ন্যাভিগেশন মেনু

পরিযায়ী পাখি নিধন বন্ধে সকলের সহযোগিতা চাই: পরিবেশ মন্ত্রী


পরিযায়ী পাখি সংরক্ষণে সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে পাখি নিধন কমেছে। পাখি নিধন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

শনিবার (৮ মে) বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস-২০২১ উপলক্ষে বন অধিদপ্তর আয়োজিত অনলাইন আলোচনাসভায় মন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন হতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন।

এ সময় পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবছর শীত মৌসুমে সুদূর সাইবেরিয়া এবং ইউরোপ থেকে বাঁচার তাগিদে বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি এসে আমাদের প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করছে। পরিবেশ রক্ষায় অনন্য ভূমিকা পালন করা এসব পাখিদের আবাসস্থল রক্ষায় সকলের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।‘

পাখি সংরক্ষণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, ‘পরিযায়ী পাখি শিকার-হত্যার জন্য সর্বোচ্চ একবছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ  এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। দেশব্যাপী অবৈধভাবে পাখি শিকার ও বাণিজ্য বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অপরাধীকে হাতনাতে ধরা ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড করা হচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে এ সংক্রান্ত অপরাধ বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পরিযায়ী পাখি সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সোনাদিয়া, নিঝুম দ্বীপ, টাংগুয়ার হাওর, হাকালুকি হাওর, হাইল হাওর এবং গাঙগুইরার চর ইস্ট এশিয়ান অস্ট্রেলেশিয়ান ফ্লাইওয়ে সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। পরিযায়ী জলচর পাখির পরিযায়ন পথ বিষয়ক গবেষণার উদ্দেশ্যে পাখিশুমারি ও পাখির গায়ে রিং পরানো এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিপিএস স্যাটেলাইট ট্যাগিং করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে পরিযায়ী পাখির পরিযায়ন সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে।’

বনমন্ত্রী বলেন, ‘পরিযায়ী পাখি সংরক্ষণে স্থানীয় জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন পথসভা, র্যালি, আলোচনাসভা ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হচ্ছে। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার শামুকখোল পাখির কলোনীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া পরিবারের মাঝে ৩ লাখ ১৮ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। পাখিসহ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সরকার পুরস্কার প্রদান করে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মহাবিপন্ন’ প্রাণী শকুনের জন্য মরণঘাতী ওষুধ ডাইক্লোফেনাক উৎপাদন ও বিক্রি সারাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং সুন্দরবন ও সিলেটে দুটি ভালচার সেভ জোন ঘোষণা করা হয়েছে। অসুস্থ ও আহত শকুনদের উদ্ধার ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দিনাজপুরের সিংড়ায় একটি শকুন উদ্ধার ও পরির্চযা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভায় শকুন রক্ষায় ক্ষতিকর ‘কিটোপ্রোফেন’ ওষুধের উৎপাদন বন্ধের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জনগণের সহযোগিতা নিয়ে বর্তমান সরকার পাখিসহ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সফল হবে।

বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন - পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক এবং বাংলাদেশ বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশন ফেডারেশনের সভাপতি ড. এস এম ইকবাল প্রমূখ।

এমআইআর/এডিবি/