ন্যাভিগেশন মেনু

চলনবিলে মা মাছ নিধনে মহোৎসব, নির্বিকার প্রশাসন


উজান থেকে আসা ঢলের পানি আর বৃষ্টিতে চলনবিলের নিম্নাঞ্চল ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়ে নদী ও খালের পানি বিলের পানিতে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এ সময় মা মাছ ডিম ছাড়তে চলে আসে পানির কিনারে। এ সুযোগে জেলেরা মেতে উঠেছে মা মাছ নিধনের মহোৎসবে।

দেখা যায়, মাছ শিকারিরা বড়শি, কোচ, জুতি, খড়াজাল, মইজাল, বাদাই জাল, কারেন্টজালসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ দিয়ে নির্বিচারের ডিমওয়ালা মাছ ধরছেন। আর এসব মা মাছ প্রকাশ্যে বিক্রি হলেও স্থানীয় প্রশাসন নির্বিকার।

মৎস্য বিভাগের একটি সূত্র জানায়, সাধারণত এপ্রিল থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুম। এই সময়ের মধ্যে একেক মাছ একেকভাবে ডিম ছেড়ে থাকে। বিশেষ করে শোল, গজার, টাকি মাছ ডিম ছাড়ার পর পোনাগুলো ঝাঁক ধরে ভেসে বেড়ায়। বোয়াল মাছ ডিম ছাড়তে কম পানিতে আসে এবং পুরুষ বোয়াল মাছ মা মাছের পেট কামড়ে ডিম নিঃসরণ করতে সাহায্য করে থাকে। এ কারণে এই পাঁচ মাস এসব মাছ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

কিন্তু বাস্তবে এর কোনও প্রতিফলন চলনবিলের নয়টি উপজেলার কোথাও নেই। বরং প্রকাশ্যেই এসব ডিমওয়ালা মাছ বিক্রি হচ্ছে। কিনছে প্রশাসনের লোকজনসহ সর্বস্তরের মানুষ।

তাড়াশ উপজেলার হামকুড়িয়া গ্রামের স্কুল শিক্ষক জহুরুল ইসলাম বলেন, 'প্রতিদিন দলবেধে এ অঞ্চলের মানুষ, চলনবিলের খালে গিয়ে বড় বড় বোয়াল মাছ ধরছেন। একেকটা মাছের ওজন ৪ কেজি থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত। গত শনিবার সকালে হামকুড়িয়া গ্রামের শাহাদত হোসেন চার কেজি ওজনের বোয়াল মাছ ধরেছেন। বিক্রি হয়েছে সাত শত টাকা কেজি দরে।'

হামকুড়িয়া গ্রামের মাছ শিকারি আব্দুল মালেক জানান, গতকাল তিনি এক কেজি ওজনের একটা ডিমওয়ালা বোয়াল মাছ ধরেছেন। পরে গ্রামেই ওই মাছ সাত শত টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। তিনি মাছটি ধরেছিলেন হাটিকুমুরুল-বনপাড়া মহাসড়কের ৮নং ব্রিজ এলাকায় চলনবিলের খাল থেকে।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: মশগুল আজাদ জানান, 'ডিমওয়ালা মাছ নিধনের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। বেড় জাল, সুতি জাল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কাল থেকে জনসচেতনতায় মাইকিং করা হবে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

এমএসএম/সিবি/এডিবি/