ন্যাভিগেশন মেনু

অমিয় দত্ত ভৌমিক

আউটপুট এডিটর
অমিয় দত্ত ভৌমিক
Mar 09, 2021

মার্চ ১৯৭১

মওলানা ভাসানীর স্বাধীনতা আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ, ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন

মওলানা ভাসানীর স্বাধীনতা আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ, ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন

৯ মার্চ ১৯৭১। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মিছিল নগরীতে পরিণত হয় ঢাকা। ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের মিছিলে মিছিল উত্তাল ঢাকার রাজপথ।সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত রাজনৈতিক প্রস্তাবে ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় অনুষ্ঠিত ছাত্রলীগ ও ডাকসুর নেতৃত্বে গঠিত ‘স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ’ এর ছাত্রসভায় গৃহীত ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ন্যাপ প্রধান মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মধ্যে সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।বিকেলে উত্তাল ঢাকার ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত বিশাল জনসভায় বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী তার চিরাচরিত দরাজ কণ্ঠে ঘোষণা দেন, ‘হে বাঙালিরা, আপনারা মুজিবের উপর বিশ্বাস রাখেন, তাকে খামোকা কেউ অবিশ্বাস করবেন না, কারণ মুজিবকে আমি ভালোভাবে চিনি।’তার একথা শুনে উপস্থিত জনতার করতালি আশপাশ প্রকম্পিত করে তুলে।তিনি বললেন, ‘ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছে।’ তিনি আরও বললেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে আমরা স্বাধীনতা পেয়ে গেলে ১৯৪০-এর লাহোর প্রস্তাবের পূর্ণ বাস্তবায়ন হবে।’ মওলানা ভাসানী পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের উদ্দেশে বলেন, ‘অনেক হয়েছে আর নয়, তিক্ততা বাড়িয়ে লাভ নেই। “লা-কুম দিনিকুম অলিয়া দ্বীন” অর্থাৎ তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার; পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা স্বীকার করে নাও। সাড়ে সাত কোটি বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার সংগ্রামকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না।’জনসভায় মজলুম জননেতা আরও বলেন, ‘মুজিবের নির্দেশ মতো আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে কিছু না হলে আমি শেখ মুজিবের সঙ্গে মিলে ১৯৫২ সালের মতো তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলবো।’এদিন পূর্ব পাকিস্তানের কম্যুনিস্ট পার্টি স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়। তাদের প্রচারপত্রে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের জনগণ আজ গণতন্ত্র ও নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে এখানে পৃথক ও স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র কায়েম করিতে বদ্ধপরিকর।’আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ঘোষিত আন্দোলনের কর্মসূচি অনুযায়ি সচিবালয়-সহ সারাদেশে সকল সরকারি ও আধাসরকারি অফিস, হাইকোর্ট ও জেলাকোর্ট প্রভৃতিতে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। বঙ্গবন্ধু যেসব সরকারি অফিস খুলে রাখার...


Mar 08, 2021

মার্চ ১৯৭১

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ দিয়ে ঢাকা বেতারের সম্প্রচার শুরু, পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ-এর নাম পরিবর্তন

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ দিয়ে ঢাকা বেতারের সম্প্রচার শুরু, পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ-এর নাম পরিবর্তন

