ন্যাভিগেশন মেনু

কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে গুলি করে স্ত্রী-সন্তানসহ ৩ জনকে হত্যা


কুষ্টিয়া শহরে প্রকাশ্যে গুলি করে স্ত্রী-সন্তানসহ তিনজনকে হত্যা করেছে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সৌমেন মিত্র। এ ঘটনায় হত্যাকারী এএসআইকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা।

রবিবার (১৩ জুন) বেলা সোয়া ১১টার দিকে শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের কাস্টমস মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন - শাকিল (২৮), আসমা (২৫) এবং রবিন (৫)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পর পর তিনটি গুলির শব্দ শুনে বাইরে এসে শিশুসহ তিনজনকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখি। এরমধ্যে মা ও পাঁচ বছরের ছেলে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় শাকিলকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত শাকিল বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন সেলস অফিসার পদে (ডিএসও) চাকরি করতেন এবং অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি জেলার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের শাওতা গ্রাম। আসমার বাড়িও একই উপজেলায়। 

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ৩ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাকিলের মৃত্যু হয়। মা আর শিশু সন্তান হাসপাতালে আনার আগেই মারা যায়।

পুলিশ জানায়, কুষ্টিয়া শহরের কাস্টম মোড়ে বিকাশের দোকানে দাঁড়িয়ে ছিলেন বিকাশের অ্যাজেন্ট শাকিল। তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশের এএসআই সৌমেন মিত্রের স্ত্রী আসমা ও তার ছেলে রবিন। এ সময় হঠাৎ সৌমেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই তিনজনকে গুলি করে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় তাদের জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বছর দেড়েক আগে সৌমেনের সাথে আসমার বিয়ে হয়। কিছুদিন আগে তাদের বিচ্ছেদ হয়। সম্প্রতি সৌমেন কুষ্টিয়ার হালসা পুলিশ ক্যাম্প থেকে বদলি হয়ে খুলনার ফুলতলা থানায় যোগদান করেন। এর আগেও আসমার আরেকটি বিয়ে হয়েছিল বলে জানা গেছে। শিশু রবিন আসমার প্রথম পক্ষের সন্তান ছিল। 

নিহত শাকিলের পরিবার জানায়, ঘাতক সৌমেনের আগে একাধিকবার  আসমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য শাকিলকে হুমকি দেয়। পরিবারের দাবি শাকিলের সাথে আসমার প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও তাদের বিয়ে হয়নি। এদিকে পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র দাবি করেছে, সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং শাকিলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পরার কারণে প্রতিশোধ নিতে সৌমেন এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।  

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,  স্থানীয় জনগণ ও ব্যবসায়ীরা সৌমেনকে আটক করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং অভিযুক্ত সৌমেনকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরকীয়ার জেরেই এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে পুলিশ বলছে, তদন্ত করেই আইনগত ব্যবস্থা  নেওয়া হবে।

আইওয়াই/ ওয়াই এ/এডিবি/