ন্যাভিগেশন মেনু

১৯ জুন থেকে ফের টিকাদান শুরু


কোভিড-১৯ প্রতিরোধে বাংলাদেশ অনেক দেশের চেয়ে ভালো করলেও টিকা সংকটে ভুগছে বাংলাদেশ।সংক্রমণও বেড়ে গিয়েছে। এ কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। বাস-ট্রেন অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। বাংলাদেশে কোন টিকা উৎপাদন হয়না।

মূলত: আমদানির ওপর নির্ভরশীল। গত ৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা দিয়ে গণটিকাদান শুরু হয়। ভারত থেকে এ পর্যন্ত ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকা এসেছে বাংলাদেশে। এরমধ্যে উপহার হিসেবে পাওয়া গিয়েছে ৩৩ লাখ ডোজ টিকা।বাকিটা ক্রয়কৃত।  

ফাইজারের ১ লাখ ৬২০ ডোজ এবং চিনের সিনোফার্ম উপহার হিসেবে দিয়েছে ১১ লাখ ডোজ টিকা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে টিকা পেয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ ডোজ।

 ক্রয়ের চুক্তি করা তিন কোটি ডোজ টিকা আসার কথা থাকলেও মার্চে টিকা রফতানি বন্ধ করে দেয় সেরাম ইনস্টিটিউট। টিকা অভাবে  বাংলাদেশে প্রথম ডোজ টিকা বন্ধ থাকলেও আগামী ১৯ জুন থেকে ফাইজারের এবং চিনের সিনোফার্ম থেকে পাওয়া ১২ লাখ ডোজ আবার শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

ইতিমধ্যে যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মতো অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাও হাতে নেই। কোভ্যাক্স থেকে শিগগিরই ১০ লাখের বেশি অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসবে বলে সরকারের তরফ থেকে জানানো হলেও দিন-তারিখ এখনও ঠিক হয়নি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকাল জানিয়েছেন,ফাইজার এবং সিনোফার্মের টিকা মিলিয়ে বর্তমানে ১২ লাখ ডোজের বেশি হাতে রয়েছে। এসব টিকা আমরা আগামী ১৯ জুন থেকে দেওয়া শুরু করবো। যারা নিবন্ধিত আছে সে অনুযায়ী টিকা দেওয়া হবে।তিনি বলেন,সবাইকে দেওয়ার জন্য আমাদের কোটি কোটি ডোজ টিকা প্রয়োজন। এজন্য নিয়ন্ত্রণ ছাড়া কোনও উপায় নেই।

যেখানে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হচ্ছে সেখানে বন্ধ করতে হবে।চিনের সিনোফার্মের সঙ্গে দেড় কোটি ডোজ টিকা ক্রয়ের চুক্তি চূড়ান্ত করা হয়েছে। কিন্তু সরকারের একজন কর্মকর্তা এর দাম প্রকাশ করলে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে বাংলাদেশ। কেননা চিন চায়নি বাংলাদেশ টিকা দাম প্রকাশ করুক। চিন বাংলাদেশকে যে টিকা দিয়েছে, তার দাম ধরেছে ১০ ডলার। পক্ষান্তরে চিন ওই টিকা শ্রীলংকার কাছে বিক্রি করেছে ১৪ ডলারে। চিনের ওপর চাপ বাড়িয়ে শ্রীলংকা বাড়তি অর্থ ফেরত চেয়েছে। এতে চিন টিকার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশ চিন ছাড়াও রাশিয়ার স্পুটনিকের সঙ্গে টিকা আনার ব্যাপারে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।এদিকে সেরাম থেকে টিকা পাওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে দেশের সবাইকে টিকা দেবে। ফলে এ বছরে আমাদের টিকা পাওয়াটা কিছুটা মুশকিল হবে।

তবে অন্যান্য জায়গা থেকে যদি টিকা সরবরাহ বেড়ে যায়, তাহলে অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে।’ আমেরিকার টিকা যদি ভারত পেয়ে যায় বা তাদের নিজস্ব কোনও টিকা যদি বাজারে চলে আসে তাহলে তাদের টিকা সংকট অনেকটা দূর হয়ে যাবে এবং তখন সেরামের টিকা পাওয়ার সময়টা আরও এগিয়ে আসবে বলে তিনি জানান।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘অন্য অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে আছে, কিন্তু পরিস্থিতি যেকোনও সময়ে ভিন্ন পথে মোড় নিতে পারে। আমাদের ভঙ্গুরতা আছে, কারণ আমরা ভারত দ্বারা পরিবেষ্টিত। সেখানে যদি নতুন কোনও ভ্যারিয়েন্ট বা তৃতীয় ওয়েভ আসে তখন আমাদের সেটি আঘাত করতে পারে।’

বহির্বিশ্বের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে যোগাযোগ কোনও দেশ বিচ্ছিন্ন করেনি এবং বর্তমান বিশ্বে সম্পূর্ণভাবে যোগাযোগ বন্ধ করার সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ কিছুটা সীমিত করেছি এবং আমাদের কয়েক হাজার লোক সেখান থেকে প্রবেশ করেছে।

প্রথম দিকে সংক্রমণ কম ছিল। মোট আট হাজারের মধ্যে ২২ জনের মতো সংক্রমিত হয়েছে। কিন্তু ইনফর্মলি কিছু লোকজন হয়তো বা গিয়েছে, যেটি আমরা আটকাতে পারিনি। সে কারণে এখন সীমান্তবর্তী এলাকায় সংক্রমণ অনেক বেড়ে গেছে। ভারতে এখন অনেক সংক্রমণ কমে গেছে এবং আশা করি এই মাসে আমরাও ইতিবাচক কিছু দেখতে পাবো।’

ভারতে সংক্রমণ কম থাকার কিছু সুবিধা আছে জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘এর একটা মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব রয়েছে। এছাড়া অনেক দেশ আছে, যারা ভৌগোলিকভাবে ভারতকে বিবেচনায় নিয়ে থাকে। অন্য দেশগুলো যখন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয় তখন হয়তো তাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল ভারত, কিন্তু পরে বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোকেও এর সঙ্গে জুড়ে দেয় তারা।

এস এস