ন্যাভিগেশন মেনু

নাটোরে পুলিশের অক্সিজেন ব্যাংক বাঁচাচ্ছে হাজারো প্রাণ


দেশে করোনাকালীন কঠিন পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের অভাবে প্রতিনিয়ত মানুষ মারা যাচ্ছে। অক্সিজেন করোনা রোগীদের কাছে যেন পৃথিবীর সব চাইতে মূল্যবান বস্তু হয়ে উঠেছে। এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে নাটোরের হাজারো মানুষের জীবন বাঁচাচ্ছে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহার চেষ্টায় গড়ে তোলা অক্সিজেন ব্যাংক।

হটলাইন নাম্বারে কল দিলেই মূমুর্ষ রোগীর বাড়ীতে গিয়ে অক্সিজেন পৌচ্ছে দিচ্ছে জেলা পুলিশ। এমনকী প্রয়োজনে হাসপাতালেও অক্সিজেন সরবরাহ করছে জেলা পুলিশের এই অক্সিজেন ব্যাংক।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, তিনি পুলিশ সদস্যদের জন্য অক্সিজেন সেবা দেওয়ার চিন্তা থেকেই অক্সিজেন ব্যাংক গড়ে তোলেন। পরে এই সেবা জেলার জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বর্তমানে ১.৩৬ ঘনমিটারের ১১৫টি সিলিন্ডার, ৬.৮ ঘনমিটার ৩০টি এবং ৯.৫ ঘনমিটারের ২০টি সিলিন্ডার রয়েছে পুলিশ অক্সিজেন ব্যাংকে। ০১৩২০১২৪৫০৩ এই হট নাম্বারে যোগাযোগ করলেই পুলিশের সদস্যরা করোনারোগীর বাড়িতে গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, অক্সিজেনের প্রয়োজন শেষ হলেই অক্সিজেনের সিলিন্ডার পুলিশ সদস্যরাই ফেরত নিয়ে আসছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবেই কাজ করছেন পুলিশ সদস্যরা। নাটোর সদর হাসপাতালে অক্সিজেন প্ল্যান্ট এমনকি পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা না থাকায় অধিকাংশ করোনা আক্রান্তরা বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের প্রয়োজন হলেই পুলিশের দেওয়া হটলাইন নাম্বারে কল দিয়েই পাচ্ছেন অক্সিজেন সুবিধা। ২৪ ঘন্টা নিরলসভাবে অক্সিজেন ব্যাংক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা।

নাটোর শহরের কান্দুভিটুয়া মহল্লার সেন্টু মিয়া বলেন, 'করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর বুঝেছি একটুখানি অক্সিজেন জীবনের জন্য কতটা প্রয়োজন। আমি শহরের একজন স্বনামধণ্য ওষুধ ব্যবসায়ী হয়েও অক্সিজেন জোগাড় করতে ব্যর্থ হওয়ার পরে অক্সিজেন নিয়ে আমার পাশে দাড়ায় পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ সুপারকে ফোন দিতেই ১০ মিনিটে আমার বাসায় পৌঁছে যায় অক্সিজেন সিলিন্ডার। জেলা পুলিশের এই ঋণ কোনদিন ভুলবো না।'

হটলাইন নাম্বারে যিনি সার্বক্ষণিক ফোন রিসিভ এবং অক্সিজেন সেবা দেয়ার দায়িত্বে রয়েছেন সেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়ার্টার) মীর আসাদুজ্জামান জানান, দিন-রাত মানুষের ফোন পাচ্ছেন। সেই অনুযায়ী মানুষকে অক্সিজেন সেবা দিচ্ছেন তারা। সেবার কথা ভেবে তাদের কোনো ক্লান্তিবোধ হচ্ছে না।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, অক্সিজেন সেবা পাওয়া মানুষগুলো যখন ফোন দিয়ে বলছেন পুলিশের এই অক্সিজেন না পেলে হয়তোবা তাদের স্বজনকে হারাতে হতো। পুলিশের অক্সিজেন সেবা পেয়ে বেঁচে গেছেন কারো স্বজন, তখন বুকটা ভরে যায়। মনে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি মানুষের কল্যাণে ও জীবন বাঁচাতে পাশে থাকতে পারা খুবই সৌভাগ্যের বিষয়।

কে আর/এমআইআর/এডিবি/