ন্যাভিগেশন মেনু

সরিষাবাড়ীতে অযত্নে অবহেলায় গণকবর ও প্রতিরোধ যুদ্ধে নিহতের স্মৃতিচিহ্ন


অযত্নে অবহেলায় পড়ে রয়েছে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার কান্দারপাড়া এলাকায় প্রতিরোধ যুদ্ধে নিহত শহীদ বেলাল হোসেন এর স্মৃতিচিহ্ন।

এখন আর কেউ যায়না শ্রদ্ধা জানাতে। শহীদ মিনারের সেই দেয়ালটি ভেঙ্গে ছোট্ট ও সরু তিনটি পিলার করা হয়েছে, যা একটু দূর থেকে দেখে বুঝার উপায় নেই যে এটি কি। শহীদ মিনারটি থেকে মাত্র ৪/৫ ফুট পূর্ব পাশে একটি পাঁকা মসজিদ, উত্তরে হাফিজিয়া মাদরাসা, দক্ষিণে টয়লেট ও প্রসাবখানা করা হয়েছে। পশ্চিম দিকে রেলওয়ের জমিতে করা হয়েছে পুকুর। যে কোন সময়ই পশ্চিম দিকে হেলে পড়ে পুকুরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে রক্তস্নাত ঘটনাস্থলের স্মৃতিচিহ্নটি। এখন আর কেও সেখানে শ্রদ্ধা জানাতে যায় না। এমন পরিস্থিতিতে ছোট্ট হলেও একটি ‘শহীদ বেলাল স্মৃতি যাদুঘর;’নির্মাণ ছাড়া মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও ইতিহাস রক্ষা করা সম্ভব না বলেও মনে করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। 

অপর দিকে দেশকে স্বাধীন করতে নিজের জীবন বাজি রেখে ১৯৭১ সালে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাঙলা মায়ের দামাল ছেলেরা। ৩০ লাখ শহীদ ও কয়েক লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এদেশে উড়েছিল লালসবুজের পতাকা। উপজেলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও এদেশিয় দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের হাতে নির্মমভাবে নিহত শহীদদের গণকবর। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও অধিকাংশ গণকবরগুলো চিহ্নিত, বাঁধানো এবং নির্মাণ করা হলেও যথাযথ দেখভালের অভাবে আজও রয়েছে অযত্নে, অবহেলা আর দৃষ্টিসীমার বাইরে। ওই সব স্থান এখন ঘাস, লতাগুল্মতে পরিপ‚র্ণ, অনেক স্থান পরিণত হয়েছে গোচারণ ভ‚মিতে। যেন দেখার কেও নেই। বর্তমান সরকারের আমলে বধ্যভ‚মি ও গণকবরগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি কিছুস্থানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হলেও যথাযথভাবে দেখভালের অভাবে তা অযত্নে অবহেলায় রয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের বারইপটল, ভাটারা ইউনিয়নের পারপাড়া, পোষ্ট অফিস মোড়ের দক্ষিন পাশে ও সরিষাবাড়ী হাসপাতালে গণকবর রয়েছে।

বর্তমান সরিষাবাড়ী হাসপাতাল ছিলো ততকালীন সময়ে রাজাকারদের ক্যাম্প বা আস্তানা। সেখানে প্রতিদিন মুক্তিবাহিনী ও অসংখ্য সাধারণ মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন করে রাতে হত্যা করা হতো। হত্যার পর লাশ সামনের সূবর্ণখালী নদীতে ফেলে দিতো। সেখানেও নির্মিত হয়নি কোন মুক্তিযোদ্ধের কোন স্মৃতিচিহ্ন।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের একটাই দাবি, সরকারিভাবে শুধু চিহ্নিত, স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করাই নয়, এগুলোকে আগামী প্রজন্মের কাছে সঠিকভাবে তুলে ধরার ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই আগামী তরুণ প্রজন্ম এদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, বিজয় ও দেশপ্রেমী মানুষের আত্মত্যাগ সম্পর্কে জানতে পারবে।

এম আ এম/সিবি/ওআ