ন্যাভিগেশন মেনু

ঈদ-নববর্ষ ঘিরে চট্টগ্রাম নগরীতে তিন স্তরের নিরাপত্তা: সিএমপি কমিশনার


ঈদের ছুটিতে বন্ধ থাকবে ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ফাঁকা নগরে বাসা ও আর্থিক এসব প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকে ঘিরে ১২টি নির্দেশনা দিয়েছে সিএমপি। বাড়ি ফেরার আগে এসব নির্দেশনা অনুসরণের অনুরোধ করা হয়েছে।

আসন্ন ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তিন স্তরের নিরাপত্তায় থাকবে চট্টগ্রাম নগর। নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত টইলের পাশাপাশি সাদা পোশাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন (সিএমপি) ‍পুলিশের টিম ও গোয়েন্দা বাহিনী মাঠে থাকবে।

সোমবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে দামপাড়াস্থ পুলিশ লাইন্স সম্মেলন কক্ষে এসব কথা বলেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।
সভার সার্বিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা তুলে ধরেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (অপারেশন) মো. জাহাঙ্গীর। এরপর আয়োজক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিগন তাদের মতামত তুলে ধরেন।

চট্টগ্রাম নগরীর তিনটি স্থানে বড় আকারে পহেলা বৈশাখের আয়োজন করা হচ্ছে। সিআরবির শিরিষতলায় নববর্ষ উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম, ডিসি হিলে সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদ এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এসব আয়োজন হবে। এছাড়াও রবীন্দ্রসঙ্গীত উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম প্রথমবারের মতো নগরীর এনায়েত বাজার মহিলা কলেজ মাঠে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের আয়োজন করেছে।

সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘যেকোনো অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৬টার পর করা যাবে না। সেটা কেন্দ্রীয়ভাবে নির্দেশনা দেওয়া আছে। আমাদের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হবে। অনুষ্ঠানস্থলে নিরাপত্তা বেষ্টনি নির্মাণ করা। মহিলা ও পুরুষের আলাদা যাতায়াতের পথ রাখা এবং নিজস্ব ভলান্টিয়ারস রাখা। এতে অংশগ্রহণ করবেন তারা অতিরিক্ত ব্যাগ-পুটলি নিয়ে আসবেন না। ক্লোজ সার্কিট ক্যামরা দেওয়া, তাহলে পরবর্তী কোনো ঘটনায় সেটার অনুসন্ধানের জন্য কাজে আসবে। এদিকে নববর্ষকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় থাকবে। সাদা পোশাক, ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশের উপস্থিতি এবং টেকনিক্যাল সহযোগিতা নেওয়ার মাধ্যমে তিন স্তরের একটি নিরাপত্তা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, কোনো ধরনের দৃশ্যমান ঝুঁকি নেই। তবে অতীতের বিষয়গুলো মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমরা সবসময় সতর্ক আছি। সাময়িক সময়ে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে বিভিন্ন জায়গায়, তা আমাদের দৃষ্টিতে আছে। কোনো ধরনের বিপর্যয় হবে না। যদি কেউ বিপর্যয় ঘটাতে আসে, তাহলে আমরা সেটা মোকাবেলা করতে পারবো।’

সভায় জানানো হয়, প্রতিটি ভেন্যুতে থানার সার্বক্ষণিক টিম ও মোবাইল টিম, ফুট পেট্রোল, চেকপোস্ট, সাদা পোশাকে পুলিশ, ডিবি টিম, সোয়াট টিম, কুইক রেসপন্স টিম, ডগ স্কোয়াড কে-নাইন ও বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হবে। প্রবেশপথে আর্চওয়ে থাকবে, মেটাল ডিটেক্টর দিয়েও তল্লাশি করা হবে।

এছাড়া ঈদকে ঘিরে ফাঁকা নগরে সিএমপি থেকে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এসব বাস্তবায়ন করতে পারলে খারাপ কোনো কিছু ঘটার শঙ্কা নেই।

বাসিন্দাদের জন্য দেওয়া হয়েছে সাতটি নির্দেশনা-
বাসার দরজায় অধিক নিরাপত্তাসম্পন্ন অতিরিক্ত লক বা তালার ব্যবহার করা, নগদ অর্থ বা স্বর্ণালংকার ফাঁকা বাসায় রেখে না যাওয়া, সিসিটিভি ক্যামেরা ও অ্যালার্ম সিস্টেমের মতো প্রতিরোধমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া, আবাসিক এলাকায় রাতে অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করা, নতুন নিয়োগ দেওয়া নিরাপত্তাকর্মীদের এনআইডি কার্ড ও ছবি সংরক্ষণ করা, সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তি ঘোরাফেরা করলে তাৎক্ষণিক স্থানীয় থানাকে জানানো ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি সংক্রান্ত কোনো ঘটনা ঘটলে দ্রুত জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর-৯৯৯-এ কল করা।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভল্টের নিরাপত্তা জোরদারসহ পাঁচ নির্দেশনা—
ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা, ব্যাংকের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা যাতে সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন সে বিষয়টি তদারক করা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটরের জন্য নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একজন কর্মকর্তাকে পালাক্রমে নিয়োজিত রাখা, ব্যাংকের ভল্টের চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরার কাভারেজ নিশ্চিত করা এবং সন্দেহজনক কোনো বিষয় নজরে এলে তা কাছের থানায় জানানো এবং ব্যাংকের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ভালোভাবে কাজ করছে কিনা তা নিশ্চিত করা।