ন্যাভিগেশন মেনু

চুলের যত্ন কয়েকটি টিপস


নারীর সৌন্দর্যের অন্যতম একটি অংশ চুল। আর তাই সবসময়  চুলকে সূর্যের আলো, রোদ, বৃষ্টি থেকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করা উচিত। সূর্যের কড়া রোদ, তাপ, ধুলোবালি ইত্যাদি চুলের দুর্দশা ডেকে আনে।

এছাড়া মিশ্র আবহাওয়ার কারণে তাপমাত্রা এখন হালকা গরম ও শীতের দখলে। পাল্টে যাওয়া ঋতুতে ঝলমলে আর প্রাণবন্ত চুল পেতে প্রয়োজন সঠিক চুলচর্চা।

কারণ, এ সময়ে অনেক ক্ষেত্রেই চুল তার চিরাচরিত রূপ হারায়। চুলের গোড়া ঘেমে যায়, চুল আঠালো হয়ে যায়। ফলে মাথার ত্বকে সংক্রমণ দেখা দেয়। শুরু হয় চুল পড়া। চুলের ডগা ফেটে যাওয়া, খুশকি হওয়া, চুল ভেঙে যাওয়া, রুক্ষ হওয়াসহ চুলে হাজারো সমস্যা দেখা দেয়।

চুল যদি অনেক বেশি অমসৃণ হয়, তাহলে আপনি চুলের স্পা করাতে পারেন। চুলে চকচকে ভাব আনার জন্য প্রোটিন ট্রিটমেন্টও খুব ভালো একটি যত্ন। এই সময়ে চুলের ডগা ফেটে যাওয়া রোধ করতে তেল মালিশ ট্রিটমেন্ট নিতে পারেন। বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভের প্রধান রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি দিয়েছেন কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ।

এই গরম এই ঠান্ডার সময়টুকুতে বাড়িতে বানানো প্রাকৃতিকভাবে তৈরি প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। চুলের ধরন বুঝে এ ধরনের চুলের প্যাক বানাতে পারেন ঘরে বসেই।

চুল কি রোজ ধুতে হবে?

রূপ বিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলেন, আমাদের দেশের আবহাওয়ায় প্রতিদিনই শ্যাম্পু করা উচিত। যাঁরা রোজ বাইরে যান, তাঁদের জন্য এটি অবশ্যই করণীয়।

তেল কত দিন পরপর?

চুলের পুষ্টি জোগাতে নিয়মিত তেল ব্যবহার করতে হয়। তবে কি শ্যাম্পুর মতো তেলও রোজ লাগাতে হবে? না, প্রতিদিন চুলে তেল দেওয়াটা জরুরি নয়। তবে চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝলমলে রাখার জন্য সপ্তাহে অন্তত একদিন চুলের গোড়ায় এবং পুরো চুলে তেল লাগাতেই হবে। চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হলে দুইদিন পরপর তেল ম্যাসাজ করা ভালো। তেল দিয়ে এক ঘণ্টার মতো রেখেই চুল শ্যাম্পু করে ফেলতে পারেন। অতিরিক্ত তৈলাক্ত চুল হলে এত ঘন ঘন তেল দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

সাধারণ চুল:

প্যাক: এক কাপ অ্যালোভেরা জেল বের করে নিয়ে গরম পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর এর সঙ্গে এক টেবিল চামচ জলপাইয়ের তেল, তিনটা ভিটামিন ‘ই’ ক্যাপসুল ও দুই চা চামচ গ্লিসারিন ভালো করে ব্লেন্ড করে নিয়ে মাথার স্ক্যাল্প থেকে শুরু করে পুরো চুলে এক ঘণ্টা রেখে ধুয়ে নিতে হবে। এ প্যাকটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে হেয়ার কালার ও রিবন্ডিং হেয়ার যাদের তাদের চুল নরম ও মোলায়েম হবে।

* দুই টেবিল চামচ কাঠবাদামের তেল নিয়ে এর সঙ্গে দুই টেবিল চামচ মেথি পেস্ট, একটা গোটা পেঁয়াজের পেস্ট ও দুই টেবিল চামচ শিকাকাই পেস্ট নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে চুলে লাগাতে হবে। এটি ব্যবহারের ফলে চুলের শুষ্কতা ও নিস্তেজ ভাব কমে আসবে।

* সারারাত আমলকি ভিজিয়ে রেখে পরেরদিন পেস্ট তৈরি করে এর সঙ্গে দুই টেবিল চামচ মেহেদি পেস্ট, শিকাকাই পেস্ট দুই টেবিল চামচ ও মেথি পেস্ট এক টেবিল চামচ নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এবার এ প্যাকটির সঙ্গে নারিকেল তেল অথবা তিলের তেল ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে গরম করে কুসুম গরম অবস্থায় মাথায় স্ক্যাল্পে এক ঘণ্টা রেখে ধুয়ে নিতে হবে।

এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে চুল পড়া কমে যাবে। সেই সঙ্গে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে।

তৈলাক্ত চুল:

১ টেবিল চামচ আমলকী গুঁড়ার সঙ্গে আধা কাপ টক দই মিশিয়ে নিন। মিশ্রণ তৈরি করে ভালো করে পুরো মাথায় লাগিয়ে নিন। খেয়াল রাখুন, প্যাকটি যেন চুলের গোড়া পর্যন্ত যায়। ২০-২৫ মিনিট রেখে চুলে শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে দুবার ব্যবহারে চুল পড়া বন্ধ হবে। চুল হবে সুন্দর আর ঝরঝরে।

রুক্ষ চুল:

অর্ধেক কলার সঙ্গে ডিমের কুসুম ও ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ২০ মিনিটের জন্য চুলে লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলের রুক্ষ ভাব দূর হবে।

টুকটাক:

নিজের চুলের ধরনের সঙ্গে মিলিয়ে ভালো একটি শ্যাম্পু বেছে নিন। শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহারে চুল ঝরঝরে হয়ে ওঠে। বাজার থেকে কেনা কন্ডিশনার ব্যবহার না করতে চাইলে তারও সমাধান আছে। এক মগ পানিতে লেবুর রস দিয়েও চুল ধুয়ে নিতে পারেন। তবে কন্ডিশনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেন চুলের গোড়া ও মাথার ত্বকে না লেগে থাকে, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

মাথায় তেল লাগানো বা শ্যাম্পু করার সময় আঙুল দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মালিশ করতে হবে। মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া দিনে কয়েকবার মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ানোর পরামর্শ দিলেন শারমিন কচি।

ওয়াই এ/এডিবি