ন্যাভিগেশন মেনু

পরকীয়ার অভিযোগে সালিশে যুবককে বেত্রাঘাত, ইউপি সদস্যসহ আটক ৩


কুষ্টিয়ার মিরপুরে পরকীয়ার অভিযোগে সাইফুল ইসলাম (২৭) নামের এক যুবককে সালিশে প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। 

সালিশ বৈঠকে যুবককে নির্যাতনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পুলিশ এ নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত এক ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করেছে। 

আটকরা হলো - মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য নওয়াব আলী এবং আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিক আলী। 

ঘটনার পর থেকেই নির্যাতনের শিকার যুবক সাইফুল ইসলাম পলাতক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার (১০ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে মালিহাদ ইউনিয়নের আশাননগর এলাকার সেন্টু আলীর ছেলে ইটভাটার শ্রমিক সাইফুল ইসলাম প্রতিবেশি আনসার সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী এক সন্তানের জননীর (২৫) সাথে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন। এ সময় প্রতিবেশীরা তাদের দুজনকে আটক করেন। 

পরদিন রবিবার বেলা ১১টায় আশা নগর মোড়ে গ্রাম্য সালিশ ডাকা হয়। মালিহাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন গ্রামের শত শত লোকের উপস্থিতিতে বিচারের রায় ঘোষণা করেন। এ সময় সাইফুল ইসলামকে জুতার মালা পরিয়ে অর্ধেক গ্রাম ঘোরানোর পাশাপাশি ৩০টি বেত্রাঘাত এবং তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

পরে শত শত লোকের সামনেই সালিশ বৈঠকের রায় কার্যকর করা হয়।

এ ঘটনায় আনসার সদস্য আব্দুল কুদ্দুস তার স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করতে আপত্তি জানালে সালিশ বৈঠকেই তাদের তালাক দেওয়ানো হয়। পরে স্থানীয়রা সাইফুল ইসলামের সাথে ওই গৃহবধূর বিয়ে দিতে চাইলে তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

জানা যায়, আব্দুল কুদ্দুস আনসার সদস্য হিসাবে ঢাকায় কর্মরত থাকার কারণে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিলো। অন্যদিকে সাইফুল ইসলাম ভালোবেসে এক নারীকে বিয়ে করেন। বিয়ের দুই বছরের মাথায় এক মেয়েসহ চাচাতো ভাইয়ের সাথে সাইফুলের স্ত্রী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। 

সালিশ বৈঠকের প্রত্যক্ষদর্শী আমিরুল ইসলাম জানান, সালিশে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামকে প্রকাশ্যে গ্রামবাসীদের সামনে বেধড়ক পেটানো হয় এবং গলায় জুতার মালা পরিয়ে গ্রাম ঘোরানো হয়। সালিশে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এ ব্যপারে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) শুভ্র প্রকাশ দাস জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচারের নামে লাঠি দিয়ে মারধরের ভিডিও দেখে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থল থেকে জুতার মালাসহ আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাথে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এডিবি/