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর ৮ মার্চ থেকে শুরু হয় সংগ্রামে নতুন পর্যায়। সারাদেশে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন আগের মতোই চলতে থাকে।এখন থেকে প্রতিদিন সংগ্রামী জনতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের নির্দেশে কাজ করতে থাকে। হাইকোর্টের বিচারপতি থেকে সাধারণ মানুষের সকল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছিলো বঙ্গবন্ধুর একক নেতৃত্বে।অন্যদিকে পাকিস্তানী সৈন্যদের অবস্থান ক্যান্টনমেন্টের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।৮ মার্চ সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা বেতার কেন্দ্র থেকে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ দিয়ে সম্প্রচার কাজ শুরু হয়। প্রদেশের অন্যান্য বেতার কেন্দ্র থেকেও তা রিলে করা হয়।আজকের দিনে 'পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ'-এর নাম পরিবর্তন করে শুধু 'ছাত্রলীগ' রাখা হয়।.ছাত্রলীগের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ এবং ডাকসুর সহ-সভাপতি আ. স. ম. আব্দুর রব ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কুদ্দুস মাখন এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, বাংলার বর্তমান মুক্তি আন্দোলনকে ‘স্বাধীনতার আন্দোলন’ ঘোষণা করে স্বাধীন বাংলার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক সনসভায় যে প্রত্যক্ষ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন আমরা তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য বাংলার সংগ্রামী জনতার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ এক বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঘোষিত নির্দেশের ব্যাখা দেন। এতে বলা হয়, ব্যাংকগুলো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ব্যাংকগুলো বাংলাদেশের ভেতরে নগদ জমা, বেতন ও মজুরী দেওয়া, এক হাজার টাকা পর্যন্ত উত্তোলন এবং আন্তঃব্যাংক ক্লিয়ারেন্স ও নগদ লেনদেন করতে পারবে। তাছাড়া, বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় বিভাগগুলো খোলা থাকবে। সার সরবরাহ ও পাওয়ার পাম্পের ডিজেল সরবরাহ অব্যাহত থাকবে। পোস্ট অফিস সেভিংস ব্যাংক খোলা থাকবে। পানি ও গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত থাকবে।আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ পৃথক আরেকটি বিবৃতিতে সামরিক শাসন কর্তৃপক্ষের দেওয়া প্রেসনোটের প্রতিবাদ জানান। প্রেসনোট মাত্র ১৭২ জন নিহত, ৩৫৮ জন আহত হয়েছে বলে জানানো হয়। তিনি এক বিবৃতিতে প্রেসনোটকে মিথ্যাচার বলে বাতিল করে দেন। তিনি বলেন, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ক্ষেত্রেই গুলিবর্ষণ করা হয়েছে বলে কথিত বক্তব্য সত্যের অপলাপ। নিজেদের অধিকারের স্বপক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভরত নিরস্ত্র বেসামরিক অধিবাসীদের ওপরই...


Mar 06, 2021

মার্চ ১৯৭১

স্বাধীনতাকামী জনতার দৃপ্ত পদচারণায় প্রকম্পিত রাজপথ, অধিবেশন ডাকেন ইয়াহিয়া

স্বাধীনতাকামী জনতার দৃপ্ত পদচারণায় প্রকম্পিত রাজপথ, অধিবেশন ডাকেন ইয়াহিয়া

১৯৭১ সালের ৬ মার্চ ছিলো বঙ্গবন্ধুর রেসকোর্স ময়দানে ঐতিহাসিক জনসভার আগের দিন। এদিন সকাল ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটক ভেঙ্গে ৩৪১ জন কয়েদি পালিয়ে যায়। পালানোর সময় পুলিশের গুলিতে ৭ জন কয়েদি নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়। ঢাকার রাজপথ এদিনও স্বাধীনতাকামী জনতার দৃপ্ত পদচারণায় প্রকম্পিত। বঙ্গবন্ধুর জনসভায় যোগ দিতে সেদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ ঢাকার দিকে আসতে থাকেন।ঢাকায় ষষ্ঠ দিনের মতো হরতাল পালনকালে সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে আসে। সশস্ত্র-বাহিনীর ট্রাক আর অ্যাম্বুলেন্স ঘন ঘন যাতায়াত করছিলো। কিন্তু বন্ধ ছিলোনা মুক্তিকামী বাঙালির মিছিল, মিটিং। স্লোগান উঠেছিলো ‘জয় সর্বহারার জয়, জয় বিদ্রোহী বাংলার জয়, জয় নিপীড়িত মানুষের জয়’। একটি স্লোগান সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হতে থাকলো ‘ভুট্টোর মুখে লাথি মারো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো।’বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালন শেষে তারই নির্দেশে বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংক এবং যেসব বেসরকারি অফিসে ইতোপূর্বে বেতন দেওয়া হয়নি সেসব অফিস বেতন দেওয়ার জন্য খোলা থাকে।পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান দুপুরে এক বেতার ভাষণে ২৫ মার্চ জাতীয় পরষদের অধিবেশন আহ্বান করেন। ভাষণে তিনি বলেন, যাই ঘটুক না কেন, যতোদিন পর্যন্ত পাকিস্তান সেনাবাহিনী আমার হুকুমে রয়েছে এবং আমি পাকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধান রয়েছি ততোদিন পর্যন্ত আমি পূর্ণাঙ্গ ও নিরঙ্কুশভাবে পাকিস্তানের সংহতিরে নিশ্চয়তা বিধান করবো।প্রেসিডেন্টের বেতার ভাষণের অব্যবহিত পরেই বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক শাখার ওয়ার্কিং কমিটির এক যুক্ত জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী এই রুদ্ধদ্বার বৈঠকে প্রেসিডেন্টের বেতার ভাষণের আলোকে দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।ইয়াহিয়া খানের বেতার ভাষণের পরপরই ঢাকা ও নারায়নগঞ্জে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেশ কয়েকটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। পল্টনে হয় অলি আহামদের জনসভা আর মোজাফফর আহমদের সভাপতিত্বে গণসমাবেশ।বিকেলে মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সমাবেশে নারীরা লাঠিসোঁটা ও কালো পতাকা নিয়ে উপস্থিত হন। একই সময় বায়তুল মোকাররম মসজিদ প্রাঙ্গণে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে সাংবাদিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের উদ্যোগে বিরাট মশাল মিছিল বের হয়। এ ছাড়া বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি, ছাত্র ইউনিয়ন (মতিয়া), গণশিল্পীগোষ্ঠী, উদীচী...


