ন্যাভিগেশন মেনু

চট্টগ্রাম বন্দর শ্রমিকদের জন্য সোয়া ৫ কোটি টাকা প্রণোদনা

২০২৪ সালের জুনে বে-টার্মিনাল কার্যক্রম দৃশ্যমান হবে: চবক চেয়ারম্যান


চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, বে-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে সরকার। বে-টার্মিনালকে বলা হচ্ছে আগামীর আধুনিক বন্দর। বাংলাদেশে সমুদ্র বন্দরের অবকাঠামো সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়ন হতে যাচ্ছে। উন্নয়ন কাঠামোর অন্যতম দিক হচ্ছে বহুল আলোচিত বে-টার্মিনাল। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে বার্থ, টার্মিনাল ও শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর শ্রমিকদের বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। ৪৬ প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধিত ৬ হাজার ৫১২ জন শ্রমিক কর্মচারীকে ৮ হাজার টাকা করে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বন্দর ভবনের সামনে প্রণোদনার চেক বিতরণ করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। এ সময় চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর ফজলার রহমান, সদস্য (অর্থ) মোহাম্মদ শহীদুল আলম, পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম, পরিচালক (প্রশাসন) মো. মমিনুর রশীদ, সচিব মো. ওমর ফারুক, বার্থ টার্মিনাল ও শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ফজলে ইকরাম, বন্দর সিবিএ সাধারণ সম্পাদক নায়েবুল ইসলাম ফটিক, শ্রমিক নেতা মীর নওশাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন

পরে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় চবক চেয়ারম্যান বলেন, আগামী বছর ২০২৪ সালের জুনের দিকে বে-টার্মিনাল কার্যক্রম দৃশ্যমান হবে। কনসালট্যান্ট টীম, ডিপি ওয়ার্ক, ড্রয়িং ডিজাইন, এডভাইজার নিয়োগসহ সবধরনের কাজ এগিয়েছে। এটা নির্মাণ যেকোন বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে এবং জোয়ার-ভাটা জন্য অপেক্ষা করতে হবেনা।  করা হবে। জুনের মধ্য কাজ শুরু হবে। সমুদ্র তীরে বন্দর হবে, সেটা হবে এই বে-টার্মিনাল। আগামী বছরে মাটি ভরাটের কাজ হবে। 
১২–১৩ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ২৪ ঘণ্টা অপারেশন করা সম্ভব হবে, এতে ছোট-বড় জাহাজ আসতে পারবে। একদিকে গভীর সমুদ্র বন্দর কার্যক্রম এগিয়ে যাবে, অন্যদিকে বে-টার্মিনাল কাজ শুরু হবে। চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশের প্রধান গেটওয়ে হিসেবে কাজ করছে। দেশের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য চাহিদা, আঞ্চলিক যোগাযোগের ভৌগোলিক অবস্থানগত গুরুত্ব এবং বন্দরকেন্দ্রিক উন্নয়নচিন্তা চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের ধারাবাহিক উন্নয়নে তৎপর বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, চার বছর পরে চট্টগ্রাম বন্দরের কাজ অনেকগুণ গতি বৃদ্ধি পাবে। দেশে যেকোন উন্নয়ন সুফল পেতে সব সেক্টরের জন্য চট্টগ্রামে বন্দর গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ২০২৪ সালটা বে-টার্মিনালের বছর হবে। চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি বিনিয়োগের অনেক দেশই আগ্রহ দেখাচ্ছে। আগামী চার বছর পরে চট্টগ্রাম বন্দরে ৫-৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে। এতে যত বেশি বিনিয়োগ হবে ততই কর্মসংস্থান হবে। প্রযুক্তি বিনিময় হবে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়বে। মাতারবাড়ী টার্মিনালে ১০-১২ হাজার কন্টেনার নিয়ে জাহাজ ভিড়তে পারবে। বড় জাহাজে পণ্য আনা হলে ভোক্তা পর্যায়ে সুবিধা পাবে। ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো, ইউরোপের সঙ্গে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, পতেঙ্গা কন্টেনার টার্মিনাল নির্মাণ, বহির্নোঙরের আওতা বৃদ্ধি, ভিটিএমআইএস, ডিজিটালাইজেশন, কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের অত্যাধুনিক কী সাইড গ্যান্ট্রি ক্রেন সংযোজনের মতো উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পিসিটি, এনসিটি, টার্মিনালগুলো অপারেটর নিয়োগ করা হয়েছে তারা লভ্যাংশ ভিত্তিতে কাজ করবে। আগামী দেড় বছরে বড় গ্যান্ট্রি ক্রেন আসবে। একইসাথে ১ বছর পরে পিসিটি পুরোদমে চলবে। তারাও চাইলে বন্দরের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারবে, সাইফ পাওয়ারটেকও ব্যবহার করছে। ওরাও পারবে। পিসিটি কর্মকর্তাদের সৌদি আরবে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের কাজে নিয়োজিত হবে। পাশাপাশি দেশের শ্রমিকরা সৌদি আরবে কাজেও সুযোগ পাবে।  েতে বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়বে। দেশি-বিদেশি সবারই বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সবারই সমন্বয় হবে।

চবক চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে কার্গো হ্যান্ডলিং বেড়েছে, কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কিছুটা ডাউন আছে। পুরো বিশ্বের ব্যবসায়ে সামগ্রিক কারণে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কমেছে।  দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের সাথে বে-টার্মিনাল নির্মাণ কাজের তদারকিও করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে বে-টার্মিনাল দ্রুত হবে অর্থনীতির গতি।