অমর একুশে বইমেলার দ্বার খুলেছে আজ। মাসব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ‘অমর একুশে বইমেলা-২০২৪’-এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী । বাংলা একাডেমি আয়োজিত এবারের বইমেলার প্রতিপাদ্য ‘পড়ো বই, গড়ো দেশ: বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমারা বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলি, মায়ের ভাষায় কথা বলি। বাংলা একাডেমি আমাদের অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার। আর বইমেলা হচ্ছে আমাদের প্রাণের মেলা।
নিরাপত্তার বেড়াজালে স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে বলেও আফসোস করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বইমেলায় আসায় কোনো মজা নেই। কারণ, স্বাধীনতা নাই। ডানে তাকাব নিরাপত্তা, বায়েও নিরাপত্তা, পিছনে গেলে নিরাপত্তা, সামনে নিরাপত্তা; এই নিরাপত্তার বেড়াজালে স্বাধীনতাটাই হারিয়ে গেছে। এখানে আসলে মনে পড়ে স্কুল জীবনের কথা, ছোটবেলার কথা। এই প্রাঙ্গণের সঙ্গে সবকিছুই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখন সেই স্বাধীনতাটা নাই। জানি না কবে আবার স্বাধীনতা পাব।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পদ অনুসরণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। স্বাধীনতার পর যখন জাতিসংঘ আমাদের স্বীকৃতি দিল, তিনি কিন্তু তখন সেখানে গিয়ে বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়েছিলেন। বাংলা ভাষায় ভাষণ অর্থাৎ বাংলাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। আমি আমার বাবার পথ অনুসরণ করে এই পর্যন্ত যতবার ভাষণ দিয়েছি, বাংলায় ভাষণ দিয়েছি।
তিনি বলেন, এখন আমাদের যুগ হয়ে গেছে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির যুগ। বই প্রকাশ অবশ্যই থাকবে, এটা যাবে না। কারণ, হাতে নিয়ে বই পড়ার মধ্যে আলাদা একটা আনন্দ আছে। তবে আজকালকার ছেলে-মেয়েরা ট্যাবে করে বই পড়ে। আবার ল্যাপটপেও পড়ে।
মন্ত্রীদের প্রধান বলেন, আমাদের ভাষা-সাহিত্য সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত। প্রকাশকদের অনুরোধ করে বলব— শুধু কাগজে প্রকাশ করলে হবে না ডিজিটালের প্রকাশক হতে হবে। ডিজিটাল প্রকাশক হলে এটা শুধু দেশে নয়, বিদেশেও পৌঁছাবে। মনমানসিকতা পরিবর্তন করে আধুনিক প্রযুক্তিও রপ্ত করতে হবে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারলে আমার এগিয়ে যাব।
অনুবাদ সাহিত্যের জন্য বাংলা একাডেমিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, একসময় দাবি উঠেছিল— অনুবাদ করা যাবে না। কিন্তু আমি অনুবাদের পক্ষে। অনুবাদ যদি না হয় পৃথিবীর এত ভাষা আমরা কোথা থেকে জানব। একটা দেশকে, তার সংস্কৃতিকে জানতে হলে তার ভাষার মধ্য দিয়ে জানতে হবে।
মেলায় ৬৩৫ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেয়েছে ৯৩৭টি ইউনিট। এবার প্রকাশনা সংস্থা বেড়েছে ৩৪টি। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০ প্রতিষ্ঠান ১৭৩টি ইউনিট এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭৬৪ ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে ৫১৫ প্রতিষ্ঠান।
