নয়। পর্যায়ক্রমে ঘাতক বাহিনীর সদস্যদের তালিকাও প্রকাশ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী রাজাকারদের নাম, পরিচয় ও ভূমিকা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানানোর জন্যই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য রাজাকারদের নামও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির তথ্যানুযায়ী, একাত্তরের মে মাসে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালি নিধনে পাকিস্তানি সেনাদের সহায়তা দিতে গঠিত হয় রাজাকার বাহিনী।

 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে সর্বপ্রথম দেশের দক্ষিণ জনপদ জেলা খুলনায় খান জাহান আলী রোডের একটি আনসার ক্যাম্পে ৯৬ জন পাকিস্তানপন্থি কর্মী নিয়ে রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়।

পরে দেশের অন্যান্য অংশেও গড়ে তোলা হয় এই বাহিনী। প্রথম পর্যায়ে রাজাকার বাহিনী ছিল এলাকার শান্তি কমিটির নেতৃত্বাধীন। একাত্তরের ১ জুন পাকিস্তানের জেনারেল টিক্কা খান পূর্ব পাকিস্তান রাজাকার অর্ডিন্যান্স জারি করে আনসার বাহিনীকে রাজাকার বাহিনীতে রূপান্তরিত করেন।

তবে এর নেতৃত্ব ছিল পাকিস্থানপন্থি স্থানীয় নেতাদের হাতে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ৭ সেপ্টেম্বর জারি করা এক অধ্যাদেশবলে রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের সেনাবাহিনীর সদস্যরূপে স্বীকৃতি দেয়। এর সংখ্যা ছিল অন্তত ৫০ হাজার।

এ ছাড়াও পাকিস্তান সরকার স্বাধীনতাকামী বাঙালি নিধনে একইভাবে আলবদর ও আলশামস বাহিনীও গঠন করে।

তখন গ্রামগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বারদের রাজাকার বাহিনীতে লোক সংগ্রহ করতে বলা হয়েছিল।

জামাতে ইসলামি, নেজামে ইসলাম, মুসলিম লিগ, জামাতে ওলামাসহ পাকিস্তানের সমর্থক অনেক দলের নেতাকর্মীরা রাজাকারসহ অন্যান্য বাহিনীতে যোগ দেয়।

তবে স্বাধীনতাবিরোধী এই বাহিনীগুলো সাধারণ অর্থে রাজাকার হিসেবেই পরিচিতি পায়। স্বাধীনতার পর থেকেই এসব বাহিনীর তালিকা প্রণয়ন ও প্রকাশের দাবি ওঠে।

অবশেষে স্বাধীনতার ৪৯ বছরে এসে সেই দাবি বাস্তবায়নের পথে সরকারিভাবে কিছুটা হলেও অগ্রগতি হয়েছে। তালিকা প্রকাশের উদ্যোগ শুরু হয় ২০১৪ সালে। প্রকাশিতব্য তালিকায় পাকিস্তান সরকারের বেতনভোগী ৩৯৯ জনের নামও থাকছে।

তিনি জানান, ওয়েবসাইটে তালিকাটি প্রকাশ করা হবে। বর্তমানে শুধু রাজাকারদের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করা হচ্ছে। তারা কে কোন পেশায় রয়েছে তার বর্তমান তথ্য সরকারের কাছে নেই। তবে তা সংগ্রহ করা হবে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে আজ প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ তালিকাটি দেখতে নিচে ক্লিক করুন-

রাজাকারের তালিকা

এস এস