Mar 05, 2021

মার্চ ১৯৭১

গায়েবানা জানাজা, ‘বাঁশের লাঠি তৈরি কর-পূর্ব বাংলা স্বাধীন কর’ শ্লোগানে মিছিল

গায়েবানা জানাজা, ‘বাঁশের লাঠি তৈরি কর-পূর্ব বাংলা স্বাধীন কর’ শ্লোগানে মিছিল

৫ মার্চ, ১৯৭১। ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন নিহতদের স্মরণে গায়েবানা জানাজা পড়েন। ছাত্রলীগ ও ডাকসুর উদ্যোগে সর্বস্তরের মানুষ বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে থেকে লাঠি হাতে বিক্ষোভ মিছিল করে। ‘বাঁশের লাঠি তৈরি কর-পূর্ব বাংলা স্বাধীন কর’ শ্লোগান নিয়ে সর্বস্তরের মানুষের বিশাল লাঠি মিছিলে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে রাজপথ। মিছিলে একাত্মতা ঘোষণা করে ড. আহমদ শরীফের নেতৃত্বে শহীদ মিনারে শপথ নেন ঢাকার লেখক-শিল্পীরা। তাছাড়া, লাহোরে দেশের পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক আন্দোলনে নিহত শহীদদের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং সঙ্কটময় মুহূর্তে দেশের সংহতির জন্য বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।পাকিস্তান লেখক সংঘ, পূর্ব পাকিস্তান সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি এদিন বিক্ষোভ মিছিল করে।পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা নিরস্ত্র সাধারণ মানুষকে হত্যার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে একটি সমাবেশ করে। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্যরা গণআন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে। তারা সংবাদপত্রের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কামাল লোহানী বিকেল তিনটায় প্রেসক্লাব চত্বরে সমাবেশের ডাক দেয়। পরে প্রেসক্লাব থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বায়তুল মোকাররমে গিয়ে গণসমাবেশে রূপ নেয়।বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে হরতালের পর ব্যাংক খোলা থাকে। মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজের পর শহীদানের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতিবাদ সভা ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।৫ম দিনের মতো হরতাল পালনকালে সশস্ত্রবাহিনী সদস্যদের গুলিতে টঙ্গী শিল্প এলাকায় ৪ জন শ্রমিক শহীদ হন এবং ২৫ জন শ্রমিক আহত হন। এ সংবাদে ঢাকায় জনসাধারণের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।আওয়ামী লীগের এই প্রতিক্রিয়াকে পাকিস্তান পিপলস পার্টির পক্ষ থেকে অযৌক্তিক বলে অভিহিত করা হয়। এদিন সন্ধ্যায় সরকারিভাবে ঘোষণা দিয়ে কার্ফ্যু তুলে নিয়ে পাকিস্তানি সৈন্য ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তবে তখন পরিস্থিতি ছিলো থমথমে।পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টো রাওয়ালপিন্ডির প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে ৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনা করেন। বৈঠক শেষে পার্টির মুখপাত্র আবদুল হাফিজ পীরজাদা মন্তব্য করেন, জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত রাখার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া যেভাই বিচার করা হোক না কেন,...


