ন্যাভিগেশন মেনু

স্থলসীমান্ত বন্ধ: দেশে ফিরতে পারেননি কয়েক হাজার ভারতীয়


দেশের রাজশাহীসহ উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় কয়েক হাজার ভারতীয় নাগরিক আটকেপড়ে আছেন।বিশেষ করে স্থলসীমান্ত চালু না অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

অনেকেই নানা সমস্যায় ভুগছেন। তারা ভারতে লকডাউন শুরুর আগেই বাংলাদেশে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। স্থলপথে ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় তারা গত চার মাসের বেশি সময় বাংলাদেশের রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় আটকে রয়েছেন। 

অধিকাংশই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। গত ৬ জুন থেকে ভারত-বাংলাদেশের অধিকাংশ স্থলবন্দর খুলে দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবে চললেও লোক চলাচল এখনও বন্ধ রাখা হয়েছে। মালদা জেলার কালিয়াচক থানার গোলাপগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সমেনা বিবি। 

মাসিমার আকস্মিক মৃত্যুর খবর পেয়ে গত ৭ মার্চ এসেছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটের আত্মীয় বাড়িতে। আকস্মিকভাবে ইমিগ্রেশন পথ বন্ধ হওয়ায় সমেনা বিবি আর বাড়ি ফিরতে পারেননি। স্বামী, ছেলেমেয়ে সংসার রেখে আসা সমেনা বিবির দিন যেন কাটছে না। 

সমেনার উদ্বেগ, দেশে ফিরতে না পারলে স্বামী আরেকটা বিয়ে করার হুমকি দিয়েছেন। শিবগঞ্জ এলাকাতেই তিন শতাধিক ভারতীয় নাগরিক আটকে আছেন।

মালদা জেলার বৈঞ্চবনগর থানার গুলজারনগর এলাকার আবদুর রাজ্জাক এসেছিলেন বাংলাদেশের ভোলাহাটের এক আত্মীয় বাড়িতে। ভিসার মেয়াদ আগেই শেষ হয়েছে। সীমান্ত খোলার অপেক্ষায় কেটে গেছে চার মাস।

গত ৮ মার্চ পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছিলেন নবম শ্রেণির ছাত্রী নুর নেসা। মালদা জেলার সূর্যাপুরে বাড়ি। দেশে পিসিমা মারা গেলেও যেতে পারেনি।এখানে গরিব আত্মীয় বাড়িতে দুবেলা খাবার জুটছে না। মালদার সুজাপুর চামাগ্রাম এলাকায় আটকেপড়া আহসান আলীর অবস্থা আরও খারাপ। দিনমজুরি করে সংসার চালান। 

চার মাস বাংলাদেশে আটকে থাকায় দেশে ছেলেমেয়েরা উপোস করে থাকছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী, চারঘাট, নওগাঁ, নাটোর এলাকায় প্রায় তিন হাজারের বেশি ভারতীয় নাগরিক আটকে রয়েছেন। 

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় প্রায় সাত হাজারের বেশি ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে এসে আর ফিরতে পারেননি। ঢাকায় হাইকমিশন থেকে বলা হয়েছে- করোনার কারণে আটকেপড়াদের দেশে ফেরাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘বন্দে ভারত মিশন’ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। 

প্রথমে বাংলাদেশ থেকে শুধু বিমানযোগে আটকেপড়া ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরানো হলেও এখন দুটি স্থলসীমান্ত পথ হরিদাসপুর পেট্টাপোল-বেনাপোল ও ফুলবাড়ি-বাংলাবন্ধা (পঞ্চগড়) পথে প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে। 

তবে ভারতীয় হাইকমিশনের ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট লিংক দেয়া হয়েছে। এই লিংকে আটকেপড়া ভারতীয়রা নিজেদের নাম-ঠিকানা, ফোন নম্বর ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেসন করতে পারবেন। ভারতে প্রত্যাবর্তনের জন্য শুধু নিবন্ধিতরাই বিবেচিত হবেন।

দ্রুত তাদের দেশে ফেরানোর দিনক্ষণ ঘোষণা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। ভারতে ফেরার পর তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।

এস এস