Mar 04, 2021

মার্চ ১৯৭১

রেডিও পাকিস্তান, ঢাকা’র নাম বদলে রাখা হয় ‘ঢাকা বেতারকেন্দ্র’

রেডিও পাকিস্তান, ঢাকা’র নাম বদলে রাখা হয় ‘ঢাকা বেতারকেন্দ্র’

বিক্ষোভে টালমাটাল ছিল ৪ মার্চ ১৯৭১। এদিন ছিল দেশব্যাপী লাগাতার হরতালের তৃতীয় দিন। তবে এই দিন হরতাল ছিল ৮ ঘণ্টার। এ দিন সামরিক জান্তার সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করে রাজপথে নেমে আসে হাজার হাজার মানুষ।দিন যতোই যাচ্ছিলো এক দফা দাবি অর্থাৎ স্বাধীনতার আকাঙ্খার তীব্রতা ততোই বাড়ছিলো। দ্রোহ-ক্ষোভে বঞ্চিত শোষিত বাঙালি তখন ক্রমেই ফুঁসে উঠছিলো ঔপনিবেশিক পাকিস্তানি শাসক-শোষকদের বিরুদ্ধে।এদিন ‘রেডিও পাকিস্তান, ঢাকা’র নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘ঢাকা বেতারকেন্দ্র’। আর সেই ঘটনা চলমান আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। যা আমাদের মুক্তির পথকে এগিয়ে নেয়।একাত্তরের উত্তাল এই দিনটিতে সারাদেশের সকল পাড়া, গ্রাম, মহল্লায় সংগ্রাম কমিটির পাশাপাশি শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি এবং স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠনের আহ্বান জানানো হয়। এর উদ্যোক্তা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হলের (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ক্যান্টিনে স্থাপন করা হয় ছাত্রদের যোগাযোগ কেন্দ্র।এদিকে আন্দোলনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা দফায় দফায় বৈঠকে বসেন ৭ মার্চের জনসভা সফল করার জন্য। তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) চলতে থাকে জনসভার প্রস্তুতি।এই দিন খুলনায় বাঙালি-অবাঙালিদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। হরতাল চলাকালে খুলনায় সেনাবাহিনীর গুলিতে ৬ জন শহীদ হন। চট্টগ্রামে আজ নিয়ে দু’দিনে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়ায় ১২১ জনে।ঢাকায় আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় হরতালে দমন পীড়নের নিন্দা জানানো হয়। লাগাতার হরতালের এই দিনে ঢাকাসহ সারাদেশ অচল হয়ে পড়ে।পূর্ব পাকিস্তান মহিলা পরিষদের নেত্রী কবি সুফিয়া কামাল ও মালেকা বেগম যৌথ বিবৃতিতে ৬ মার্চ বায়তুল মোকাররম এলাকায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।পাশাপাশি ঢাকাসহ সারাদেশেই গঠন হতে থাকে সংগ্রাম কমিটি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের যুব ও ছাত্র নেতারা গোপনে নানা স্থান থেকে অস্ত্র সংগ্রহ অভিযান চালাতে থাকেন বেশ জোরেশোরেই।তবে বসে ছিলো না পাকিস্তানি বাহিনীও। কার্ফু দিয়েও সামরিক জান্তারা সাহসী বীর বাঙালিদের ঘরে আটকে রাখতে পারছিল না। তাই গোপনে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে বাঙালি নিধনের পরিকল্পনা করতে থাকে। শুধু অপেক্ষা করতে থাকে ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কী বলেন তা শোনার জন্য।একাত্তরের এই দিনে অর্থাৎ ৪ মার্চ, ১৯৭১...


Mar 03, 2021

মার্চ ১৯৭১

ইশতেহার ও বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করা হয়

ইশতেহার ও বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক ঘোষণা করা হয়

আজ ঐতিহাসিক ৩ মার্চ। ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এইদিনে স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছেলো। ইশতেহারে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়। তাছড়া, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।৩ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ঢাকায় পার্লামেন্টারি পার্টিগুলোর নেতাদের সঙ্গে এক গোলটেবিল বৈঠক আহ্বান করেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সে প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন।এ দিন বিকেলে তৎকালীন পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের ডাকা ছাত্র জনসভায় উপস্থিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ সভায় বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন।সেদিনই সভা থেকে স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের চার নেতা নূরে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, আ স ম আবদুর রব ও আবদুল কুদ্দুস মাখন স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার শপথ গ্রহণ করেন।এদিনের জনসভায় বঙ্গবন্ধু অহিংস-অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়ে অবিলম্বে সামরিক আইন প্রত্যাহার, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান।ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ বঙ্গবন্ধুর সামনে পাঠ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার। প্রস্তাবটি লিখেছিলেন ছাত্রলীগের তৎকালীন দপ্তর সম্পাদক এম এ রশীদ।ইশতেহারে বলা হয়- ‘৫৪ হাজার ৫০৬ বর্গ মাইল বিস্তৃত ভৌগোলিক এলাকার সাত কোটি মানুষের জন্য আবাসভূমি হিসেবে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের নাম বাংলাদেশ।বাংলাদেশ গঠন করে নিম্নলিখিত তিনটি লক্ষ্য অর্জন করতে হবে:১) স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে পৃথিবীর বুকে একটি বলিষ্ঠ বাঙালি জাতি সৃষ্টি ও বাঙালির ভাষা, সাহিত্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি বিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে।২) স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে অঞ্চলে অঞ্চলে, ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে বৈষম্য নিরসনকল্পে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি চালু করে কৃষক শ্রমিক রাজনীতি কায়েম করতে হবে।৩) স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠন করে ব্যক্তি, বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাসহ নির্ভেজাল গণতন্ত্র কায়েম করতে হবে।এছাড়া বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলন পরিচালনার জন্য গ্রহণ করতে হবে নিম্নলিখিত কর্মপন্থা:১) বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম, মহল্লা, থানা, মহকুমা, শহর, জেলায় `স্বাধীনতা সংগ্রাম কমিটি’ গঠন করতে...


Mar 02, 2021

মার্চ ১৯৭১

আনুষ্ঠানিকভাবে পাস হয় স্বাধীনতার প্রস্তাব, উড়ানো হয় বাংলাদেশের পতাকা

আনুষ্ঠানিকভাবে পাস হয় স্বাধীনতার প্রস্তাব, উড়ানো হয় বাংলাদেশের পতাকা

পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষন-নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে একাত্তরের ২ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে পাস করা হয় স্বাধীনতার প্রস্তাব। এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় উত্তোলন করা হয়েছিল বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা।পতাকাটি এঁকেছিলেন ছাত্রনেতা শিবনারায়ণ দাশ। এই পতাকা তৈরির জন্য কাপড় দিয়েছিলেন ঢাকা নিউমার্কেটের অ্যাপোলো টেইলার্সের মালিক বজলুর রহমান লস্কর। তিনি কাঙ্খিত পতাকা তৈরি করে দেন বিনা পারিশ্রমিকে। সেই পতাকা সভামঞ্চে নিয়ে আসেন ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতা জাহিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের তৎকালীন ভিপি আসম আব্দুর রবসহ অন্যান্য নেতারা পতাকাটি উত্তোলন করেন। এর মধ্যদিয়ে আরও একধাপ এগিয়ে যায় স্বাধীনতা আন্দোলন।এদিন ঢাকা ছিলো হরতালের নগরী, মিছিলের নগরী এবং কারফিউর নগরী। দিনের প্রধান খবর ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের জাতীয় পতাকা উত্তোলন।সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল আসছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। নিউমার্কেটের মোড় থেকে নীলক্ষেতের সড়ক দিয়ে পাবলিক লাইব্রেরি পর্যন্ত ছিলো মিছিল আর মিছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রলীগের জনসভায় উপস্থিত হন লাখো ছাত্র-জনতা। ছাত্রলীগের নেতৃত্বাধীন ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের পতাকা উত্তােলন শেষে সমাবেশ থেকে বিশাল এক রড ও লাঠি মিছিল ঢাকা শহর প্রদক্ষিন করে।এদিন থেকে পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তান নামটি বাঙালীদের মুখ থেকে একেবারেই কম উচ্চারিত হয়। বলতে গেলে এটি হাওয়া হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সন্ধ্যায় তার সংবাদ সম্মেলনে বারবার বাংলাদেশ উচ্চারণ করেছিলেন।পল্টন ময়দানে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ন্যাপ এক সমাবেশ করে। এতে বক্তৃতা করেন সাইফুদ্দিন মানিক, মতিয়া চৌধুরী, মহিউদ্দিন আহমেদ, নুরুল ইসলামসহ আরও অনেকে।এদিন ঢাকা শহরে ছিলো হরতাল। স্কুল-কলেজ, কল-কারখানা সবগুলো ছিলো জনশূন্য, কোনো অফিসে কাজ হয়নি। লোকসমাগম বলতে রাস্তায় এবং প্রতিবাদ সমাবেশে।সারাদিন একটি ট্রাকে করে আওয়ামী লীগের সদস্যরা সবাইকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে মাইকিং করেন। বারবার স্মরণ করিয়ে দেয় এটাই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ।হরতাল ঠেকাতে মাঠে নামে পাকিস্তান সরকারের পেটোয়া বাহিনী। তাদের গুলিতে পঞ্চাশ জনের মতো আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এদের বেশীরভাগই তেজগাঁও এলাকার। তেজগাঁও পলিটেকনিক স্কুলের ছাত্র আজিজ মোর্শেদ ও মামুনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনার পর আজিজ মারা যান।এদিনই কারফিউ জারি করা হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরদিন সকাল ৭টা পর্যন্ত এই...


Mar 01, 2021

মার্চ ১৯৭১

অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন: জাতির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর

অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন: জাতির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর

অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিন আজ। আগামী ২৬ মার্চ বাঙালি জাতির রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।উত্তাল এই মার্চ জাতির কাছে সংগ্রামের মাস, স্বাধীনতার মাস। বাঙালি জাতির জীবনে এক অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস।১৯৭১ এর ৭ মার্চ সাবেক রেসর্কোস ময়দান, বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর দেওয়া সেই ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। তিনি ভাষণে বলেছিলে ‘সাড়ে ৭ কোটি মানুষেরে দাবায়ে রাখতে পারবা না; আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। প্রত্যেক গ্রামে, প্রত্যেক মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলুন। এবং আমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকুন। রক্ত যখন দিয়েছি আরো রক্ত দেবো। এই দেশের মানুষকে মুক্ত করে তুলবো ইনশাআল্লা। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’ এর পরপরই বাঙালি জাতি মনে মনে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গণহত্যা শুরু করলে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীনতার জন্য যার যা কিছু আছে তা নিয়েই মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঙালি জাতি। ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা হয়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দেশপ্রেমী জনতা যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। টানা নয়মাস ধরে চলা মুক্তিসংগ্রামের বিজয় অবশেষে অর্জিত হয় ১৬ ডিসেম্বরে। আমরা পাই একটি স্বাধীন দেশ - বাংলাদেশ।স্বাধীনতার ৫০ বছর পূরণের আগমূহুর্তে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ বাঙালি জাতিকে আরও উচ্ছ্বসিত করেছে।স্বাধীনতার ৫০ বছরে মুজিববর্ষ উদযাপন করা হচ্ছে। যদিও ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত মুজিববর্ষ ঘোষণা করা হয়েছিলো, করোনা মহামারির কারনে তা পরবর্তী সময় ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।এডিবি/...